বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ট্রাম্প-মোদির আলোচনা

ট্রাম্প-মোদির আলোচনা
ট্রাম্প-মোদির আলোচনা  © সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথমবারের মতো ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে ওয়াশিংটন ডিসির হোয়াইট হাউসে তাদের মধ্যে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে দুই নেতা বহুমুখী সহযোগিতা, বাণিজ্য সম্পর্ক, প্রতিরক্ষা, সন্ত্রাস দমন, অভিবাসন নীতি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। উভয় দেশ সম্পর্কোন্নয়নের লক্ষ্যে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

ঐতিহাসিক বাণিজ্য চুক্তি
প্রথম আলোচ্য বিষয় ছিল বাণিজ্য। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঘোষণা করেন, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি নতুন বাণিজ্যপথ চালু করা হবে, যা ভারত থেকে ইসরায়েল, ইতালি হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছাবে। মোদি বলেন, আসন্ন বাণিজ্য চুক্তির মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে দুই দেশের বাণিজ্যের পরিমাণ ৫০ হাজার কোটি ডলারে উন্নীত হবে।

প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদার
বৈঠকে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে অত্যাধুনিক এফ-৩৫ স্টিলথ যুদ্ধবিমান বিক্রিতে সম্মত হয়েছে। ট্রাম্প জানান, ‘আমরা ভারতকে সামরিকভাবে আরও শক্তিশালী করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ এছাড়া, দুই দেশের মধ্যে একটি যৌথ প্রতিরক্ষা কাঠামো গঠনের আলোচনা হয়।

সন্ত্রাস দমন ও নিরাপত্তা সহযোগিতা
সন্ত্রাস দমনে দুই দেশের সহযোগিতা বৃদ্ধির অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের কাছে মুম্বাই হামলার অভিযুক্ত তাহাবুর রানাকে হস্তান্তর করবে। ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা একজন ভয়ংকর সন্ত্রাসীকে ভারতের হাতে তুলে দিচ্ছি।’ এ ছাড়া, খালিস্তান ইস্যুতে ভবিষ্যতে আরও আলোচনা হবে বলে জানান তিনি।

অভিবাসন নীতিতে সহযোগিতা
অভিবাসন নীতি নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে মোদি জানান, ভারত অবৈধ অভিবাসন রোধে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করবে। ট্রাম্পও অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টা
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কূটনৈতিকভাবে এই যুদ্ধ দ্রুত সমাপ্ত করতে চায়। মোদি জানান, ভারত নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখলেও শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করবে।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা
বৈঠকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিও আলোচনায় আসে। ট্রাম্প বলেন, ‘বাংলাদেশের বিষয়ে আমাদের ‘ডিপ স্টেটের’ কোনো ভূমিকা নেই।’ তবে মোদি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করলেও ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি জানান, বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে উভয় নেতা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

এই ঐতিহাসিক বৈঠকের মাধ্যমে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক, বাণিজ্যিক ও প্রতিরক্ষা সম্পর্ক আরও গভীর হওয়ার ইঙ্গিত মিলছে। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক ইস্যুগুলোতেও তাদের ভূমিকা আরও সুসংহত হবে।


সর্বশেষ সংবাদ