৭৪ বছরে একদিনও ছুটি না নিয়ে চাকরি থেকে অবসরে মেলবা

সহকর্মী ও স্বজনদের সঙ্গে ৯১ বছরের মেলবা মেব্যান
সহকর্মী ও স্বজনদের সঙ্গে ৯১ বছরের মেলবা মেব্যান  © আনন্দবাজার

মাত্র ১৭ বছর বয়সে ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে কাজে ঢুকেছিলেন। তারপর একটানা ৭৪ বছর কাজ করেছেন। সাত দশকের বেশি দীর্ঘ কর্মজীবনে এক দিনের জন্যও ছুটির দরখাস্ত করেননি ৯১ বছরের মেলবা মেব্যান। চলতি মাসের শুরুতে অবসর নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের  টেক্সাসের বাসিন্দা মেলবা। তখনই প্রকাশ্যে আসে তার কীর্তির কথা। এর পর তা ছড়িয়ে পড়ে সারাবিশ্বে।

১৯৪৯ সালে প্রথম চাকরিতে ঢুকেছিলেন মেলবা। টেক্সাসের টাইলার শহরে ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের চেন ডিলার্ড’স-এ কাজ শুরু করেন। মেলবার ছাড়াও ২৯টি স্টেট জুড়ে এ স্টোর রয়েছে। সব মিলিয়ে ২৮২টি স্টোর রয়েছে ডিলার্ড’সের।আরকানসাসের লিটস রক এলাকায় এর সদর দফতর। শুধু টেক্সাসেই রয়েছে ৫৭টি।

শুরুতে লিফ্‌ট চালানোর কাজ পেয়েছিলেন মেলবা। ধীরে ধীরে তাঁর পদোন্নতি হয়। পরে প্রসাধনী সামগ্রী বিক্রির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাকে। কিছুদিনের মধ্যেই স্টোর কর্তৃপক্ষের মন জয় করেন মেলবা। কাউন্টারে দাঁড়িয়ে বিক্রির ফাঁকে তাঁর কথাবার্তা, আচার-আচরণে সন্তুষ্ট ছিলেন সবাই।

অবসরের দিনে বিষয়টি উদ্‌যাপন করেছেন মেলবার সহকর্মীরা। পার্টিতে হাজির ছিল স্টোর কর্তৃপক্ষও। তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ স্টোরের ম্যানেজার জেমস সায়েঞ্জ। ফক্স নিউজ়কে তিনি বলেন, ক্রেতা থেকে সহকর্মী, সবারই প্রত্যাশা পূরণ করেছেন মেলবা। স্টোরের প্রত্যেক ক্রেতাকে এমন পরিষেবা দিতেন যে, তারা অভিজ্ঞতা লাভের জন্য মুখিয়ে থাকতেন।

জেমস আরও বলেন, টিমের জন্য সব কিছু করতেন তিনি। ভাবতে পারবেন না, টিমের কত জনকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন মেলবা।

মেলবার ছেলে টেরি মেব্যান মায়ের কাজে যাওয়ার গল্প শুনিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, প্রতিদিন কাজে যেতে ভালবাসতেন মা। মায়ের নিয়মানুবর্তিতা তাকে অনুপ্রেরণা জোগায়। প্রতিদিন সকাল ১০টায় স্টোর খোলার ঘণ্টাখানেক আগেই পৌঁছে যেতেন। যাতে পার্কিংয়ে গাড়ি রাখার জায়গা পাওয়া যায়। 

ডিলার্ড’সের কাউন্টারে প্রতি দিন সবার আগে গিয়ে দাঁড়াতেন মেলবা। টেরি বলেন, আগে থেকেই দৈনন্দিন কাজের প্রস্তুতি নিতেন মা। কাজের ফাঁকে দুপুরে খাওয়ার জন্য ২৫ মিনিট খরচ করতেন।

প্রতিদিনই দুপুরের খাবার তৈরি করে বাড়ি থেকে বের হতেন মেলবা। স্টোরের ওপরতলায় আধ ঘণ্টার কম সময়ে লাঞ্চ সেরে কাজে ফিরতেন। যাতে লাঞ্চের সময় ক্রেতা স্টোরে ঢুকলে পরিষেবা দিতে পারেন। টেরি জানিয়েছেন, ৭০-৮০ বছর বয়সেও সমান কর্মক্ষম ছিলেন তিনি। সপ্তাহে ৪০ ঘণ্টা কাজ করতেন। সে সময় অবশ্য গাড়ি চালিয়ে বাড়ি ফিরিয়ে আনতেন টেরি।

অবসরের সময় সবার জন্য মেলবার উপদেশ ছিল, ‘বেতনের জন্য চাকরি করতে যাচ্ছেন, এটা ভাববেন না। কাজের জায়গায় যাচ্ছেন, এটা মনে করবেন।’


সর্বশেষ সংবাদ