৬০ বছরে দায়িত্ব না ছাড়লে প্রধানদের অবসর-কল্যাণ সুবিধা বাতিল

ক্লাস নিচ্ছেন শিক্ষক ও ইনসেটে সরকারি লোগো
ক্লাস নিচ্ছেন শিক্ষক ও ইনসেটে সরকারি লোগো  © ফাইল ফটো

বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের প্রধানদের বয়স ৬০ বছর পূর্ণ হলে দায়িত্ব ছাড়তে হবে। নতুন এমপিও নীতিমালা অনুসারে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেতে তাদের সহকারী প্রধান বা জ্যেষ্ঠ শিক্ষকের কাছে অধ্যক্ষ বা প্রধান শিক্ষক পদের ভার ছাড়তে হবে। দায়িত্ব না ছাড়লে প্রতিষ্ঠান প্রধানের অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের সুবিধা বাবদ প্রাপ্য টাকা বাতিল করা হবে।

সোমবার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এ নিয়ে দ্বিতীয় বারের মতো ষাটোর্ধ্ব প্রধান শিক্ষকদের বিষয়ে আদেশ জারি করা হলো। এর আগে গত বছর একই ধরনের নির্দেশনা জারি করা হয়েছিল। তবে সেই নির্দেশনা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছিল অধিদপ্তর।

নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবলকাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০২১ এর ১১.১১ ধারায় বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ বছর। তবে সমপদে বা উচ্চতর পদে (উচ্চতর পদ বলতে শুধু প্রতিষ্ঠান প্রধান ও সহকারী প্রধান বুঝাবে) নিয়োগের ক্ষেত্রে ইনডেক্সধারীদের জন্য বয়সসীমা শিথিলযোগ্য। শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতাদির সরকারি অংশ ৬০ বছর পর্যন্ত প্রদেয় হবে।

“তবে ঐতহ্যবাহী ও মানসম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে এবং সরকারের কোন আর্থিক সুবিধা/এমপিও না নেয়ার শর্তে সরকারের অনুমোদনক্রমে শুধু প্রতিষ্ঠান প্রধানের ক্ষেত্রে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া যাবে। এক্ষেত্রে, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে আর্থিকসহ সকল দায়ভার বহন করতে হবে এবং সরকার এর কোনো দায় বহন করবে না। এমপিওভুক্ত কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের চুক্তিভিত্তিক প্রতিষ্ঠান প্রধানের মেয়াদ সরকারের আর্থিক সংশ্লিষ্টতা না থাকলেও কোনক্রমেই ৬৫ বছরের বেশি হতে পারবে না' মর্মে প্রতিষ্ঠান প্রধান পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের বিধান রাখা হয়েছে। সরকারের পূর্বানুমোদন ছাড়া কোনক্রমেই প্রতিষ্ঠান প্রধান পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া যাবে না।”

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, কোন কোন প্রতিষ্ঠান প্রধানের বয়স ৬০ বছর পূর্ণ হওয়ার পরও বিধি মোতাবেক জ্যৈষ্ঠ শিক্ষকের নিকট দায়িত্ব হস্তান্তর না করে বর্ণিত ধারার ভুল ব্যাখ্যা করে স্বপদে থেকেই চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ অনুমোদনের প্রস্তাব প্রেরণ করছেন এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি/ব্যবস্থাপনা/ম্যানেজিং কমিটিও উক্তরূপ বিধি বহির্ভূত কাজে সম্পৃক্ত থাকছেন, যা সরকারের নির্দেশনা প্রতিপালন না করার সামিল এবং জনবলকাঠামো ও এমপিও নীতিমালা- ২০২১ এর ১৮.১ (খ) ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এর আগে ২০২২ সালে এ বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

২০২২ সালের নির্দেশনায় মাউশি জানিয়েছিল, কোন অধ্যক্ষ/প্রধান শিক্ষক ৬০ বছর পূর্তিতে অবসরে গেলে সহকারী প্রধান শিক্ষক-কে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ/প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বভার অর্পণ করতে হবে। কোনো প্রতিষ্ঠানে সহকারী প্রধান শিক্ষক না থাকলে জ্যেষ্ঠ শিক্ষক- কে অধ্যক্ষ/প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বভার অর্পণ করতে হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের অনুমোদন না পাওয়া পর্যন্ত অবসরপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান প্রধানের দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়া সরকারি আদেশের পরিপন্থী। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন আসলে সেই তারিখ তিনি দায়িত্ব পুনরায় গ্রহণ করতে পারবেন।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠান প্রধানের বয়স ৬০বছর পূর্তিতে বর্ণিত বিধি অনুযায়ী দায়িত্ব হস্তান্তর না করলে সংশ্লিষ্ট অবসরপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান প্রধানের কল্যাণ ও অবসর সুবিধা বাতিল এবং জনবলকাঠামো ও এমপিও নীতিমালা- ২০২১ এর ১৮.১(খ) অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি/ব্যবস্থাপনা/ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির পদ শূন্য ঘোষণাসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


সর্বশেষ সংবাদ