প্রেমের টানে জেলে

  © সংগৃহীত

প্রেমে পড়ে ভারতের আসাম রাজ্যের নগাঁওয়ের বরবজারের বাসিন্দা ওয়াহিদা বেগম এখন পাকিস্তানে কারাবন্দি। কাবুলিওয়ালার প্রেমে পড়ে কিভাবে কি ঘটল, তদন্তে নেমেছে আসাম পুলিশ। আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওয়াহিদা বেগমের স্বামী মহসিন খান চার বছর আগে মারা যান। পরে সেলিম খান নামে এক কাবুলিয়ালার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক হয় ওয়াহিদা বেগমের।

গত বছরের নভেম্বরে স্বামীর সব সম্পত্তি ১ কোটি ৬০ লাখ টাকায় বিক্রি করে নগাঁও সদর থেকে ১০ বছরের ছেলেকে নিয়ে গাড়িতে ওঠেন তিনি। কিন্তু আর বাড়ি ফেরেননি। পরে তাঁদের গাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় গুয়াহাটি বিমানবন্দরে পাওয়া যায়। 

ওয়াহিদার মা আরিফা বেগম মেয়ে ও নাতির উধাও হয়ে যাওয়া নিয়ে পুলিশে নিখোঁজ ডায়েরিও করেন। তাঁর দাবি ছিল, সম্পত্তি সংক্রান্ত কারণে মেয়ে ও নাতিকে অপহরণ করা হয়েছে।

আরিফা জানান, গত ৩০ নভেম্বর অচেনা নম্বর থেকে তাঁর কাছে ফোন আসে। জানানো হয়, ওয়াহিদা সন্তানসহ পাকিস্তানে ২৫ নভেম্বর গ্রেফতার হয়েছেন। জেলে আছেন। পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী আইনি নোটিস আরিফাকে হোয়াটসঅ্যাপ করেন।

সেই আইনজীবী জানান, ভারতীয় দূতাবাসে এই সংক্রান্ত কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে। বলা হয়, পাক-আফগান চমন সীমান্তে ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির হাতে ধরা পড়েছেন সপুত্র ওয়াহিদা। তাঁদের কাছে পাকিস্তানে আসার কোনও বৈধ নথিপত্র ছিল না।

আরিফার বক্তব্য, মেয়েকে ফেরানোর ব্যাপারে পুলিশের কাছে আশানুরূপ সাড়া না পেয়ে তিনি আইনজীবীর মাধ্যমে ভারতের পাকিস্তান হাইকমিশনে যোগাযোগ করেছিলেন। কিন্তু কোনও সাহায্য পাননি। চিঠি দিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতিকেও। অবশেষে মামলা করেন দিল্লি হাইকোর্টে। দিল্লি হাইকোর্ট সেই আবেদন খারিজ করে জানিয়েছে, ঘটনাস্থল দিল্লির এখতিয়ারে পড়ে না। তাই গৌহাটি হাইকোর্টে আবেদন জানাতে হবে।

নগাঁওয়ের এসপি লীনা দোলে বলেন, তদন্তে জানা গেছে স্বামী মারা যাওয়ার পরে এক পাঠানের সঙ্গে ওই মহিলার প্রেম হয়। ওই ব্যক্তি তাঁকে বিয়ে করে আরবে সংসার করার আশা দেখিয়েছিলেন। সেই মতো, স্বামীর সব সম্পত্তি বিক্রি করে তিনি ওই ব্যক্তির সঙ্গেই ১০ বছরের সন্তানসহ সৌদি আরবে চলে গিয়েছিলেন। পরে জানা যায়, পাকিস্তানে ঢোকার সময়ে ভুয়ো নথিপত্র থাকার অভিযোগে তাঁদের জেলে পাঠানো হয়েছে।

লীনা আরও বলেন, ইতিমধ্যে ওয়াহিদার সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁকে ফেরানোর ব্যবস্থা করছি। কেন তাঁরা সৌদি থেকে পাকিস্তানে এলেন, কেনই বা ভারতীয় পাসপোর্ট থাকার পরেও গ্রেফতার হলেন, তা জানার চেষ্টা চলছে।


সর্বশেষ সংবাদ