আওয়ামী লীগ সরকার বিসিএসকে কেন এত উচ্চতায় উঠিয়েছিল

অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন
অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন  © টিডিসি ফটো

গত আওয়ামী লীগ সরকার ১৩ বছরে আকর্ষণীয় চাকরির তুঙ্গে তোলা হয়েছিল বিসিএসকে। এই বিসিএস কর্মকর্তা দিয়েই কারচুপির ভোটারবিহীন নির্বাচন করে তথাকথিত নির্বাচিত সরকারের সিল পেয়েছিল আওয়ামী লীগ। বিসিএস পুলিশ হলে বেনজির, হারুনদের মতো ক্ষমতাবান হওয়া যায়। বিভিন্ন রিসোর্টের মালিক হওয়া যায়। বিসিএস প্রশাসনে হলে অল্প বয়সেই কোটি টাকার গাড়ি, ড্রাইভার পাওয়া যায়, ক্ষমতা, অনেক সুবিধার অ্যালাউন্স যা টাকার অঙ্কে অনেক সঙ্গে দুর্নীতির সুযোগ তো আছেই।

আওয়ামী লীগ সরকার বিসিএসকে কেন এত উচ্চতায় উঠিয়েছিল, এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন। আজ মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) ফেসবুকের এক পোস্টে তিনি লেখেন, এটি একটা সুদূরপ্রসারি প্ল্যান। এটি করতে গিয়ে পুরো ছাত্র সমাজের নৈতিকতাকে একদম নষ্ট করে দিয়েছে। শুধু তাই না। ছাত্রছাত্রীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েই বিভাগের পড়াশোনা বাদ দিয়ে দ্বিতীয় বর্ষ থেকেই বিসিএসের চটি গাইড পড়া শুরু করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরির যেই উদ্দেশ্যে তৈরি, সেই উদ্দেশ্যকেই নষ্ট করে দিয়েছে। শিক্ষার্থীরা সত্যিকারের জ্ঞানার্জন ও গবেষণার জন্য কেউ আর বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে যায় না। এর কারণ নিচে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করছি।

আরও পড়ুন: ঢাবির অনেক শিক্ষক ৪ জায়গায়ও পার্ট-টাইম পড়ান

তিনি আরও লেখেন, গত আওয়ামী লীগ সরকার ১৩ বছরে এটিকে আকর্ষণীয় চাকরির তুঙ্গে তোলা হয়েছিল। এই বিসিএস কর্মকর্তা দিয়েই কারচুপির ভোটারবিহীন নির্বাচন করে তথাকথিত নির্বাচিত সরকারের সিল পেয়েছিল আওয়ামী লীগ। বিসিএস পুলিশ হলে বেনজির, হারুনদের মতো ক্ষমতাবান হওয়া যায়। বিভিন্ন রিসোর্টের মালিক হওয়া যায়। বিসিএস প্রশাসনে হলে অল্প বয়সেই কোটি টাকার গাড়ি, ড্রাইভার পাওয়া যায়, ক্ষমতা, অনেক সুবিধার অ্যালাউন্স যা টাকার অঙ্কে অনেক সঙ্গে দুর্নীতির সুযোগতো আছেই।

অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন লেখেন, পুলিশ ভেরিফিকেশনের নামের এমন একটি ব্যবস্থা করা হয়েছিল যে ছাত্রজীবনে বিরোধী দল করলে, বাবা-মা বিরোধী দল করলে এমনকি দাদা নানা জামাত বিএনপি করলেও চাকরি হতো না। এর মাধ্যমে ছাত্ররা ছাত্রাবস্থা থেকেই কেবল সরকারি দল করা ও সরকারি দলের বন্দনায় ব্যস্ত থাকতো। চাকরি পাওয়ার জন্য প্রার্থী নেতানেত্রীদের ছবি পর্যন্ত ফেসবুকের প্রোফাইল পিকচারে দিয়ে রাখত। কেবল চাকরি দিয়েই ভেবেছিল হ্যামিলনের বংশীবাদকের মতো চাকরির পেছনে ছুটতে গিয়ে সবাইকে ছাত্রলীগ বানিয়ে ফেলবে। এত বড় একটা অনিয়মের ঘোর জাতির ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছিল অথচ কেউ প্রতিবাদ করেনি। এখন আবার উল্টোটা দেখছি। এটাও একই কারণে খারাপ।

আরও পড়ুন: খাদের কিনারায় দেশের রাজনীতি, বিএনপিকে ঠেকাতে চক্রান্ত

তিনি লেখেন, চাকরি হবে মেধার ভিত্তিতে। অবশ্যই কারও নামে যদি কোনো মামলা থাকে এবং তা প্রমাণিত হয়, সেটা দেখা যেতেই পারে। যারা ছাত্রলীগ করত সবাই খারাপ এমন ঢালাও চিন্তা করাটাও অসুস্থতা। এ রকম ভাবলে কখনো সুন্দর দেশ গড়া সম্ভব না। এখন তো দেখছি ছাত্রলীগের অনেক নেতা আসলে নাকি শিবির করত। এইটা কি মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া নয়? একজন সৎ মানুষ কীভাবে মানুষকে ধোকা দেয়?


সর্বশেষ সংবাদ