সড়ক দূর্ঘটনা কি অপ্রতিরোধ্য?
- আকরামুল হাসান
- প্রকাশ: ০৪ আগস্ট ২০১৮, ০৭:৩৩ PM , আপডেট: ০৪ আগস্ট ২০১৮, ০৭:৫৫ PM
সড়ক দুর্ঘটনা নিঃসন্দেহে একটি অপ্রত্যাশিত ও অনাকাঙ্খিত ঘটনা।বিশ্বজুড়েই সড়ক দুর্ঘটনা একটি অন্যতম কিন্তু অবহেলিত সমস্যা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর পৃথিবীব্যাপী ১.২ মিলিয়ন মানুষ মৃত্যুবরণ করে সড়ক দুর্ঘটনাজনিত কারনে এবং আহত হওয়ার পরিসংখ্যান প্রায় ৫০ মিলিয়নের বেশি! এমন দুঃখজনক ঘটনা সত্বেও সড়ক দুর্ঘটনা খুব কমই গনমাধ্যমের নজরে আসে।
বাংলাদেশেও খবরের কাগজ খুললে আমরা প্রতিদিনই পৃথক পৃথক দুর্ঘটনায় আহত-নিহত শিরোনামে সংবাদ নজরে আসে। আসলে সড়ক দুর্ঘটনা এতোটাই সাধারন এবং স্বাভাবিক ঘটনায় পরিনত হয়েছে যে, অল্প সংখ্যক মৃত্যু কিংবা ছোটখাটো সড়ক দুর্ঘটনা পত্রিকাতেও এক কলামের বেশি স্থান পায় না। এরই মাঝে বেশ কিছু সড়ক দুর্ঘটনা আলোচিত সমালোচিত হয়, তারপর আবার নতুন আলোচনার ইস্যু তৈরি হলে, সড়ক দুর্ঘটনার মত গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা আড়ালে পড়ে যায়, এবং রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারকেরাও এ সমস্যার টেকসই সমাধানে মনেনিবেশ করা থেকে বিচ্যুত হয়ে যান।
বিগত সময়ের আলোচিত সড়ক দুর্ঘটনার কথা বললে, প্রথমেই ২০১৩ সালের ১৩ আগষ্ট মানিকগঞ্জ থেকে ঢাকায় ফেরার পথে খ্যাতিমান চিত্র পরিচালক তারেক মাসুদ এবং শহীদ বুদ্ধিজীবি মুনীর চৌধুরীর সন্তান এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন নিহতের ঘটনা চলে আসে। এছাড়া ২০১১ সালের ১১ জুলাই চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মিনিট্রাক খাদে পড়ে ৪৪ জন স্কুলশিক্ষার্থী নিহত হয়। এই ঘটনা মিরসরাই ট্রাজেডি নামে সারা দেশের মানুষের হৃদয়ে ক্ষত সৃষ্টি করে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে ঐ মিনিট্রাক চালকের কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিলো না বলে তথ্য পাওয়া যায়! এ বছরের ৩রা এপ্রিল ঢাকার কারওয়ানবাজারে বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহনের দুই বাসের রেষারেষিতে তিতুমীর কলেজের ছাত্র রাজীব হোসেনের হাত হারিয়ে পরবর্তীতে মৃত্যুর ঘটনাও দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে।
সর্বশেষ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ গনমাধ্যমে বহুল আলোচিত সড়ক দুর্ঘটনা হলো রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বেপরোয়া বাসের চাপায় শহীদ রমিজউদ্দীন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত এবং ১৪ জন আহত হওয়ার ঘটনা। এই ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক আলোচিত সমালোচিত হবার পেছনে মাননীয় নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের অসংলগ্ন বক্তব্যও অনেকটা দায়ী বলেই আমার মনে হয়। সাংবাদিকের করা প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী মহোদয় হাস্যোজ্জ্বল মুখে ভারতের মহারাষ্ট্রে সড়ক দূর্ঘটনায় ৩৩ জনের মৃত্যুর কথা বলেন এবং একরকমভাবে সড়ক দুর্ঘটনায় রাষ্ট্রের দায় এড়িয়ে যান। উল্লেখ্য, মন্ত্রী মহোদয় নিজে সড়ক নিরাপত্তার সর্বোচ্চ ফোরাম ‘জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিল’ এর সদস্য এবং পরিবহন শ্রমিকদের সবচেয়ে বড় সংগঠন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের নির্বাহী সভাপতি। এমন দায়িত্বশীল পদে থেকে পরিবহন ব্যবস্থার অনিয়মের ফসল সড়ক দূর্ঘটনার দায় এড়িয়ে যাওয়াটা অবশ্যই প্রত্যাশিত নয়।
বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় লক্ষনীয় উন্নয়ন হয়েছে এবং অনেক উন্নয়ন প্রকল্প চলমান আছে। জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক গুলোকে চারলেন এবং আটলেনে উন্নীতকরণ এবং যানজট নিরসনে একের পর এক ফ্লাইওভার নির্মানের প্রয়াসই তার প্রমান। কিন্তু দেশের সড়ক নিরাপত্তা যদি নিশ্চিত না করা যায়, সড়ক-মহাসড়কে মৃত্যুর মিছিল যদি না থামানো যায়, তবে সম্ভবত সরকারের সকল অর্জন জনগনের দৃষ্টিতে ম্লান হতে বাকি থাকবে না!
সড়ক দুর্ঘটনাকে মানব সৃষ্ট দূর্যোগ বলা যেতে পারে। কারন, মানুষ তথা চালকের অসাবধানতা, অদক্ষতা এবং অসচেতনতাই সড়ক দূর্ঘটনার প্রধানতম কারন। সড়ক দুর্ঘটনার কারন অনুসন্ধান করলে, যানবাহনের যান্ত্রিক ত্রুটি, ফিটনেসবিহীন যান চলাচল, লাইসেন্সবিহীন অদক্ষ চালকের যানবাহন চালনা, চালকের অসাবধানতা, ট্রাফিক আইন মেনে না চলা, নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ওভারটেকিং প্রবণতা, চালকের তন্দ্রাচ্ছন্নতা ও অনেকক্ষেত্রে মাদকাসক্তি, রাস্তাঘাটের দূরবস্থা সহ নানাবিধ কারন পাওয়া যায়।
সড়ক দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে উদ্বেগজনক ব্যাপার হচ্ছে, একজন দক্ষ চালক সকল নিয়মনীতি মেনে গাড়ি চালিয়েও অন্য যানবাহনের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলা কিংবা অন্য চালকের অসাবধানতার কারনে দুর্ঘটনার স্বীকার হতে পারেন। তাছাড়া যানবাহনের চাকায় পিষ্ঠ হয়ে পথচারী নিহত হওয়ার ঘটনা তো অহরহ ঘটছেই। তাহলে, সড়কে মানুষের জীবনের নিরাপত্তা কোথায় ? মহাসড়ক কি তবে এক ধরনের মৃত্যুকূপে পরিনত হচ্ছে ?
সড়ক দুর্ঘটনায় দৃশ্যমান এবং অদৃশ্যমান দুইধনেরই ক্ষতি সাধিত হয় । বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাংলাদেশের মত একটি উন্নয়নশীল দেশেও সড়ক দূর্ঘটনায় আর্থিক ক্ষতির পরিমান জিডিপির প্রায় ২ শতাংশ!! সড়ক দূর্ঘটনার আর্থ-সামাজিক প্রভাব কতটা ভয়াবহ তা ঢাকার অর্থোপেডিক হাসপাতালে গেলেই কিছুটা উপলব্ধি করা যায়। বিভিন্ন গনপরিবহনের গায়ে “একটি দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না” এই কথাটি লেখা দেখতে পাওয়া যায়। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হারানো মানুষের পঙ্গুত্বের দীর্ঘশ্বাস দেখলেই কথাটির সত্যতা টের পাওয়া যায়।
জাতিসংঘ ২০১১-২০২০ সময়কালকে সড়ক নিরাপত্তা দশক হিসেবে ঘোষনা করে এবং ২০২০ সালের মধ্যে সড়ক দূর্ঘটনা অর্ধেক কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে। জাতিসংঘের সদস্যরাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ এই লক্ষ্যমাত্রায় সম্পৃক্ত দেশ হওয়া সত্বেও সড়ক দূর্ঘটনার গ্রাফিকাল কার্ভ উর্দ্ধমুখী রয়েছে এবং দূর্ঘটনার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছেই। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা পর্যবেক্ষণ রিপোর্ট-২০১৭ এর তথ্য মতে, গত বছর ৪ হাজার ৯৭৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ হাজার ৩৯৭ জন নিহত ও ১৬ হাজার ১৯৩ জন আহত হয়। এছাড়া ২০১৬ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ২২ দশমিক ২ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।
২০১৫ সালে উচ্চ আদালতের নির্দেশে, ২২টি জাতীয় মহাসড়কে দুর্ঘটনারোধ এবং শৃংখলা রক্ষায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা, অটোটেম্পু, নছিমন, করিমন, ভটবটিসহ তিন চাকার যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়। এখন নিষেধাজ্ঞা কতটুকু মানা হচ্ছে সেটাই ভেবে দেখবার বিষয়! দুঃখজনক হলেও সত্য এসব তিন চাকার যানবাহনের চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই বললেই চলে এবং পাশাপাশি তাদের তেমন কোনো প্রশিক্ষনও নেই। পাশাপাশি জাতীয় মহাসড়কেও লাইসেন্সবিহীন অদক্ষ চালক দিয়ে অহরহ গনপরিবহন চালানো হচ্ছে ।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কতৃপক্ষ (বিআরটিএ) এর তথ্য মতে, চলতি বছর মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশে নিবন্ধিত মোটরযানের সংখ্যা ৩৪,১৯,৮৮৪ টি এবং স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্ত চালকের সংখ্যা ১৫,৪৯,৫৭৮ জন। সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে তৎপর হতে হবে যাতে করে লাইসেন্সবিহীন চালক কোনোভাবেই যানবাহন চালাতে না পারে । পাশাপাশি চালকের দক্ষতা পরীক্ষা করে লাইসেন্স প্রদান করা এবং অসাধু উপায়ে যাতে কেউ লাইসেন্স পেতে না পারে সেদিকেও সচেষ্ট হতে হবে। পাশাপাশি চালকদের নিয়মিত কাউন্সেলিং এর ব্যবস্থা করা এবং নীতি নৈতিকতা ও মূল্যবোধ শিক্ষা দেওয়া অতীব জরুরী বলেই আমার মনে হয়। অদক্ষ ও অযোগ্য লোকের হাতে যানবাহনের স্টিয়ারিং চলে গেলে কোনোভাবেই সড়কে মৃত্যুর মিছিল থামানো যাবে না এবং নিরাপদ সড়ক বাস্তবায়ন সম্ভবপর হবে না!
বিশ্লেষকরা মনে করেন, সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য করা সম্ভব হলে এক ধরনের দায়বদ্ধতা ও সচেতনতা তৈরি হবে। সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তির ক্ষেত্রে অপরাধীর শাস্তি হবার নজির যেমন খুব কম, তেমনই ক্ষতিপূরণের উদাহরণও হাতে গোনা। চালকের বেপরোয়া মনোভাবের কারনে দূর্ঘটনা ঘটলেও প্রায়ক্ষেত্রেই দায়ভার এসে বর্তায় নিরীহ পথচারী কিংবা ভিক্টিমের উপরেই। সার্বিকভাবেই, আমাদের দেশে সড়ক নিরাপত্তা অনেকটা উপেক্ষিত হওয়া সত্বেও সড়ক দুর্ঘটনায় ভিকটিমদের দোষারেপের সংস্কৃতিই দেখতে পাওয়া যায়! এছাড়াও সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তি বা পরিবার অনেক সময়ই মামলা করতে চায় না। বিচারিক প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা এর পেছনে অনেকাংশে দায়ী।
উল্লেখ্য, মোটর ভেহিক্যাল অ্যাক্ট-এ ক্ষতিপূরণের কথা বলা নেই। তাছাড়া ফৌজদারি আইনে কেবল অপরাধ এবং শাস্তির কথা বলা থাকে, আর ক্ষতিপূরণ হইল দেওয়ানি বিষয়। এভাবে, আইনের জটিলতার কারনেও ভিকটেমের ক্ষতিপূরন প্রাপ্তি বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। অনেকক্ষেত্রেই পুলিশের মধ্যস্থতায় পরিবহন মালিকের সাথে আপস করার ঘটনা লক্ষ্য করা যায়! ফলে খুব সহজেই বেপরোয়া ঘাতক চালক শাস্তির হাত থেকে রেহাই পেয়ে যায়।
সড়ক দুর্ঘটনা কমিয়ে আনার জন্য জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিল, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কতৃপক্ষ (বিআরটিএ), যোগাযোগ মন্ত্রণালয়, সড়ক ও জনপথ বিভাগ , এলজিইডি, পরিবহন মালিক সমিতি, পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন, হাইওয়ে পুলিশ, পুলিশের ট্রাফিক বিভাগসহ সকল অংশীদার প্রতিষ্ঠানের সমন্বিত প্রয়াস অতীব জরুরী।
জনসাধারনের মধ্যেও সচেতনতা বাড়াতে হবে যাতে করে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তারাও ভূমিকা রাখতে পারে। এছাড়া গনপরিবহনের গতিনিয়ন্ত্রনে স্পীডমিটার ডিসপ্লে স্থাপনের মত উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে যাতে করে যাত্রীরা গতি নিয়ন্ত্রনে চালককে সতর্ক করতে পারে। এছাড়াও পরিবহনের চালক মাদকাসক্ত কিনা তা ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়মিত যাচাই করতে হবে। দূরপাল্লার বাস ট্রাক সহ গনপরিবহনের চালক বিরতিহীনভাবে কত ঘন্টা যানবাহন চালাচ্ছে তাও খতিয়ে দেখা অতীব জরুরী।
সড়ক দুর্ঘটনা অবশ্যই অপ্রতিরোধ্য কোন বিষয় নয়! পরিবহন ব্যবস্থার সাথে সংশ্লুষ্টদের দৃষ্টভঙ্গী বদলানোর মাধ্যমেই সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব । গত কয়েকদিন ধরে, নিরাপদ সড়কের দাবীতে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন রাষ্ট্রের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে এই রাষ্ট্রের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় কত অনিয়ম, কত অব্যবস্থাপনা, কত বিশৃঙ্খলা বিদ্যমান। ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া এ শিক্ষার্থীদের কাছে খোদ পুলিশ সদস্যদের গাড়ি, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গাড়ি,স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গাড়ি, বিচারপতির গাড়িসহ সরকারী-বেসরকারী যানবাহনের লাইসেন্স দেখাতে ব্যর্থ হওয়ার ঘটনা থেকেই তা প্রতীয়মান হয়। তারুন্যে উজ্জীবিত এ তরুন শিক্ষার্থীরা এও দেখিয়ে দিয়েছে সড়ক দুর্ঘটনা, যানজট নিরসন এবং সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিতে সড়কযোগাযোগ ব্যাবস্থার সাথে সংশ্লিষ্টদের করনীয় কি! এদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মত ইমার্জেন্সি লেন্স তৈরি করে দেখানোই তার সাক্ষ্য বহন করে। সর্বোপরি, শিক্ষার্থীদের শৃঙ্খলাবদ্ধ এ আন্দোলন যেন কবি নজরুলের কান্ডারী হুশিয়ার কবিতার মত এই রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের হুশিয়ার করছে !
চলমান আন্দোলনে আরেকটি বিষয় স্পষ্ট যে, আইনের দৃষ্টিতে সমতা প্রতিষ্ঠা, জবাবদিহিতার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা এবং আইন মেনে চলার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করা গেলেই সড়কপথে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব। আশার কথা হচ্ছে, চলমান ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষিতে গতবছরের মার্চে মন্ত্রীসভায় খসড়া অনুমোদন করা ‘সড়ক পরিবহন আইনটি' আগামী সংসদ অধিবেশনে পাশ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে ।
পরিশেষে, সড়ক নিরাপত্তা ইস্যুটি রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের কাছে সবসময় গুরুত্ব পাবে এবং সড়ক-মহাসড়কে মৃত্যুর মিছিল থামাতে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয় এবং অংশীদার প্রতিষ্ঠানগুলো সমন্বিত প্রয়াস চালাবে এবং নিরাপদ সড়ক প্রতিষ্ঠা পাবে এমনটাই প্রত্যাশা!!
লেখক: আকরামুল হাসান
শিক্ষার্থী, ক্রিমিনোলজী এ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগ
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।