দেশে আলোচিত পাঁচ ‘স্যার’ বিতর্ক

দেশে আলোচিত পাঁচ ‘স্যার’ বিতর্ক
দেশে আলোচিত পাঁচ ‘স্যার’ বিতর্ক

প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কি ‘স্যার’ ডাকতে হবে? এই বিতর্ক ২০২১ সালে শেষ হলেও ফের নতুন করে রংপুরের ডেপুটি কমিশনারের আচরণে বিষয়টি সামনে এসেছে। সাবেক আমলা ও বিশ্লেষকরা মনে করেন, সরকারের উচিত এ ব্যাপারে নীতিমালা করে দেয়া।

রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক উমর ফারুক ২২ মার্চ তার এলাকার একটি স্কুল নিয়ে ডিসির সঙ্গে কথা বলতে তাকে ‘স্যার' না বলায় অশোভন আচরণের শিকার হন বলে অভিযোগ করেন। প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই শিক্ষক প্ল্যাকার্ড নিয়ে ডিসি অফিসের সমনে অবস্থান নেন। পরে ডিসি দুঃখ প্রকাশ করেন।

তবে সহাকারী অধ্যাপক উমর ফারুক মনে করেন, তিনি প্রতিবাদ জানিয়ে অবস্থান না নিলে, সবাই এগিয়ে না এলে ডিসি দুঃখ প্রকাশ করতেন কীনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে।

আরও পড়ুন: স্যার-ভাই কোনো ডাকেই আমার আপত্তি নেই— ঢাবি শিক্ষক

‘স্যার’ নিয়ে আলোচিত বিতর্ক
ওই বছরের ৯ জুলাই মানিকগঞ্জে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুনা লায়লাকে ‘ম্যাডাম’ না বলে আপা বলায় ব্যবসায়ী তপন চন্দ্র দাসকে লাঠিপেটা করে তার সাথে থাকা পুলিশ। ইউএনও একটি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় এই ঘটনা ঘটে।

একই বছরের ৩০ মে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা অনিরুদ্ধ দাস এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকরা তাকে ভাই বলায় বিরক্ত হন।

আরও পড়ুন: জেলা প্রশাসকে স্যার বলতে বাধ্য করায় বেরোবি শিক্ষকের প্রতিবাদ

তিনি বলেন, ‘‘আপনাদের ভাই বলে ডাকার রেওয়াজ আর গেল না, জানেন আমাদের এই চেয়ারে বসতে কত কষ্ট করতে হয়েছে?’’ এপ্রিলে নেত্রকোনার কালমাকান্দা উপজেলায় ইউএনওকে স্যার না বলায় থানার ওসি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে হেনস্তা করেন।

চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মামুন খানকে সাংবাদিক আশিক জামান ফোনে তথ্য নিতে গিয়ে ভাই বলায় তিনি ক্ষেপে যান। এসি ল্যান্ড সাংবাদিককে তথ্য না দিয়ে বলেন, ‘‘তার আগে বলেন আপনি এসিল্যান্ডকে ভাই কেন বলছেন, আমি আপনার কেমন ভাই।”

স্যার ডাকলে তিনি খুশি কীনা ওই সাংবাদিক জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘না না আপনার স্যার ডাকতে হবে না। কিন্তু কখনো ভাই ডাকবেন না। এটা ফরমাল কোনো ডেকোরাম না।”

আরও পড়ুন: ব্যাংকের লুঙ্গি পরা গ্রাহককেও স্যার বলতে হবে: হাইকোর্ট

২০২১ সালের নভেম্বরে একই ধরনের কয়েকটি ঘটনা ঘটার পর জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন তখন বলেছেন, ‘‘সরকারি সেবা নিতে আসা জনসাধারণকে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ‘স্যার’ বা ‘ম্যাডাম’ বলে সম্বোধন করতে হবে, এমন কোনো নীতি নেই।”

তিনি আরো মনে করিয়ে দেন, ‘‘যদি কোনো সরকারি কর্মকর্তা জনসাধারণের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে তবে তা দুর্নীতির শামিল।” [সূত্র: ডয়চে ভেলে বাংলা]