শিক্ষিকার আত্মহত্যা, স্বামী আত্মগোপনে
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১০:৩৪ AM , আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১১:০৫ AM
স্বামীর প্রতারণার সন্দেহে ঝালকাঠিতে সুলতানা জাহান মুনা (২৯) নামে এক শিক্ষিকা আত্মহত্যা করেছেন। শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) নিজ বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। বিকালে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
আত্মহত্যার ২ দিন আগে স্থানীয় থানায় সাবেক স্বামী ফরিদুলের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন মুনা। কিন্তু অভিযোগ দায়ের এবং আত্মহত্যার পর তার স্বামী ফরিদুলের আত্মগোপনের বিষয়ে পুলিশ কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন নিহতের আত্মীয়রা।
মুনার পরিবারের বক্তব্য থেকে জানা যায়, প্রায় ৯ বছর আগে ভালোবেসে ফরিদুল ইসলাম ও সুলতানা জাহান মুনা বিয়ে করেছিলেন। মুনা কৃষ্ণকাঠি টাইগার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা ছিলেন। তার সাবেক স্বামী ফরিদুল ইসলাম ডাচ-বাংলা ব্যাংকের পাবলিক রিলেশন অফিসার। বর্তমানে তাদের ৭ বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। সংসার জীবনে স্বামী ফরিদুলের সাথে মামাতো বোনের ও স্ত্রী মুনার সাথে এক সহকর্মীর সম্পর্ক থাকার সন্দেহ নিয়ে উভয়ের মধ্যে সমস্যা সৃষ্টি হয়। পরে ৩০ জুন বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে মুনা ও ফরিদুলের।
কিন্তু গত ১৮ জুলাই নিজের ভুল স্বীকার করে মুনাকে পুনরায় বিয়ের প্রস্তাব দেন তার স্বামী। মেয়ের ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে মুনা তাতে সম্মত হন। এরপর তারা আবার স্বামী-স্ত্রীর মতো বসবাস করতে শুরু করেন।
মুনার ঘনিষ্ঠ কয়েকজন সহকর্মী জানান, পরিবারের আপত্তি সত্ত্বেও বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) মুনা-ফরিদুল আবার রেজিস্ট্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সেদিন বিকালে মুনা ডাচ-বাংলা ব্যাংক কার্যালয়ে আসেন, সেখানে গিয়ে জানতে পারেন ফরিদুল ছুটি নিয়ে ঢাকা চলে গিয়েছেন। এরপর তিনি মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েন।
১ তারিখ সন্ধ্যায় ঝালকাঠি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে ও তার পরিচিত বেশ কয়েকজন সাংবাদিককে বিষয়টি জানান তিনি। এ বিষয়ে ঝালকাঠি থানার এসআই ইশরাত জাহান জানিয়েছেন, শিক্ষিকা মুনাকে সাথে নিয়ে গত ২ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকালে তার অভিযোগ তদন্তে দারখি গ্রামে গেলেও অভিযুক্তকে না পেয়ে ফিরে আসেন তারা।
এরপর শনিবার দুপুরে নিজ ফেসবুক আইডিতে বাবা-মাকে নিয়ে সুইসাইড নোট পোষ্ট দিয়ে , নিজ বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন এই শিক্ষিকা।
ডাচ-বাংলা ব্যাংক শাখা ব্যবস্থাপক বাবুল আক্তার জানিয়েছেন , '১ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার শিক্ষিকা মুনা তাদের অফিসে এসে ফরিদুলকে না পেয়ে আমাকে তাদের পারিবারিক সমস্যা ও তাকে পুনরায় কাবিন করার বিষয়টি জানালেও পারিবারিক বিষয় বলে আমার কিছু করার নেই বলে জানাই। রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) ফরিদুল কোন পূর্ব নোটিশ ছাড়াই অফিসে অনুপস্থিত রয়েছে ও তার সেল ফোনটিও বন্ধ করে রেখেছে।'