গবেষকদের সর্বোচ্চ দায়বদ্ধতা নিয়ে কাজ করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০২২, ০১:৫৪ PM , আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২২, ০১:৫৪ PM
সর্বোচ্চ শ্রম ও দায়বদ্ধতা নিয়ে জাতীয় উন্নয়ন ও মানুষের কল্যাণে গবেষণা করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন আজ গবেষণা করছেন, সেই গবেষণার ফলাফল আমি দেখতে চাই। বৃহস্পতিবার (০৩ মার্চ) বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, বিজ্ঞানী, গবেষক এবং বিজ্ঞান শিক্ষার্থীদের মধ্যে ‘বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ’, এনএসটি ফেলোশিপ’ এবং ‘বিশেষ গবেষণা অনুদান’ প্রদান অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশের মানুষের দেওয়া রাজস্ব থেকে আপনাদের ফেলোশিপ এবং গবেষণা অনুদান দেওয়া হচ্ছে। যারা ফেলোশিপ পাচ্ছেন, তাদের সর্বোচ্চ শ্রম ও দায়বদ্ধতা নিয়ে জাতীয় উন্নয়নে কাজ করতে হবে। কারণ আমরা চাই, দক্ষ মানব শক্তি গড়ে তুলতে। বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে, প্রযুক্তির নতুন নতুন উদ্ভাবনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের চলতে হবে।
শিল্পায়নের ক্ষেত্রে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব দরজায় কড়া নাড়ছে, সেটা আমাদের ধরা দরকার। তাই উপযুক্ত দক্ষ মানব সম্পদও আমাদের গড়ে তুলতে হবে। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা আপনাদের সহযোগিতা করে যাচ্ছি, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
দেশে-বিদেশে বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ক্ষেত্রে এমএস, এমফিল, পিএইচডি ও পিএইচডি-উত্তর প্রোগ্রামের জন্য ‘বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ’ দেওয়া হয়। ২০১০-১১ অর্থবছর থেকে এখন পর্যন্ত ৫৯৬ জনকে ২২৫ কোটি ৮২ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া এমফিল, পিএইচডি ও পিএইচডি-উত্তর পর্যায়ে ‘জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ’ দেওয়া হয়। ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে এখন পর্যন্ত ২২ হাজার ২২০ জন ছাত্র-ছাত্রী ও গবেষককে ১৩৭ কোটি ৫৩ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভর্তি পরীক্ষা, ক্লাস, গবেষণা ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
ফেলোশিপের পাশাপাশি বিজ্ঞানী ও গবেষকদের মধ্যে বিশেষ অনুদান দিয়েছে সরকার। গত ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে চলতি অর্থবছর পর্যন্ত পাঁচ হাজার ২০টি প্রকল্পের অনুকূলে ১৭৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে।
সরকারপ্রধান বলেন, আপনাদের কাছে দেশের মানুষ যেন সহযোগিতা পায়, আপনাদের উদ্ভাবনী জ্ঞানের ব্যবহারিক প্রয়োগ যেন মানুষের কল্যাণে হয়, যারা আজ গবেষণা করছেন, সেই গবেষণার কি ফলাফল হলো, সেটা আমি দেখতে চাই। আমি মনে করি, এ মেধা কাজে লাগিয়েই আমরা এগিয়ে যেতে পারব। বাংলাদেশ ভবিষ্যতে কেমন বাংলাদেশ হবে, সেই পরিকল্পনাও আমি দিয়ে যাচ্ছি।
বিজ্ঞান ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে গবেষণা বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বিজ্ঞানের গবেষণা এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণা, মেডিক্যালে আমাদের গবেষণা কম, সেখানে আমি গুরুত্ব দিচ্ছি। আরও বেশি করে আমাদের গবেষণা করতে হবে। এটাই পারে আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে। আজ আমরা দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে পারতাম না, যদি গবেষণা না থাকত। এজন্য আমি গবেষণাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের ছেলেমেয়েরা, তাদের আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। ভবিষ্যৎ বংশধরদের আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যেয়ে আগামী দিনের বাংলাদেশ, অর্থাৎ ২০৪১ এর উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার কাজে সবাইকে মনোনিবেশ করতে হবে। কীভাবে ধাপে ধাপে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে, সেদিকে আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে।
যদি পরিকল্পনা নিয়ে আমরা এগুতে পারি, বাংলাদেশকে কেউ আর দাবিয়ে রাখতে পারবে না। আমি এটাই বলব, আত্মবিশ্বাস হচ্ছে সবচেয়ে বড় জিনিস। আত্মবিশ্বাস নিয়ে চললে যে কোনো কাজ করা যায়, অসাধ্য সাধন করা যায়, যোগ করেন তিনি।
বড় বড় মেগা প্রকল্পগুলো নির্মাণে দেশে দক্ষ জনবলও তৈরি হচ্ছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, বড় বড় যেসব প্রকল্প আমরা করছি, আজ কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল, পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র, অথবা পদ্মাসেতুর মতো বড় বড় প্রজেক্ট- এখানে আমাদের বহু ইঞ্জিনিয়ার থেকে শুরু করে বহু কর্মী কাজ করে যাচ্ছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে। এর মাধ্যমে আমি মনে করি, আমাদের দক্ষ জনবলও সৃষ্টি হচ্ছে।