টিকা নিতে এসে ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা
টিকা নিতে গিয়ে নানামুখি হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। কেন্দ্র সংখ্যা কম থাকায় একটি কেন্দ্রে একসঙ্গে অনেক শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়া হচ্ছে। টিকাকেন্দ্রে হচ্ছে ভিড়। এই ভিড়ের কারণে একদিকে যেমন স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন হচ্ছে, তাছাড়া দীর্ঘসময় দাঁড়িয়ে থেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছে অনেক শিক্ষার্থী।
বুধবার (২২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে টিকা নেওয়ার জন্য আসা শিক্ষার্থীদের নানা ভোগান্তির চোখে পড়ে। অনেক শিক্ষার্থী তথ্য জানতে না পারায় টিকা কেন্দ্র আসেনি।
আরও পড়ুন: অস্ত্রসহ ছাত্রলীগ নেতা আটক
কাকলী উচ্চ বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ দীন মোহাম্মদ খান জানান, এখানে ৪ হাজার শিক্ষার্থীর টিকা দেওয়া কথা ছিল। মধ্যে বুধবার ১ হাজার শিক্ষার্থী টিকা নিতে আসেনি। যে ৩ হাজার শিক্ষার্থী ছিল তার অনেকের সঙ্গে তাদের বাবা-মা ছিল। ফলে কমবেশি ৮-৯ হাজার মানুষ উপস্থিত হয়েছিল কলেজ ক্যাম্পাসে। এ কারণে প্রচণ্ড ভিড় তৈরি হয়। যে কারণে অনেক সময় স্বাস্থ্যবিধি মানতে পারেনি শিক্ষার্থীরা।
প্রচণ্ড ভিড়ের কারণে শিক্ষার্থীর পাশাপাশি অসুস্থ হয়ে পড়ছে অভিভাবকরা। তারা জানান, একটি কলেজে এক দিনে কেন ৪ হাজার শিক্ষার্থীকে টিকা জন্য আসতে হবে। এতে তো ভিড় হবেই। স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন তো হবেই।
আরও পড়ুন: এসএসসির ফল প্রকাশের তারিখ জানাল আন্ত:বোর্ড সমন্বয়ক
সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে, স্বাস্থ্য বিভাগ ও শিক্ষা অধিদপ্তরের কারণে এমনটি হচ্ছে, যার খেসারত দিচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি টিকাদান কর্মসূচিটি দেড় মাসের বেশি সময় আগে শুরু হলেও কাঙ্ক্ষিত গতি পায়নি।
সূত্র থেকে আরও জানা গেছে , টিকা গ্রহণের রেজিস্ট্রেশন জটিলতার কারণে সরকার সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষার্থীরা টিকা কার্ড নিয়ে কেন্দ্রে গেলেই টিকা দিতে পারবে। এ কারণে অনেকে টিকা কার্ড পূরণ করে না আসার কারণে সমস্যা তৈরি হয়।
ভোগান্তির শিকার এক শিক্ষার্থীরা জানায়, দ্বিতীয় ডোজের তারিখ দেখে কেন্দ্রে উপস্থিত হয়েছি। অনেক দূর থেকে এসেছি। কেন আমাদের জানানো হলো না যে, আজ দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে না। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর এবং সংশ্লিষ্ট কলেজের অধ্যক্ষ এজন্য দায়ী।
এ বিষয় সিভিল সার্জন (ঢাকা) ডা. মইনুল আহসান জানান, করোনার টিকা দেওয়ার সময় যেসব ব্যবস্থাপনা দরকার তা স্বাস্থ্য বিভাগ করছে। শিক্ষা বিভাগ করছে কি না, সেটা তাদের বিষয়।
আরও পড়ুন: হত্যার কথা স্বীকার করছেন না মেঘলার স্বামী
এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক জানান, আপাতত কেন্দ্র বাড়ানোর পরিকল্পনা নেই। ছুটি থাকায় অনেকের সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যোগাযোগ নেই। এ কারণে কিছুটা সমস্যা হতে পারে। তবে কেন্দ্রগুলো শিক্ষা কর্মকর্তাদের মনিটরিং করার কথা। যদি ব্যত্যয় হয়, সে বিষয়ে তিনি ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান। শিক্ষার্থীদের বর্তমানে দ্বিতীয় ডোজের টিকাদান চলছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
প্রসঙ্গত, চলতি বছর ১ নভেম্বর থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। ১২ বছর থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থী এ টিকা নিতে পারছে। এই বয়সসীমার শিশুর সংখ্যা ১ কোটি এবং তাদের টিকার আওতায় আনার জন্য ২ কোটি ডোজ টিকার প্রয়োজন। সরকার এখন পর্যন্ত ১১ লাখ শিক্ষার্থীকে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ দিয়েছে এবং ২ লাখের বেশি শিক্ষার্থীকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। টিকা কেন্দ্র হিসেবে রাজধানীর আটটি স্কুলকে নির্বাচন করা হয়েছে।