১৯৭১: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণহত্যা ছিল ‘নজিরবিহীন’
- শিউলী রহমান
- প্রকাশ: ২৫ মার্চ ২০২০, ১১:০৯ PM , আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২০, ১২:২৩ AM
ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে পরবর্তী সব আন্দোলনে রোল মডেল হিসেবে ভূমিকা পালন করে আসছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। জাতির ক্রান্তিলগ্নে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান যেমন সবচেয়ে বেশি, তেমনি বড় বড় সব ঝড়-ঝাপ্টাও বয়ে গেছে এই বিশ্ববিদ্যালটির উপর দিয়ে। তেমনই এক ঝড় ২৫ মার্চের রাত।
ইতিহাসের তথ্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। কিন্তু রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া খান ও জুলফিকার আলী ভুট্টো মিলে ক্ষমতা হস্তান্তরে গড়িমসি করতে থাকেন। সেই সময় বাঙালিদের ওপর সামরিক হত্যাযজ্ঞের নীলনকশা চূড়ান্ত করা হয়। আর জল্লাদ ইয়াহিয়ার নির্দেশে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতের আঁধারে সেনানিবাস থেকে বেরিয়ে আসে পাকিস্তানি হানাদারদের ট্যাংক আর সাঁজোয়া যানের বহর।
মার্কিন সাংবাদিক রবার্ট পেইন ২৫ মার্চের রাত সম্পর্কে লিখেছিলেন, ‘ঢাকায় ঘটনার শুরু মাত্র হয়েছিল। সমস্ত পূর্ব পাকিস্তান জুড়ে সৈন্যরা বাড়িয়ে চললো মৃতের সংখ্যা। জ্বালাতে শুরু করলো ঘর-বাড়ি, দোকান-পাট। লুট আর ধ্বংস তাদের নেশায় পরিণত হলো। রাস্তায় রাস্তায় পড়ে থাকা মৃতদেহগুলো কাক-শেয়ালের খাবারে পরিণত হলো। বাংলাদেশ হয়ে উঠলো শকুনতাড়িত শ্মশান ভূমি।’
তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে বড় তথ্য হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চালানো নৃশংস হত্যাযজ্ঞ। ব্রিটিশ সাংবাদিক সায়মন ড্রিং। ২৭ মার্চ সকালে শহর থেকে কারফিউ তুলে নেওয়ার পর সায়মন বেরিয়ে পড়েন রাস্তায়। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ফরাসি আলোকচিত্রী মিশেল লরা। ২৫ মার্চ রাতের ধ্বংসযজ্ঞ তাঁরা প্রত্যক্ষ করেন শহরজুড়ে। এক সাক্ষাৎকারে সায়মন ড্রিং বলেন, ২৭ মার্চ ঘুরতে ঘুরতে তিনি ইকবাল হলেও ঢুকেছিলেন। তিনি সেখানে নিজে ৩০টি লাশ গুনে দেখেছেন। ড্রিং জানান, সেদিন মর্টারের শেল আর মেশিনগানের অবিরাম গুলিতে শুধু ইকবাল হলেই নিহত হয়েছিলেন ২০০ নিরপরাধ ছাত্র। হামলার দুই দিন পরও দেখা যাচ্ছিল পুড়ে যাওয়া রুমের মধ্যে পড়ে থাকা লাশ আর লাশ। পাকিস্তানি বাহিনী আরও বহু লাশ সরিয়ে ফেলেছিল আগেই।
২৬ মার্চ ভোরেই পরিস্থিতি বুঝতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা জরিপ করতে বেরিয়েছিলেন মেজর সিদ্দিক সালিম। তাঁর বইয়ে ওই সকালের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে এভাবে, ‘আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় গণকবরগুলো জরিপ করছিলাম। সেখানে আমি তিনটি ঢিবি দেখতে পাই, যার প্রতিটি ৩ থেকে ১৫ মিটার ডায়ামিটারের ছিল। সেগুলো নতুন মাটিতে ভরাট করা। কিন্তু কোনো অফিসার মৃতের প্রকৃত সংখ্যা জানাতে রাজি ছিল না। আমি দালানগুলো ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলাম, বিশেষত ইকবাল ও জগন্নাথ হলের, যেগুলো আমার মনে হলো, অ্যাকশনের মাধ্যমে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযানটি কতটা নৃশংস ছিল, জগন্নাথ হলের ক্যানটিনের কর্মী সুনীল কুমার দাসের বিবরণে তার কিছুটা আঁচ পাওয়া যায়। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘সেদিন (জগন্নাথ হলের) শহীদ মিনারের পাশে কত লোকের যে লাশের সারি ছিল, তার কোনো হিসাব নেই। হল থেকে ছাত্রদের, হলের শিক্ষক-কর্মচারীদের হত্যা করে লাশ এনে কবর দেওয়া হয়। আমিসহ চারজন কর্মচারী একটা ড্রেনে লুকিয়ে ছিলাম। আমরা পরদিন সকালে পালিয়ে যেতে সক্ষম হই।’
রশীদ হায়দার সম্পাদিত ১৯৭১: ভয়াবহ অভিজ্ঞতা বইটিতে নূরুল উলা লিখেছেন, ‘রাতে দেখি জগন্নাথ হল ছাত্রাবাসের চারপাশ পাকবাহিনীতে ছেয়ে গেছে। হলের কক্ষগুলোতে আগুন। কক্ষগুলোতে ঢুকে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। সকালে উঠে দেখি মাঠের পশ্চিম দিকে লাশ এনে জড়ো করা হচ্ছে। আহতদের গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করা হচ্ছে। এভাবে কয়েকবার চলল।...আমি তাড়াতাড়ি ক্যামেরা সেট করে একটা কালো কাগজে ফুটো করে ক্যামেরার লেন্সটা জানালার কাচের ওপর রাখলাম। এরপরের তিনটা গণহত্যা ধারণ করলাম। বুলডোজার দিয়ে মাটি খুঁড়তেও দেখলাম।’
শিক্ষক হত্যাকাণ্ড
২৫ মার্চের গণহত্যার (অপারেশন সার্চলাইট) প্রথম পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ জন শিক্ষককে হত্যা করা হয়। এদিন অধ্যাপক ফজলুর রহমান এবং তার দুই আত্মীয় নীলক্ষেতের ২৩ নং ভবনে নিহত হন। তার স্ত্রী দেশের বাইরে অবস্থানের কারণে বেঁচে যান। পাকবাহিনী অধ্যাপক আনোয়ার পাশা এবং অধ্যাপক রশিদুল হাসানের (ইংরেজি বিভাগ) বাসভবন আক্রমণ করে। তারা দুজনেই খাটের নিচে লুকিয়ে বেঁচে যান, কিন্তু পরবর্তীতে আল-বদর বাহিনীর হাতে প্রাণ হারান। ২৪ নং ভবনে বাংলা সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম থাকতেন। তার বাসভবনে প্রবেশমুখে দুইজন আহত নারী তাদের সন্তানসহ কিছুক্ষণের জন্য আশ্রয় নিয়েছিলেন। তাদের রক্তের দাগ লেগে ছিলো মাটিতে। পাকবাহিনী যখন তার বাসভবন আক্রমণের জন্য আসে, তখন তারা রক্তের দাগ দেখে ধারণা করে নেয় অন্য কোন ইউনিট হয়তো এখানে কাজ সমাধা করে গেছে, তাই তারা আর প্রবেশ করেনি। এভাবে অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম নিতান্ত ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান। পরবর্তীকালে তিনি জানান যে, ওই ভবনে আরও একজন পূর্ব-পাকিস্তানী অধ্যাপক বাস করতেন, যিনি ২৫ মার্চের আগেই ঘর ছেড়ে যান। অন্যসব বাসায় অবাঙ্গালী কিছু পরিবার থাকতো, যারা অন্যদের কিছু না জানিয়েই ঘর ছেড়ে অন্যত্র সরে যায়।
১২ নং ফুলার রোডের বাসভবনে পাকিস্তানী আর্মি সমাজতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক সায়েদ আলী নোকির বাসায় যায়। আর্মি তাকে ছেড়ে দিলেও ওই একই ভবনের ভূ-তত্ত্ববিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল মুক্তাদিরকে হত্যা করে। তার মৃতদেহ জহরুল হক হলে (তদানীন্তন ইকবাল হল) পাওয়া যায়। পরে তার আত্মীয়েরা তাকে পল্টনে সমাহিত করেন। ইংরেজি সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ক ম মুনিম, যিনি সেই সময় সলিমুল্লাহ হলের হাউস টিউটরের দায়িত্বে ছিলেন, পাকিস্তানী বাহিনীর আক্রমণে আহত হন। ঢাকা হলের গণিত বিভাগের অধ্যাপক আ র খান খাদিম ও শরাফত আলীকে হত্যা করা হয়। পাকিস্তানী বাহিনী জগন্নাথ হলে শিক্ষকনিবাসে আক্রমণ করে এবং অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মির্জা হুদা ও ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মফিজুল্লাহ কবিরকে লাঞ্ছিত করে।
তৎকালীন সময়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছাত্রদের আবাস জগন্নাথ হল আক্রমণের সময় হলের প্রভোস্টের বাসাও আক্রমণ করা হয়। পাকিস্তানী বাহিনী ভূতপূর্ব-প্রভোস্ট এবং জনপ্রিয় শিক্ষক, দর্শন শাস্ত্রের অধ্যাপক জি সি দেবকে হত্যা করে, সংগে তার মুসলিম দত্তক কন্যার স্বামীকেও। এর পর পাকিস্তানী বাহিনী বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী বাসভবনে আক্রমণ করে এবং সেখানে পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড মনিরুজ্জামানকে তার পুত্র ও আত্মীয়সহ হত্যা করে। জগন্নাথ হলে প্রভোস্ট অধ্যাপক জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে মারাত্মকভাবে আহত হন এবং পরে হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। হলের ইলেক্ট্রিশিয়ান চিত্রাবলী ও চাক্ষুস সাক্ষী রাজকুমারী দেবী জানান, ঢাকা মেডিকেল কলেজের চিকিৎসকেরা অধ্যাপক ঠাকুরতাকে চিনতে পারেন এবং তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গের কাছে একটি গাছের নিচে সমাহিত করেন।
জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুরতার সাথে অধ্যাপক মনিরুজ্জামানকেও রাখা হয় এবং পরে হত্যা করা হয়। সহযোগী হাউস টিউটর অনুদ্বৈপায়ন ভট্টাচার্যকেও ছাত্রাবাসেই হত্যা করা হয়। অধ্যাপক আনোয়ার পাশার উপন্যাস ‘রাইফেল, রোটি, অওরাত’ থেকে এ তথ্য জানা যায়। অধ্যাপক পাশা পরবর্তীতে ডিসেম্বর মাসে আল-বদর বাহিনীর হাতে নিহত হন। তিনি তার এই জনপ্রিয় উপন্যাসটি ১৯৭১ এর যুদ্ধকালীন ৯ মাসে রচনা করেন।
ছাত্রহত্যা
অসহযোগ আন্দোলন মূলত গড়ে ওঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জহরুল হক হলের ‘স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র আন্দোলন পরিষদ’কে কেন্দ্র করে। তাই, পাকবাহিনীর অপারেশন সার্চলাইটের প্রথম লক্ষ্য ছিলো এই হলটি। অধ্যাপক ড. ক ম মুনিমের মতে, এই হলের কম-বেশি ২০০ জন ছাত্রকে পাকবাহিনী হত্যা করে।
রাত বারোটার পর পাকসেনারা জগন্নাথ হলে প্রবেশ করে এবং প্রথমে মর্টার আক্রমণ চালায়, সেই সাথে চলতে থাকে অবিরাম গুলি। তারা উত্তর ও দক্ষিণের গেট দিয়ে ঢুকে নির্বিচারে ছাত্রদের হত্যা করতে থাকে। সেই আঘাতে ৩৪ জন ছাত্র প্রাণ হারান। জগন্নাথ হলের কয়েকজন ছাত্র রমনা কালী বাড়ির বাসিন্দা ছিলেন। সেখানে ৫/৬ জনকে হত্যা করা হয়। তাদের মধ্যে কেবলমাত্র একজনের নাম পরবর্তীকালে জানতে পারা যায়, তার নাম রমণীমোহন ভট্টাচার্য্য। ছাত্রদের কাছে আসা অনেক অতিথিও এই সময় প্রাণ হারান। এদের মধ্যে ভৈরব কলেজের হেলাল, বাজিতপুর কলেজের বাবুল পল, জগন্নাথ হলের বদরুদ্দোজা, নেত্রকোনার জীবন সরকার, মোস্তাক, বাচ্চু ও অমর। আর্চার কে ব্লাড-এর বই "The Cruel birth of Bangladesh" হতে জানা যায় যে, ছাত্রীনিবাস রোকেয়া হলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয় এবং ছাত্রীরা আগুন থেকে বাঁচতে হলের বাইরে আসা শুরু করলে পাকবাহিনী তাদের উপরে নির্বিচারে গুলি চালায়। পাকবাহিনী নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সাথে আর্মি ইউনিট ৮৮ এর কথোপকথন থেকে জানা যায়, আনুমানিক ৩০০ জন ছাত্রীকে সে সময় হত্যা করা হয়।
কর্মকর্তা-কর্মচারী হত্যা
জহরুল হক হল আক্রমণের প্রথম পর্যায়েই ব্রিটিশ কাউন্সিলে পাহারারত ইপিআর গার্ডদের হত্যা করা হয়। তারপর হলের কর্মচারী সিরাজুল হক, আলী হোসেন, সোহরাব আলী গাজী ও আব্দুল মজিদকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক লাউঞ্জে হত্যা করা হয়। রোকেয়া হল চত্বরে সপরিবারে হত্যা করা হয় আহমেদ আলী, আব্দুল খালেক, নমি, মোঃ সোলায়মান খান, মোঃ নুরুল ইসলাম, মোঃ হাফিজুদ্দিন ও মোঃ চুন্নু মিয়াকে।
শহীদ মিনার ও বাংলা অ্যাকাডেমী আক্রমণের দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাদলটি শহীদুল্লাহ হল সংলগ্ন শিক্ষকনিবাসগুলোয় এবং মধুসূদন দে'র বাসভবনেও আক্রমণ করে। ১১ নং ভবনে ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরী বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোঃ সাদেককে হত্যা করা হয়। এখানে পাকবাহিনী প্রায় ৫০টির মতো হত্যাকাণ্ড ঘটায়, যাদের মধ্যে কয়েকজন পুলিশ অফিসার (রাজারবাগ পুলিশ লাইনে থেকে পালিয়ে আসা), রাষ্ট্রপতি ভবনের পাহারার দায়িত্বে থাকা ইপিআর সদস্যগণ এবং বিশ্ববিদ্যালয় ২৩ নং আবাসিক ভবনের ছাদে আশ্রয় নেয়া নীলক্ষেত বস্তির কয়েকজন অধিবাসী।
মার্চের ২৫ থেকে ২৭ তারিখের মধ্যে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ভিন্ন ধর্মালম্বীদের তিনটি উপাসনালয় ধ্বংস করে ফেলে - কলা ভবন সংলগ্ন গুরুদুয়ারা নানক শাহী, রমনা কালী মন্দির ও শহীদ মিনার সংলগ্ন রমনা শিব মন্দির। রাতে দর্শণ বিভাগের কর্মচারী খগেন দে, তার ছেলে মতিলাল দে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী সুশীল চন্দ্র দে, বোধিরাম, ডাক্কুরাম, ভিমরায়, মণিরাম, জহরলাল রাজবর, মনবরণ রায়, রাজবর ও সংকর কুরীকে হত্যা করা হয়ী
ছাত্রী-নিবাস আক্রমণ
ঢাকার তৎকালীন কাউন্সিল জেনারেল আর্চার কে ব্লাড তার বই ''The cruel birth of Bangladesh' এ লিখেছেন - "ছাত্রীনিবাস রোকেয়া হলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয় এবং ছাত্রীরা আগুন থেকে বাঁচতে হলের বাইরে আসা শুরু করলে পাকবাহিনী তাদের উপরে নির্বিচারে গুলি চালায়। এছাড়া, ১০ নভেম্বর ১৯৭১ এ কয়েকজন সশস্ত্র দুস্কৃতিকারী রোকেয়া হল আক্রমণ করে এবং ৩০ জনের মতো ছাত্রীকে প্রায় দুই ঘণ্টার মতো অবরুদ্ধ করে রাখে। তারা প্রভোস্টের বাড়িও আক্রমণ করে"। ১৯৭১ এর সেই সময়ে রোকেয়া হলের কাছেই দু'টি শক্তিশালী সেনা ঘাটি ছিলো, তাদের অজ্ঞাতসারে ছাত্রীনিবাসে দুই ঘণ্টা ধরে এই আক্রমণ চালানো একেবারেই অসম্ভব ছিলো। তাই ধরে নেয়া যায় যে, এটা তাদেরই কারো অথবা তাদের সুবিধাভোগী বিহারীদের কাজ ছিলো।