জান্তা সরকারকে বাংলাদেশের শুভেচ্ছা, বিরত চীন, ভারত ও থাইল্যান্ড
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০৩ PM , আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:১৯ PM
মিয়ানমারের জান্তা সরকারকে হটিয়ে বাংলাদেশের ২৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে আরাকান আর্মি। ওই অঞ্চলের বিদেশী বিনিয়োগ, ব্যবসা ও প্রকল্পের সুরক্ষা দেয়ার পাশাপাশি বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনেরও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যেই গত ৪ জানুয়ারি মিয়ানমারের ৭৭তম স্বাধীনতা দিবসে জান্তা সরকারের কাছে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। তবে জান্তা সরকারকে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠাননি দেশটির প্রতিবেশী চীন, ভারত ও থাইল্যান্ড।
জান্তা সরকারকে অস্ত্র ও যুদ্ধবিমান দিয়ে সহায়তাকারী দেশের মধ্যে চীন অন্যতম। পাশাপাশি জাতিসংঘেও মিয়ানমারকে কূটনৈতিক সমর্থন দিয়ে থাকে দেশটি। তবুও জান্তাকে শুভেচ্ছা জানানো থেকে নিজেদের বিরত রেখেছে চীন। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকেই দেশটি মিয়ানমারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক হ্রাস করে। তখন থেকেই মিয়ানমারের স্বাধীনতা দিবসে অভিনন্দন বার্তা পাঠাচ্ছে না দেশটি।
এদিকে মিয়ানমারের অন্য একটি বৃহৎ প্রতিবেশী দেশ ভারতও অভিনন্দন বার্তা পাঠানো থেকে বিরত থেকেছে। একইভাবে প্রতিবেশী অন্য দুটি দেশ থাইল্যান্ড ও লাওসের পক্ষ থেকেও ৭৭তম স্বাধীনতা দিবসে অভিনন্দন পাঠানো হয়নি।
বাংলাদেশ থেকে বার্তা পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘কূটনৈতিক সম্পর্ক থাকা দেশগুলোর সঙ্গে নিয়মিত কূটনীতি চর্চার অংশ হিসেবেই এ শুভেচ্ছা বার্তা পাঠানো হয়েছে।’
বাংলাদেশ থেকে অভিনন্দন বার্তা পাঠানোকে কূটনৈতিক সম্পর্কের অংশ হিসেবে উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক এখনো আছে। এর ফলে এ অভিনন্দন বার্তা পাঠানোতে কোনো সমস্যা দেখছি না। তবে বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের মূল সংকট হলো রোহিঙ্গা এবং কূটনৈতিক ইস্যুতে। এ দুটি বিষয়ে বৈশ্বিক কিংবা দ্বিপক্ষীয় উভয়ভাবেই বিগত সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। একটি নির্বাচিত সরকারের পক্ষে এ সংকটগুলো সমাধান করা সম্ভব।’
তবে এ বিষয়ে বিশ্লেষকেরা বলছেন, 'বর্তমানে যেহেতু রাখাইন সীমান্তে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর কোনো কর্তৃত্ব নেই; আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে; তাই এ গোষ্ঠীটির সঙ্গে সম্পর্কের ওপর নির্ভর করবে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের ভবিষ্যৎ। রোহিঙ্গারা যাতে মিয়ানমারের নাগরিকত্ব পায় সে জন্য সেখানকার ছায়া সরকার-এনইউজি এবং আরাকান আর্মির সায় রয়েছে। সে জন্য আরাকান আর্মিকে পাশ কাটিয়ে কোনোকিছু করা উচিত হবে না। তাছাড়া চীন ও ভারত এখানে কী ভূমিকা রাখছে সে বিষয়টিও নজরে রাখা জরুরি। আবার মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করতে পরাশক্তির দেশগুলোও এনইউজিকে সহায়তা করছে। এসব বিষয়কে চিন্তা করেই বাংলাদেশকে সামনে এগোতে হবে।'
উল্লেখ্য, জান্তা মিডিয়ার তথ্যমতে, বাংলাদেশ ছাড়াও স্বাধীনতা দিবসে অভিনন্দন বার্তা পাঠানো দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে রাশিয়া, বেলারুশ, পাকিস্তান, উত্তর কোরিয়া, আলজেরিয়া, নেপাল ও কম্বোডিয়া।