‘বাবু হইলে বাবুকে বইলো আমি তোমাকে আর তাকে খুব ভালোবাসি’

আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় পুলিশের একটি থানা
আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় পুলিশের একটি থানা  © ফাইল ছবি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ‌। ঊর্ধ্বতনদের নির্দেশনায় নির্বিচারে ছাত্র-জনতার উপর গুলি করায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পরে সরকারি এই বাহিনী। শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর আন্দোলনকৃতদের রোষানলে পরে পুলিশ। এর ফলে ৫ আগস্ট দেশের প্রায় প্রতিটি থানায় থামলা হয়। নিহত হন ৪১ জন পুলিশ সদস্য।

নিহতদের মধ্যে একজন কনস্টেবল মো. আবু হাসনাত রনি। গত ৫ আগস্ট রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানায় তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। মৃত্যুর আগে পরিবারের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পেয়েছিলেন রনি। তার শেষ ইচ্ছা হিসেবে এ সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। মায়ের সঙ্গে কথা বলা শেষ না হতেই পিটিয়ে মেরে ফেলা হয় রনিকে।

রনির স্ত্রী সাবিনা আক্তার আশাও পুলিশে চাকরি করেন। দুই বছর আগে বিয়ে হয়েছিল তাদের। আশা বর্তমানে আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা। অনাগত সন্তানের ‍মুখ দেখার আগেই না ফেরার দেশে পারি জমিয়েছেন রনি। রনির সন্তান কখনোই তার বাবার আদর পাবে না। 

গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, রনির বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর থানার কাঁঠালডাঙ্গী ইউনিয়নের টেংরিয়া গ্রামে। রনির বাবার নাম মো. রফিকুল ইসলাম। রফিকুলের দুই মেয়ে আর এক ছেলে। রনিকে ছাড়া কীভাবে পরিবার চলবে সেই দুশ্চিন্তায় দিশেহারা পুরো পরিবার।

৫ আগস্টের বর্ণনা দিয়ে রনির বাবা রফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, “রনিকে মারধরের একপর্যায়ে হামলাকারীরা বলে, ‘মৃত্যুর আগে কারও সঙ্গে কথা কথা বলতে চাইলে ফোন দিতে পারিস।’

“তখন সে বাড়িতে ফোন দেয়। ফোনে স্ত্রীকে বলেছিল, ‘বাবু হইলে বাবুকে বইলো আমি তোমাকে আর তাকে খুব ভালোবাসি।’ পরে ওর মা ফোন নিলে বলে, ‘আমি খুব বিপদে আছি, দোয়া কইরো মা।’ এটুকু বলতেই হামলাকারীরা তার মোবাইল কেড়ে নেয়, পরে পিটিয়ে হত্যা করে আমার ছেলেকে।”

তিনি আরও বলেন, আমার ছেলের চাকরির বয়স চার বছর হয়েছিল। পরিবারের আর্থিক অবস্থা জানিয়ে আইজিপির কাছে আবেদন করেছি। তিনি আমাদের বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।


সর্বশেষ সংবাদ