মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে যা বললেন সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ

সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদ
সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদ  © ফাইল ফটো

বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর। দুর্নীতির দায়ে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর এবার মুখ খুলেছেন সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদ। মঙ্গলবার (২১ মে) দুপুরে একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে দেওয়া এক প্রক্রিয়ায় নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে কথা বলেন সাবেক এই সেনাপ্রধান।

আজিজ আহমেদ বলেন, আমি বিজিবির মহাপরিচালক এবং সেনাপ্রধান থাকাকালীন আমার কোনো ভাই বা নিকটাত্মীয় এই দুই প্রতিষ্ঠানের কোথাও ঠিকাদারি করেছে তার তথ্য প্রমাণ দিতে পারলে আমি সব মেনে নেব। শুধু তাই নয়, এই প্রতিষ্ঠান দুটিতে তাদের কোনো লাইসেন্স ছিল সেটার প্রমাণ দিতে পারলেও আমি সব শাস্তি মেনে নেব।

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে কোন আইনি প্রক্রিয়া বা প্রতিবাদ জানাবেন কী না, জানতে চাইলে সাবেক এই সেনাপ্রধান বলেন, আমি মনে করি এগুলো সত্য নয়। তাই এর প্রতিবাদ জানানোর প্রয়োজন মনে করছি না। তিনিসহ তার পরিবারের যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলে, কোনো মন্তব্য করতে চাননি তিনি।

তিনি বলেন, ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি আল জাজিরায় ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস ম্যান’ নামক একটি নাটক মঞ্চস্থ হয়েছিল। তার সঙ্গে এই নিষেধাজ্ঞা সম্পৃক্ত ওতপ্রোতভাবে। অভিযোগ দুইটা একই, কিন্তু এখানে বিস্তারিত বলা হয়নি।

তিনি বলেন, আমাকে যে দুই কারণে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তার কী কোনো ভিত্তি আছে? তারা বলেছে, আমি আমার পদ-পদবি দিয়ে আমার ভাইকে নাকি সহযোগিতা করেছি। 

তিনি আরও বলেন, আমি কোনো অপরাধ করিনি যে শাস্তি পেতে হবে। তারা আমার বিরুদ্ধে যে-সব অভিযোগ তুলেছে তার কোনো প্রমাণ থাকলে আমাকে দিক।

সোমবার দিবাগত রাতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে দুর্নীতিতে সম্পৃক্ততার অভিযোগে বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদ ও তার পরিবারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলারের ওই বিবৃতিতে বলা হয়, উল্লেখযোগ্য দুর্নীতিতে সম্পৃক্ততার কারণে সাবেক জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদকে, পূর্বে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী প্রধান, ডিপার্টমেন্ট অব স্টেট, ফরেন অপারেশন অ্যান্ড রিলেটেড প্রোগ্রামস অ্যাপ্রোপ্রিয়েশনস অ্যাক্টের ৭০৩১ (সি) ধারার আওতায় অন্তর্ভুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে পররাষ্ট্র দপ্তর।

এর ফলে আজিজ আহমেদ এবং তার পরিবারের সদস্যরা সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য অযোগ্য হবেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আজিজ আহমেদের কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানসমূহের অবমূল্যায়ন এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান ও প্রক্রিয়ার ওপর জনগণের আস্থা কমেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, আজিজ আহমেদ তার ভাইকে বাংলাদেশে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহি এড়াতে সহযোগিতা করেন। এটা করতে গিয়ে তিনি নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন। এছাড়া অন্যায্যভাবে সামরিক খাতে কন্ট্রাক্ট পাওয়া নিশ্চিত করার জন্য তিনি তাঁর ভাইয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন। তিনি নিজের স্বার্থের জন্য সরকারি নিয়োগের বিনিময়ে ঘুষ নিয়েছেন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও আইনের শাসন শক্তিশালী করতে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকার পুনরায় নিশ্চিত করা হলো।


সর্বশেষ সংবাদ