শিক্ষককে পিলারে বেঁধে মারধরের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩

আক্তার হোসেন বাবু
আক্তার হোসেন বাবু   © সংগৃহীত

লক্ষ্মীপুরে চোর অপবাদ দিয়ে আক্তার হোসেন বাবু নামের এক স্কুল শিক্ষককে বিদ্যুতের পিলারের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (১৫ এপ্রিল) ভোরে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- সাইমন হোসেন, শহীদুল ইসলাম ও সিফাত হোসেন।  তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো প্রক্রিয়া চলছে।

এর আগে গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার আইয়ুব আলী পোলের গোড়া নামক এলাকায় ওই শিক্ষককে পিলারের সঙ্গে বেঁধে মারধর করা হয়। এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে গতকাল রোববার রাতে ভুক্তভোগীর ভাই মাসুদুর রহমান থানায় মামলা করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আসেন আক্তার হোসেন বাবু। শুক্রবার রাতে শহরের আইয়ুব আলী পোলের গোড়া এলাকায় ছোট ভাই মাসুদুর রহমানের বাসায় বেড়াতে যান। রাতে হাঁটতে বের হলে প্যাঁচা সুমন, সাইমন হোসেন, অটোরিকশাচালক আলাউদ্দিন আলো, মমিন উল্যাহ ও সুমনসহ ১০-১২ জন ওই শিক্ষককে চোর অপবাদ দিয়ে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে হাত-পা বেঁধে ফেলে। একপর্যায়ে তার কাছে থাকা নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় নির্যাতন চালানো হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় আক্তার হোসেন বাবুকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ১৬ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, শিক্ষক আক্তার হোসেন বাবুকে খুঁটির সঙ্গে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করছে প্যাঁচা সুমন। এ সময় পাশে বেশ কয়েকজন যুবক বিষয়টি দাঁড়িয়ে দেখছে। 

নির্যাতিত শিক্ষক আক্তার হোসেন বাবু বলেন, ‘মাস্টার্স পাস করার পর ঢাকার ক্যামব্রিজ স্কলার্স স্কুলের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছি। ঈদে বেড়াতে আসি। ছোট ভাইয়ের বাসায় যাই। শুক্রবার রাতে স্থানীয় বখাটেরা আমাকে চোর অপবাদ দিয়ে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে বর্বর নির্যাতন চালিয়েছে। স্কুল-কলেজ ও চাকরিজীবনেও কখনো কারও সঙ্গে অন্যায় করিনি। অথচ আমাকে চোর অপবাদ দিয়ে নির্যাতন করা হয়।’ 

নির্যাতিত শিক্ষকের ভাই মাসুদুর রহমান বলেন, ‘ভাইকে যেভাবে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করা হয়, একটি সভ্য দেশে এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়ার মতো নয়। এ ঘটনায় থানায় ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেছি।’ 

সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার একে আজাদ বলেন, ‘আক্তার হোসেন বাবুকে বেদম মারধর করা হয়েছে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাঁর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে বলা যাবে।’ 

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুদ্দিন আনোয়ার বলেন, এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। ইতিমধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

 

সর্বশেষ সংবাদ