আঞ্চলিক কর্মকর্তার অনিয়ম, ১৫০০ শিক্ষকের বেতন-ভাতা বন্ধ

অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেন
অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেন  © সংগৃহীত

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর বরিশাল অঞ্চলের উপপরিচালক আনোয়ার হোসেনের কারণে ৬০০ প্রতিষ্ঠানের এক হাজার ৫০০ শিক্ষক বেতন পাচ্ছেন না। নানা কারণে মাসের পর মাস এমপিওভুক্তির আবেদনের ফাইল আটকে রাখায় এ সমস্যার তৈরি হয়েছে।

শনিবার (৩০ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২ টায় বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি (বিআরইউ) বীর মুক্তিযোদ্ধা-শহীদ জননী সাহান আরা বেগম স্মৃতি মিলনায়তনে এমপিও বঞ্চিত বেসরকারি শিক্ষক/ কর্মচারী বিভাগীয় প্রতিরোধ কমিটি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কমিটির আহবায়ক আবদুল জববার খান ।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বিভাগীয় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক আনোয়ার হোসেন শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির ফাইলগুলি দিনের পর দিন আটকে রাখেন, এমনকি তুচ্ছ কারনে ফাইলগুলি বাতিল করে দেয়া হয়। এর ফলে স্কুলের এই শিক্ষকরা চাকরি করলেও এমপিও থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলা হয়, উপপরিচালকের কারণে ঝালকাঠির নলছিটি, কাঁঠালিয়া, বরিশাল জেলার সদর , পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ সহ বরিশালের বিভিন্ন উপজেলার ৬০০ স্কুলের ১৫০০ শিক্ষক বেতন ভাতা থেকে গত ৬ মাস থেকে তিনবছর পর্যন্ত বঞ্চিত হয়ে আছে। জুনিয়র পদ থেকে সিনিয়র পদ, বা এক স্কুল থেকে আরেক স্কুলে গেলে বিভাগীয় উপপরিচালক আনোয়ার হোসেনের কাছে আটকে যাচ্ছে ফাইল। এর ফলে বেতন ভাতাও পাওয়া যাচ্ছে না।

এসময় বঞ্চিত শিক্ষক মো: লিয়াকত আলী জমাদ্দার বলেন, ২০২৩ সালের ১ জুন থেকে ঝালকাঠি জেলার কাঠালিয়া উপজেলার মরিচবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। এর আগে তিনি একই উপজেলার আমরাবুনিয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। কিন্তু গত ৯ মাস যাবত তিনি কোন সরকারী বেতন ভাতা পাচ্ছেন না।

তিনি জানান ‘ আমি ৪টি প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন করেছি, যতবার নিয়োগ হয়েছে, ততবার নতুন করে এমপিও হয়েছে, কিন্তু এবার শেষবারে গত ৯ মাস যাবত কোন বেতন ভাতা পাচ্ছিনা। ইতোমধ্যে আমার বাবার মৃত্যু হয়েছে, আমি সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে অর্থ কষ্টে থাকলেও এক টাকা বেতন ভাতা পাইনি। আমি আমার ছেলের লেখাপড়া চালাতে পারছি না’।

মো. হুমায়ুন কবির, নলছটির হাজী এম এ রশিদ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে নলছিটি পঞ্চগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২০২২ সালের ৭ জুলাই আসলেও প্রায় দুই বছর যাবত ধরে বেতন ভাতা পাচ্ছেন না। তিনি জানান ‘আগে বেতন ভাতা পেলেও নতুন প্রতিষ্ঠানে তিনি কোন বেতন ভাতা পাচ্ছেন না-’এনিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালেও কোন কাজ হচ্ছে না’।

এ বিষয়ে জানতে আনোয়ার হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বরিশাল অঞ্চল পরিচালক প্রফেসর ড. মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, হয়রানির বিষয়টা আমি শুনেছি। উপ পরিচালক আনোয়ার হোসেনের কাছে স্কুলের এতো ফাইল আটকে আছে এটা আমিও জানিনা। একজন শিক্ষক পূর্বে বেতন ভাতা পেলে-এখন কেন তাদের বেতন ভাতা বন্ধ থাকবে ? এটা কাম্য হতে পারে না। আমি এটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরব।


সর্বশেষ সংবাদ