যে বিভাগে সবচেয়ে বেশি বাল্যবিবাহ

  © সংগৃহীত

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এ-সংক্রান্ত এক জরিপ প্রতিবেদনে দেখা যায়, বাল্যবিয়ের ঘটনার দিক থেকে সারাদেশের মধ্যে রাজশাহী বিভাগের অবস্থা সবচেয়ে নাজুক। এ বিভাগে বাল্যবিয়ের ঘটনা সারাদেশের মোট বাল্যবিয়ের গড়ের দ্বিগুণ।

‘বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিক্স ২০২২’ শিরোনামের চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি গত বুধবার সংস্থার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। 

স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিক্সকে বিবিএসের মৌলিক জরিপগুলোর অন্যতম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এতে জনমিতির ১৩৮টি সূচকের তথ্য-উপাত্ত রয়েছে। এ ছাড়া টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) ২৭ সূচক এবং পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার ১৭টি সূচকের তথ্য-উপাত্ত রয়েছে সেখানে। সারাদেশের ২ হাজার ১২টি নমুনা এলাকার প্রায় ১৩ লাখ মানুষের কাছ থেকে জরিপের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। 

প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, ১৫ বছরের আগে বাল্যবিয়ের ঘটনা রাজশাহীতে ১১ দশমিক ৯৮ শতাংশ। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা খুলনা বিভাগের এ হার ৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ। বাল্যবিয়ের ঘটনা কমে আসার দিক থেকে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে সিলেট বিভাগ। এ বিভাগে এ ধরনের ঘটনা ১ দশমিক ০৪ শতাংশ। 

অন্যদিকে, ১৫ বছরের বেশি কিন্তু ১৮ বছরের কম বয়সসীমার বাল্যবিয়ের ঘটনাও রাজশাহী বিভাগেই বেশি। রাজশাহীতে এ বয়সসীমার মেয়েদের বিয়ের ঘটনা ৫২ দশমিক ২১ শতাংশ। এ হারের দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে বরিশাল। সেখানে এ বয়সী মেয়েদের বিয়ের হার ৪৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ। এ ক্ষেত্রেও সারাদেশের মধ্যে সিলেটের অবস্থান ভালো। সিলেটে এ ধরনের বিয়ের ঘটনা মাত্র ১৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ। 

বিবিএস মনে করে, বাল্যবিয়ের আকস্মিক বাড়ার কারণ আর্থিক বিপন্নতা ও সামাজিক নিরাপত্তার অভাব। সংস্থার প্রকল্প পরিচালক আলমগীর হোসেন জানান, যে লক্ষ্যে জরিপ, সে-সংক্রান্ত তথ্যই সাধারণত সংগ্রহ করে থাকেন তারা। তাই জরিপ থেকে বাল্যবিয়ের কারণ খোঁজা হয়নি। তবে মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহে তারা যেসব কারণ জানতে পেরেছেন, তার মধ্যে অন্যতম বাবা-মায়ের চোখে সামাজিক নিরাপত্তার অভাব, দারিদ্র্য ও সচেতনতার অভাব ইত্যাদি। বয়স লুকিয়ে আদালতের মাধ্যমে বিয়ের ঘটনাও বাড়ছে। বিয়ে অনুষ্ঠানের ব্যয় এবং ঝামেলা এড়াতে বাবা-মা এতে সহযোগিতা করছেন। বিবিএসের কাছে মেয়েদের বয়সের তথ্য থাকায় তারা বিষয়টি শনাক্ত করতে পেরেছে। এ ছাড়া করোনা অতিমারির অভিঘাতও বাল্যবিয়ের কারণ হতে পারে। ওই সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। ভবিষ্যৎ নিয়ে হতাশা ছিল বাবা-মায়ের মধ্যে।


সর্বশেষ সংবাদ