বিএনপির রাজনীতি থেকেই বিদায় নিতে চাই: মেজর হাফিজ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৮ নভেম্বর ২০২৩, ০১:০৪ PM , আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২৩, ০১:১১ PM
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আমি শারীরিক কারণে শিগগির রাজনীতি থেকে অবসর নেব। ৩১ বছর বিএনপির রাজনীতি করেছি, এই দলেই থাকার চেষ্টা করবো। এই দলের সদস্য হিসেবেই রাজনীতি থেকে বিদায় নিতে চাই। বুধবার (৮ নভেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপির সকল ত্যাগি নেতার প্রতি অভিনন্দন জানিয়ে মেজর (অব.) হাফিজ বলেন, তারা রাজপথে যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছেন। সস্ত্র প্রতিরোধের মুখে নিরস্ত্র বাহিনী কতটুকু করতে পারে? তবুও তাদের অনেকে জীবন দিয়ে গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখার চেষ্টা করেছেন তাদেরও ধন্যবাদ জানাই। এসময় তিনি বেগম জিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং তার রোগ মুক্তি কামনা করেন।
মেজর (অব.) হাফিজ বলেন, দেশের শান্তি চাই। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে আহত হয়েছি। যশোর ক্যান্টনমেন্টে আমি একমাত্র বিদ্রোহী অফিসার ছিলাম। এই দেশে মুক্তিযুদ্ধের নায়করা প্রদীপের পেছনে চলে গেছে। তাদেরকে দেশের লোক জানতে পারেনি। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ছিল সাধারণ মানুষের যুদ্ধ। সেখানে গ্রামেগঞ্জে নাম না জানা সৈনিকেরা জীবন দিয়ে এই দেশকে প্রতিষ্ঠিত করে গেছে। সুতরাং এই দেশ জ্বালাও পোড়াও দিয়ে শেষ হয়ে যেতে পারে না।
হাফিজ উদ্দিন বলেন, জিয়াউর রহমানের আদর্শ থেকে দূরে সরে যাওয়ার কারণে বিএনপি ক্ষমতার বাহিরে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। বিএনপিতে সত্যি কথা বলার মতো লোক, বিশেষ করে দলের চেয়ারপারসনের সামনে সত্যি কথা বলার মতো লোক আমার চোখে পড়েনি। অনেক আগে সাইফুর রহমান সাহেব বলতেন। তিনি বিএনপির একজন ত্যাগী নেতা। তাকে দুই-চার বার সত্যি কথা বলতে দেখেছি। এ ছাড়া কোনো নেতা ইয়েস স্যার, রাইট স্যার বলা ছাড়া আর কোনো কিছু জানেন না।
আরও পড়ুন: বিএনপির আগুন-সন্ত্রাস দমনে ছাত্রলীগই যথেষ্ট: মাহি
তিনি বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে আমাদের (বিএনপি) অংশগ্রহণ করা উচিত ছিল। তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের নেত্রীকে (খালেদা জিয়া) আহ্বান জানিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য মন্ত্রণালয় দেওয়ার জন্য। কারণ, তখন আওয়ামী লীগের অত্যন্ত লেজেগোবরে অবস্থা ছিল। কখন এমন ধরনের আহ্বান জানায়? যখন অবস্থা লেজেগোবরে থাকে। এখন কি এমন আহ্বান জানায়? কিন্তু আমরা তখন সেই অবস্থার ফায়দা নিতে পারিনি। এর ফলে আমরা সেই যে রাজপথে গিয়েছি এখনও সেখানেই আছি।
হাফিজ উদ্দিন আরও বলেন, আগামী যে নির্বাচন হতে যাচ্ছে। এই নির্বাচনে শারীরিক অসুস্থতার কারণে আমার পক্ষে অংশগ্রহণ করা সম্ভব না। আমি আমার নির্বাচনী এলাকার জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করে নিজের শারীরিক অবস্থা জানিয়ে রাজনীতি থেকে বিদায় নেওয়ার চেষ্টা করব। তবে আমি মনে করি, বিএনপির এই নির্বাচনে যাওয়া উচিত। দলটিতে অসংখ্য ত্যাগী নেতাকর্মী রয়েছে।
তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কা খারাপ হয়ে আবার সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা সামাল দিতে পারবো কিনা জানি না। এই দেশের অবস্থা যদি আরও খারাপ হয়, এজন্য প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল যারা ক্ষমতায় ছিল তারাই দায়ী থাকবে। আমাকেও দায়ভার নিতে হবে, যেহেতু সরকারের মন্ত্রী ছিলাম। চেষ্টা করেছি, কোনো দুর্নীতিতে জড়ায়নি। আমার বিরোদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নেই।
তিনি আরও বলেন, এখন যে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়। আমি প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করবো সামনে আমাদের কঠিন দিন। বৈদেশিক রিজার্ভ ধীরে ধীরে তলানিতে যাচ্ছে। যারা এই বেগম পাড়া বানিয়েছে, বিদেশে টাকা পাচার করেছে, অধিকাংশ আওয়ামী লীগের বা অন্যান্য ক্ষমতাসীন দলের। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আমলাদের সংখ্যায় নাকি বেশি বেগম পাড়ায়। অন্তত তাদের অর্থকড়ি ফিরিয়ে আনেন। চিঠি দিলে বিদেশি সরকাররা এ অর্থ ফেরত পাঠাবে। সুইচ ব্যাংকে কে কে টাকা রেখেছে বাংলাদেশ সরকার তো কোনোদিন জানতেও চায় নাই। দেখা যাবে প্রধান প্রধান রাজনৈতিকদলের নেতারা সেখানে টাকা জমা রেখেছে।