‘মানসম্মত শিক্ষা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে গণমাধ্যম’

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলী
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলী  © টিডিসি ফটো

বর্তমানে আমাদের শিক্ষায় অংশগ্রহণ বেড়েছে। এখন আমাদের শিক্ষার গুণগত মান বাড়াতে কাজ করতে হবে। আমাদের যুবদের দক্ষতা এবং যোগ্যতা বাড়াতে হবে এবং একই সাথে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতে আমাদের একসাথে কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে শিক্ষায় সামগ্রিক স্বচ্ছতা আনতে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলী।

মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) ‘মানসম্মত শিক্ষা অর্জনে সচেতনতা এবং সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহি বৃদ্ধিতে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভা প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মতবিনিময় সভায় দেশের প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে পরিচালিত সংস্থাটির জরিপের ফলাফল তুলে ধরে তার ওপর গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের মতামত গ্রহণ করা হয়। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন সুশাসন অধিকার ও ন্যায্যতা কর্মসূচির উপ-পরিচালক কানিজ ফাতেমা, যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংস্থা স্ট্রিট চাইল্ডের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক ইমতিয়াজ হৃদয় এবং এ প্রকল্পের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক লিপি আমেনা। 

এসময় মহসিন আলী আরও বলেন, আমাদের যার যার দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা। তবে কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আমাদের সম্মিলিতভাবে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখতে হবে। একজন সাংবাদিক হিসেবে জনগণের কাছে সামাজিক ইস্যুগুলো তুলে ধরতে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেক্ষেত্রে এ প্রকল্পের শিখন পদ্ধতির জরিপের সুপারিশমালা সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্লাটফর্মে তুলে ধরার আহ্বানও জানান তিনি।

আলোচনায় নাগরিক সম্পৃক্ততা ও বিভিন্ন উদ্যোগ এবং শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিতকরণে উন্নত প্রশিক্ষণ, শিক্ষার্থীদের পঠন ও গাণিতিক শিখন যাচাই ও মূল্যায়ন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে, শিখন পদ্ধতির এই মূল্যায়ন জরিপের ফলাফল ও সংশ্লিষ্ট সুপারিশ সরকারের কাছে তুলে ধরে সমাধান করার জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে সকলের একত্রিত হয়ে কাজ করার মতো বিষয়গুলো জোরালোভাবে উঠে এসেছে।

জরিপের ফলাফল তুলে ধরে মতবিনিময় সভায় জানানো হয়েছে, শিক্ষাক্রমের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ মূল্যায়ন। জাতীয় প্রয়োজন এবং পরিবর্তিত বিশ্বব্যবস্থার সঙ্গে খাপ খাইয়ে সময়ের ব্যবধানে শিক্ষাক্রমে এই অংশ পরিমার্জিত হয়। শিক্ষাক্রমের উদ্দেশ্য সফল হচ্ছে কি-না বা শিক্ষার্থীর মধ্যে সেই কাঙ্ক্ষিত যোগ্যতা ও দক্ষতা তৈরি হচ্ছে কিনা তা যাচাই করা হয় সঠিক মূল্যায়নের মাধ্যমে। আর এটি নিশ্চিত করা হয় শিক্ষা কার্যক্রমের বিভিন্ন ধাপে, যাতে শিক্ষার্থীর যোগ্যতা ও দক্ষতা সঠিকভাবে নিরূপণ করা যায়।

নাগরিক সম্পৃক্ততা ও বিভিন্ন উদ্যোগ এবং শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিতকরণে উন্নত প্রশিক্ষণ, শিক্ষার্থীদের পঠন ও গাণিতিক শিখন যাচাই ও মূল্যায়ন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে, শিখন পদ্ধতির এই মূল্যায়ন জরিপের ফলাফল ও সংশ্লিষ্ট সুপারিশ সরকারের কাছে তুলে ধরে সমাধান প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার প্রস্তাবও জানানো হয়েছে ওই মতবিনিময় সভায়।

সভায় প্রকল্পের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক লিপি আমেনা শিক্ষায় চলমান সমস্যা সমাধানে মোট ১০টি সুপারিশ জানান। এর মধ্যে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি এবং বরাদ্দকৃত অর্থের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমতাভিত্তিক গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করা, শিক্ষকদের ক্লাসে নিয়মিতকরণে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা এবং শিক্ষার গুণগত মান অর্জনে শ্রেণির পাঠদান শ্রেণিতেই সম্পন্ন করার মতো বিষয়গুলোতে জোর দেন তিনি।

প্রসঙ্গত, বেসরকারি নাগরিক সমাজের সংগঠন ওয়েভ ফাউন্ডেশন বহুমুখী কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় উন্নয়ন সহযোগী স্ট্রিট চাইল্ডের আর্থিক সহযোগিতায় বিগত ২০২১ সাল থেকে ‘দ্য সাউথ এশিয়ান অ্যাসেসমেন্ট অ্যালায়েন্স: কমিউনিকেটিং এন্ড কোলাবোরেটিং ফর চেঞ্জ’ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য নাগরিক উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের পঠন ও শিখন যাচাই এবং মূল্যায়ন করা। 


সর্বশেষ সংবাদ