পশুর যে চারটি ত্রুটি থাকলে কোরবানি হয় না

পশুর যে চারটি ত্রুটি থাকলে কোরবানি হয় না
পশুর যে চারটি ত্রুটি থাকলে কোরবানি হয় না  © সংগৃহীত

আসছে কোরবানির ঈদ। এ দিন মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে কোরবানি দিবেন মুসলমানরা। তবে কোরবানি দেবার কিছু নিয়ম আছে। কোরবানির পশু হৃষ্টপুষ্ট হওয়া উত্তম। চাইলেই যে কোনো পশু বা যে কোনো বয়সের পশু কোরবানি দেয়া যায় না। কোরবানি জায়েজ হওয়ার জন্য মৌলিকভাবে পশু চারটি মারাত্মক ত্রুটি থেকে মুক্ত হতে হবে। তা হলো—ক. গুরুতর অন্ধত্ব, খ. গুরুতর অসুস্থতা, গ. খোঁড়া হওয়া, ঘ. গুরুতর স্বাস্থ্যহানি ও অঙ্গহানি ঘটা। (আল-ফিকহুল ইসলামী ওয়া আদিল্লাতুহু, কোরবানি অধ্যায়, দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ)

জিলহজ মাসের দশম দিন ঈদের নামাজ পড়ার পর থেকে জিলহজের বারো তারিখ সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত কোরবানি করা যাবে। তবে ঈদের নামাজের পূর্বে কোরবানি করা যাবে না। ঈদের নামাজ পড়ে এসে কোরবানি করতে হবে।

কোরবানির জন্তু—উট, গরু, মহিষ, দুম্বা, ভেড়া ও ছাগল দ্বারা কোরবানি করা জায়েজ। অন্য জন্তু দ্বারা কোরবানি নাজায়েজ। ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা কমপক্ষে এক বছর পূর্ণ হতে হবে, গরু-মহিষ দুই বছর পূর্ণ হতে হবে, উট পাঁচ বছর পূর্ণ হতে হবে। (হিদায়া, খ-৪, পৃ. ১০৩)

একইসঙ্গে পশুতে এমন কিছু দোষ-ত্রুটি আছে, যার কারণে কোরবানি বাতিলও হয়ে যেতে পারে। এজন্য পশু কেনার আগেই বিষয়গুলো সবার জানা থাকা দরকার। কী কী ত্রুটি থাকলে কোরবানি সহি হবে না, সংক্ষেপে তা তুলে ধরা হলো—

* যদি কোরবানির পশু এমন শুকনো ও দুর্বল হয়, যা জবাইয়ের স্থান পর্যন্ত হেঁটে যেতে পারে না, তা দ্বারা কোরবানি করা সহি হবে না।
* শ্রবণশক্তি না থাকা। 
* খোড়া পশু দ্বারাও কোরবানি জায়েজ হবে না। যে পশু তিন পায়ে চলে, এক পা মাটিতে রাখতে পারে না বা ভর করতে পারে না, কোরবানিতে এমন পশু জবাই করা যাবে না  
* লেজের বেশির ভাগ কাটা। 
* দাঁতহীন বা এত বেশি দাঁত পড়ে গেছে যে, ঘাস বা খাদ্য চিবাতে পারে না- এমন পশু দ্বারাও কোরবানি সহি নয়।
* কানের বেশির ভাগ কাটা। 
* যে পশুর শিং একেবারে গোড়া থেকে ভেঙ্গে গেছে এবং এ কারণে মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে- এমন পশু দ্বারাও কোরবানি সহি হবে না। বিপরীতে যদি পশুর শিং অর্ধেক বা কিছু শিং ফেটে বা ভেঙ্গে যায় বা শিং একেবারে উঠেইনি সে পশুতে কোরবানি জায়েজ।
* পাগল হওয়ার কারণে ঘাস-পানি ঠিকমতো না খাওয়া ।

আরও পড়ুন: অল্প তেলে রান্না করুন গরুর গোশত, সঙ্গে দিতে পারেন সবজি

* যদি পশুর দুটি চোখই অন্ধ কিংবা এক চোখ পুরো নষ্ট অথবা এক চোখের দৃষ্টিশক্তি এক-তৃতীয়াংশ বা তারও অধিক নষ্ট হয়ে যায় সে পশু কোরবানি জায়েজ হবে না।
* রোগের কারণে স্তনের দুধ শুকিয়ে যাওয়া। 
* গরু বা মহিষের চারটি দুধের যেকোনো দুটি কাটা। 
* যে পশুর গায়ে বা কাঁধে দাদ বা খুজলি হয়েছে তা দ্বারা কোরবানি করা জায়েজ। কিন্তু ঘা যদি গোশত পর্যন্ত পৌঁছে যায় এবং তার কারণে পশুর স্বাস্থ্যহানি ঘটে তাহলে এরূপ পশু দ্বারা কোরবানি করা জায়েজ নেই। (হেদায়া : ৪/৪৩২)

মোটকথা, কোরবানির পশু বড় ধরনের দোষ-ত্রুটি থেকে মুক্ত হবে। হাদিসে এসেছে, ‘চার ধরনের পশু দিয়ে কোরবানি হবে না। অন্ধ, যার অন্ধত্ব স্পষ্ট; রোগাক্রান্ত, যার রোগ স্পষ্ট; পঙ্গু, যার পঙ্গুত্ব স্পষ্ট ও আহত, যার কোনো অঙ্গ ভেঙে গেছে।’ ( ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩১৪৪) আল্লাহ সবাইকে কোরবানির জন্য উত্তম পশু নির্বাচনের তাওফিক দিন। আমিন।


সর্বশেষ সংবাদ