হিটস্ট্রোকে মারা গেল আড়াই কোটি টাকার মাছ!

  © সংগৃহীত

অতিরিক্ত গরমে নদীতে স্থাপিত খাঁচাগুলোতে গ্যাস জমে অক্সিজেন কমে যাওয়ায় হিটস্ট্রোকে মাছ মারা গেছে বলে জানিয়েছে মৎস্য বিভাগ। পাবনার বড়াল নদীতে স্থাপন করা ফরিদপুর উপজেলার ১৭ জন চাষির ৪৮৪টি খাঁচার সব মাছ মারা গেছে। মাছ চাষিরা জানিয়েছেন, গত এক সপ্তাহে মাছ মারা যাওয়ায় তাদের প্রায় ২ কোটি ৬১ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।  

বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) পর্যন্ত তাদের সব খাঁচার সব মাছ মরে গেছে। ৪৮৪টি খাঁচার মাছ মারা যাওয়ায় বড়াল নদীর এক বিশাল এলাকা জুড়ে পানিও ফেনাযুক্ত দুর্গন্ধ হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত মাছচাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ২১ এপ্রিল থেকে হঠাৎ করে খাঁচার মাছ মারা যেতে থাকে। স্থানীয় বাজার থেকে অক্সিজেনসহ প্রয়োজনীয় ওষুধ কিনে ব্যবহার করেও মড়ক ঠেকাতে পারেননি মাছচাষিরা।        

জানা গেছে, ফরিদপুর উপজেলার পুঙ্গলী ইউনিয়নের আগপুঙ্গলী এবং দত্তপুঙ্গলী গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস, ফরিদ মাষ্টার, সুকুমার হলদার, বিউল ইসলাম, রকিবুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর হোসেন, দত্তপুঙ্গলী গ্রামের কবির হোসেন, কামরুল হোসেনসহ ১৭ জন মাছচাষি বড়াল নদীতে গত প্রায় ৭-৮ বছর ধরে তারা খাঁচায় মনোসেক্স তেলাপিয়া মাছ চাষ করে আসছেন।

খাঁচায় মাছচাষ সমিতির সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস বলেন, প্রায় ৭-৮ বছর ধরে এভাবে মাছচাষ করে আসছি। তবে এত বড় সর্বনাশ হয়নি। আমরা ১৭ জন মাছচাষি সবাই ফরিদপুর বাজার থেকে বাকিতে ওষুধসহ খাবার নিয়ে থাকি। এতে জনপ্রতি ৩ থেকে ৫ লাখ টাকা দেনা রয়েছে। এখন এ দেনা পরিশোধ করা কঠিন হবে।

সমিতির সম্পাদক কবির হোসেন বলেন, প্রতি খাঁচায় ৮ থেকে ১০ মণ মাছ পাওয়া যায়। এ হিসাবে ৪৮৪টি খাঁচার প্রতিটি থেকে গড়ে ৯ মণ করে ধরলে ৪৩৫৬ মণ মাছ পাওয়া যেত। প্রতি মণ মাছের স্থানীয় বাজার মূল্য ৬ হাজার টাকা করে মোট মূল্য হবে প্রায় ২ কোটি ৬১ লাখ ৩৬ হাজার টাকা।

পাবনার ফরিদপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল মতিন জানান, এ পদ্ধতিতে মাছচাষ করতে পানি প্রবাহমান থাকতে হয়। বেশ কিছুদিন পানি বদ্ধ থাকায় এবং অতিরিক্ত গরমে খাঁচাগুলোতে প্রচুর গ্যাস হয়ে অক্সিজেন কমে গিয়েছিল। ফলে হিটস্ট্রোকে মাছগুলো মারা গেছে। এতে মাছ চাষিদের অনেক আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ