পাঁচ বছর পরিবারের সন্ধানে ঢাকায় ব্রিটিশ তরুণ, ফিরলেন খালি হাতে

রাইয়ান কুদ্দুস
রাইয়ান কুদ্দুস  © সংগৃহীত

১৯৫৫ সালে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান ময়মনসিংহের আবদুল কুদ্দুস। সেখানেই শ্বেতাঙ্গ ব্রিটিশ তরুণী আরলেইনকে বিয়ে করে পরিবার গড়েন। এরপর আর বাংলাদেশে ফেরা হয়নি তার। ২০১৭ সালে ৮৪ বছর বয়সে বার্মিংহামে মারা যান আবদুল কুদ্দুস।

জীবদ্দশায় পড়ালেখা ও জন্মস্থান ছাড়া বাংলাদেশ জীবন কিংবা পরিবার সম্পর্কে তেমন কিছুই নিজের স্ত্রী–সন্তানদের না জানালেও নিজের শেকড়ের খোঁজে বাংলাদেশে এসেছিলেন ২৩ বছর বয়সী ব্রিটিশ তরুণ রাইয়ান কুদ্দুস। দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টার পরও অবশেষে খালি হাতে ফিরে গেছেন।

আবদুল কুদ্দুস দম্পতির দুই সন্তান—মার্ক ও থাইরোন। রাইয়ান কুদ্দুস থাইরোনের ছেলে। রাইয়ান জানান, বাংলাদেশে তার পরিবার সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি সব সময় তা এড়িয়ে যেতেন। রাইয়ানের দাবি, তাঁর দাদা ১৯৫৩ সালে লন্ডনে আসার পর আর কখনো বাংলাদেশে যাননি।

আবদুল কুদ্দুসের জন্ম ১৯৩৩ সালের ৬ জানুয়ারি। কুদ্দুসের শৈশব কেটেছে ময়মনসিংহে। কুদ্দুসের জন্মের আগে তাঁর বাবা মারা যান। আর মায়ের মৃত্যু হয় তাঁর জন্মের দুই বছর পর। তাঁদের পারিবারিক উপাধি ছিল খন্দকার।

২০১৭ সালে আবদুল কুদ্দুসের মৃত্যুর পর রাইয়ান বাংলাদেশে তার দাদার বংশধরদের খুঁজে বের করতে উদ্যোগী হন।রাইয়ান মনে করেন, তার দাদার বংশের অনেকেই বাংলাদেশে আছেন এবং এই পরিবারের নিশ্চয়ই কোনো ইতিহাস আছে।

তাই দাদার বংশকে খুঁজে বের করতে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশে আসেন রাইয়ান। এই সময় তিনি ঢাকায় তিন সপ্তাহ অবস্থান করেন। প্রথমে তিনি তেজগাঁওয়ে বিমানবাহিনীর সদর দপ্তরে যান। কিন্তু সেখানে রাইয়ানকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি।

এরপর তিনি যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে আবদুল কুদ্দুস সম্পর্কে জানতে চাইলে রেজিস্ট্রার অফিস থেকে একটি ই–মেইল ঠিকানা দিয়ে সে ঠিকানায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর্কাইভে আবেদন করার পরামর্শ দেওয়া হয়। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবদুল কুদ্দুসের অধ্যয়নকালীন যেকোনো নথি খুঁজে বের করার অনুরোধ জানিয়ে ২০২০ সালের ৭ জানুয়ারি ই–মেইল করেন। কিন্তু ৩ বছর পেরিয়ে গেলেও সেই ই–মেইলের কোনো উত্তর পাননি রাইয়ান।

কোনোভাবেই দাদা আবদুল কুদ্দুস বা তার পরিবারের খোঁজ না পেয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে ভিডিও শেয়ার করে সাহায্যের আকুতি জানিয়েছেন রাইয়ান। এছাড়া শিকড়ের খোঁজে রেডিও জকি (আরজে) কিবরিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন, যদি তিনি কোনো সাহায্য করতে পারেন।


সর্বশেষ সংবাদ