রেলের দৈনিক মজুরিতে অর্থ বরাদ্দ বন্ধ, সভা আহ্বান

রেল মন্ত্রনালয়
রেল মন্ত্রনালয়  © টিডিসি ফটো

দীর্ঘদিন ধরে কর্মী সংকট রেলওয়েতে। নতুন নিয়োগ না দিয়ে শূন্য পদে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে লোক নিয়োগ দিয়ে কাজ চালিয়ে আসছে সংস্থাটি। এ কাজে আর টাকা দিতে রাজি নয় অর্থ মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় বলছে, স্থায়ীভাবে লোক নিয়োগের আগে ঠিকাদারের মাধ্যমে ঠেকা কাজ চালাতে কিন্তু রেল এত রাজি নয়। 

এ পরিস্থিতিতে স্থায়ীভাবে অনুমোদিত লোকবল নিয়োগের আগপর্যন্ত দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে নিয়োগপ্রথা চালু রাখার পক্ষে রেলওয়ে। আজ মঙ্গলবার এ বিষয়ে আলোচনার জন্য রেল ভবনে বৈঠক ডেকেছে কর্তৃপক্ষ। রেলের মহাপরিচালক ডি এন মজুমদারের নেতৃত্বে বৈঠকে শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।

জানা যায়, অনুমোদিত জনবলের চেয়ে ৪৮ শতাংশ কম কর্মী নিয়ে চলছে রেলওয়ে। রেলে বর্তমানে অনুমোদিত জনবলের সংখ্যা ৪৭ হাজার ৬৩৭। তবে কর্মরত ২৪ হাজার ৯৩৩ জন। লোকবলের ঘাটতি ২২ হাজার ৭০৪ জন। অর্থাৎ শূন্যপদের সংখ্যা ৪৮ শতাংশ। রেলে জনবল বৃদ্ধির অনুমোদন থাকলেও মামলা-মোকদ্দমা ও দুর্নীতির কারণে সময়মতো লোকবল নিয়োগ দিতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। ফলে স্টেশনমাস্টার, সহকারী মাস্টার, ট্রেন ও রেলপথ রক্ষণাবেক্ষণের লোকবলের সংকট আছে। এ জন্য রেলওয়ে থেকে অবসরে যাওয়া কর্মী, দীর্ঘদিন ধরে রেলে নানাভাবে যুক্ত ব্যক্তিদের দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে নিয়োগ দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে।

আরও পড়ুন: ফেসবুক আইডি ও পাসওয়ার্ড চুরি করছে যেই অ্যাপগুলো

রেলের হিসাবে, দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে বর্তমানে ৪ হাজার ২৯৬ জনের মতো কর্মী কাজ করছেন। তাঁদের প্রত্যেকের দৈনিক মজুরি সর্বনিম্ন ৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ৫৭৫ টাকা। দৈনিক মজুরি খাতে গত অর্থবছরের মে মাস পর্যন্ত ৬০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। আগামী অর্থবছরে এর জন্য ৮০ কোটি টাকার মতো প্রয়োজন হবে। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় গত জুলাই থেকে এ খাতে বরাদ্দ বন্ধ করে দিয়েছে।

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা যাঁদের দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে নিয়োগ দিয়ে থাকে, তাঁদের প্রায় সবাই সংশ্লিষ্ট কাজে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। ঠিকাদারের মাধ্যমে এ ধরনের অভিজ্ঞ ও কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন লোক পাওয়া যাবে না। এতে রেল চলাচল বাধাগ্রস্ত হবে। গত জুনে রেলপথ মন্ত্রণালয় এই বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়কে চিঠিও দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে অর্থ মন্ত্রণালয় আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে লোক নিয়োগ অব্যাহত রাখার অনুমতি দিয়েছে।

রেলের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আইনি জটিলতার কারণে সময়মতো সব নিয়োগ দেওয়া সম্ভব নয়। ঠিকাদারের মাধ্যমে নিয়োগ দিলে আরেকটি মধ্যস্বত্বভোগী গোষ্ঠীর জন্ম হবে। ইতিমধ্যে কিছু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রেলের এই কাজ পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে। রেল পরিচালনার মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে ঠিকাদারের ওপর নির্ভর করা খুব কঠিন।

রেলের হিসাবে, দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে বর্তমানে ৪ হাজার ২৯৬ জনের মতো কর্মী কাজ করছেন। তাঁদের প্রত্যেকের দৈনিক মজুরি সর্বনিম্ন ৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ৫৭৫ টাকা। দৈনিক মজুরি খাতে গত অর্থবছরের মে মাস পর্যন্ত ৬০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। আগামী অর্থবছরে এর জন্য ৮০ কোটি টাকার মতো প্রয়োজন হবে। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় গত জুলাই থেকে এ খাতে বরাদ্দ বন্ধ করে দিয়েছে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, ২০১৮ সালে দৈনিক মজুরির পরিবর্তে ঠিকাদারের মাধ্যমে লোক নিয়োগের নীতিমালা তৈরি করা হয়। এরপর সব সরকারি দপ্তরকে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে লোক নিয়োগ বন্ধ করার নির্দেশনা দেয়। এবার বাজেটে এই খাতে বরাদ্দই বন্ধ করে দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে রেলের মহাপরিচালক ডি এন মজুমদার বলেন, রেলওয়ে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে নিয়োগ দিয়ে যেসব কাজ পরিচালনা করে, এর সবই কারিগরি–সংশ্লিষ্ট। এ জন্য দক্ষ লোক দরকার। আউটসোর্সিংয়ে সেটা পাওয়া যাবে না বলেই তাঁদের মনে হয়। এ জন্যই দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে নিয়োগের প্রক্রিয়া চালু রাখার বিষয়ে চেষ্টা চলছে। গত জুনে রেলপথ মন্ত্রণালয় এই বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়কে চিঠিও দেয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে অর্থ মন্ত্রণালয় আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে লোক নিয়োগ অব্যাহত রাখার অনুমতি দিয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ