তারা এবার উল্টো খেলা খেললো: মাশরাফি

ঘটনাস্থল পরিদর্শনে মাশরাফি
ঘটনাস্থল পরিদর্শনে মাশরাফি   © সংগৃহীত

সম্প্রতি নড়াইলে ঘটে গেছে ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা।  ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই আসনের সাংসদ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা দ্রুত ঘটনাস্থলে গেছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এই ঘটনা নিয়ে তিনি তার ফেসবুক আইডিতে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। 

মাশরাফির ফেসবুক স্ট্যাটাস হুবহু তুলে দেওয়া হলো :

একটু বোঝার চেষ্টা করছি, আর কত দিক থেকে আক্রমণ হতে পারে। প্রথম আক্রমণের কথা হয়তো সবাই ভুলে গেছেন, তাই মনে করিয়ে দিচ্ছি । তারা প্রথম ঝামেলা করল মাওলানা মামুনুল হককে নিয়ে। তাকে যখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিষেধাজ্ঞা দিল, ঠিক সেই সময় তাকে ওয়াজ করার জন্য নড়াইলে আমন্ত্রণ জানানো হলো। নিয়ম অনুযায়ী, যখন ওয়াজ মাহফিল হয়, সেটার পারমিশন দিয়ে থাকে জেলা প্রশাসন, নিরাপত্তার ব্যাপার দেখেন পুলিশ প্রশাসন। অনুমতি দেওয়া বা না দেওয়া অথবা নিরাপত্তার বিষয়ে সংসদ সদস্যের এখানে কোনো দায়িত্ব নাই। 

জেলা প্রশাসন বা পুলিশ প্রশাসন বা আয়োজকদের পক্ষ থেকে থেকে আমাকে বিন্দুমাত্র না জানিয়ে ওয়াজ মাহফিল দেওয়া হলো নোয়াগ্রামে, যেখানে আমার শ্বশুর বাড়ি। বক্তাকে আগেই বলা হলো যে ওয়াজ মাহফিলের অনুমতি নেওয়া আছে, আপনি চলে আসেন। অথচ কালনা ঘাট পর্যন্ত আনার পর তবেই কেবল জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে জানানো হলো। ঘাট থেকে যখন ওনাকে বলা হলো যে, ‘আপনার চিঠি কোথায়?’ তিনি দিতে পারলেন না। মাহফিল কর্তৃপক্ষ তখন আমাকে ফোন করে বলল, ‘আপনি এই সমস্যা ঠিক করেন।’ কথা হলো, তখন এই সমস্যার সমাধান করা কিভাবে সম্ভব? এটা তো পুরোটাই একটা প্রক্রিয়া, যা আরও সাত দিন আগে থেকে করতে হয়!

তখন ওই লোকগুলো বলা শুরু করে দিল, আমি নাকি ওয়াজ মাহফিল হতে দিচ্ছি না। পুরো খেলাটা খেলেছে এমন ভাবে, তাকে আমার নির্বাচনী এলাকায়- আমার শ্বশুরবাড়ি এলাকায় এনে সরকারের কাছে প্রমাণ করতে চেয়েছে যে, আমি মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মানছি না। আর যদি না আসতে পারে, তাহলে প্রচার করা হবে যে, মাশরাফী ওয়াজ করতে দেয় না। দুই দিক থেকেই তাদের জয়। আর দুই পক্ষের কাছেই আমাকে খারাপ বানাবে।

আরও পড়ুন: পদের বিনিময়ে শারীরিক সর্ম্পকের প্রস্তাব ছাত্রলীগ সভাপতি-সম্পাদকের

তবে যাই হোক, আল্লাহ মালিক, সত্য আর চাপা থাকে নি। সবাই কম-বেশি জেনেছে সত্যিটা, আর যারা জানে না,তারা ভুল বুঝেই আছেন।

এবার উল্টো খেলা খেলল তারা। সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষদের উপর আক্রমণ করে তাদেরকে বিপদে ফেলা, পাশাপাশি আমাকেও বিপদে ঠেলে দেওয়া।

এমনকি, কিছুদিন আগে কালিয়ার মির্জাপুরে সম্মানিত একজন শিক্ষককে অপমানের ঘটনায়ও আমাকে জড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে, অথচ ওটা আমার নির্বাচনী আসনের ভেতরই নয়।

যাক, আপনারা সব তো করলেন। এবার আপনাদের কাছে একটা অনুরোধ, পেছন থেকে আঘাত করতে করতে আপনারা ক্লান্ত হয়ে যাবেন। তো আসুন, সামনে থেকে আঘাত করুন। আমার সঙ্গে সরাসরি লড়াই করুন। আমি সাধুবাদ জানাব।

কিন্তু আমাকে ভোগানোর জন্য দয়া করে সাধারণ ও অসহায় মানুষদের আর ক্ষতি করবেন না। মানুষকে শান্তিতে থাকতে দিন, লড়াই আমার সঙ্গে করুন।

আমি জানি, নড়াইলে রাজনীতি যাদের কাছে পেশা, তাদের কাছে আমি এখন নেশা। 


সর্বশেষ সংবাদ