করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা

  © টিডিসি ফটো

গোটা বিশ্বে করোনা টিকা নিয়ে হুলুস্থুল। কোন কোম্পানি, কোন দেশ আগে সরবারহ করতে পারবে সেসবের ভাবনা তো রয়েছেই। পাশাপাশি রয়েছে জনজীবনে টিকা নেওয়া সদিচ্ছা-অনিচ্ছারও প্রভাব। এদিকে দেশে গেলো ২৭ জানুয়ারি (বুধবার) করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া শুরু হয়। রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালের একজন নার্সকে প্রথম টিকা দেওয়ার মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে টিকাদান কর্মসূচির কাজ শুরু হয়।

যার ফলশ্রুতিতে গোটা দেশে টিকা সরবারহ শুরু হয়েছে। তবে টিকা নিয়ে তরুণদের মধ্যে রয়েছে নানা মত। কেউ টিকা নিতে উদগ্রীব আবার কেউ অনিচ্ছা-অনাগ্রহে মুখ লুকিয়ে রাখছে। এসব নিয়ে দেশের বিভিন্ন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে তাদের মতামত তুলে ধরেছেন শিক্ষার্থী সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী— মামুন সোহাগ

রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা এম.কে হাসান সবুজ বলেন, করোনা একটি বৈশ্বিক মহামারী। তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধি হিসেবে আমার আহবান থাকবে। বেশি বেশি হাত ধোন, পরিষ্কার থাকুন, নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন। নিজে ভ্যাকসিন নিন, অন্যকে ভ্যাকসিন নিতে উৎসাহিত করুন। নিজের অবস্থান থেকে ভ্যাকসিন সংক্রান্ত যেকোন গুজব রুখে দিন। ভ্যাকসিন সংক্রান্ত সঠিক তথ্য যানুন, সঠিক তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করুন। শেখ হাসিনা সরকার, স্বাস্থ্যবান্ধব সরকার।

শুভ্রা চৌধুরী নামে অনার্স পড়ুয়া আরেক শিক্ষার্থী জানান, করোনা টিকা নিয়ে আসলে আমার ভাবনা নেগেটিভ। আসলে এটা কি আদৌ কার্যকরী আর এর ফলে কি সত্যি আমরা করোনাকে প্রতিরোধ করতে পারবো। আর এই সম্পর্কে আমাদের জনগন ঠিকমতো কোনো তথ্য ও প্রদান করতে পারতেছে না যেখানে আমরা ভরসা পাবো। তাই আগে এটা আসলে আমাদের জন্য কতটা কার্যকর হবে এর ফলে কি সত্যি সংক্রমন রোধ করা যাবে- সব তথ্য জনগন দিতে হবে। মানুষ এখন দেওয়ার চেয়ে শোনায় বেশি সচেতন।

আবিদ হাসান বলেন, বাংলাদেশের মতো একটি দেশ যেখানে বিশ্বের অনেক বড় বড় বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন যে, বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণের হার ভয়াবহ মাত্রায় পৌঁছাবে, তবে গত এক বছরের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা দেখলাম যে, বাংলাদেশ ওই সম্ভাবনাকে খুব শক্তভাবেই মোকাবেলা করতে পেরেছে।

তিনি বলেন, এর মধ্যে আমরা যেন একটা স্বস্তি খুঁজে পাই। তবে বিশ্বের বড় বড় দেশগুলোতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ বেশ প্রচন্ডভাবে আঘাত হেনেছে দিতে হয়েছে কয়েকধাপে লকডাউন। তাই বলা যায় অন্ধকার ঘরে আশার আলোর মতো যেন এই করোনার টিকা। এই টিকা নিয়ে অনেকের মাঝেই রয়েছে অনেক রকমের ভয়। তবে এটিকে ভয় না পেয়ে এর সুষ্ঠ বন্টন করাটাই হবে বড় চ্যালেঞ্জের।

সুমাইয়া আল ফাতিহা বলেন, তরুণ সমাজ চরম বিভ্রান্তিতে আছে। কিছু সংখ্যক তরুণ টিকা নেওয়ার পক্ষে এবং কিছু সংখ্যক টিকা নিতে ভয় পাচ্ছে। তরুণ সমাজের এই বিভ্রান্তি দূর করতে আমাদের সবার সঠিক তথ্য প্রকাশ করে এবং সঠিক তথ্য সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে। যাতে তরুণগণ স্বেচ্ছায় টিকা গ্রহণ করে।

ফাতিহা বলেন, করোনা নিয়ে দেশের তরুণ সমাজ চরম বিপাকে, না আছে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না আছে শিক্ষার সু-ব্যবস্থা। অদূর ভবিষ্যৎ কখন যে তারা পূর্বের ন্যায় শিক্ষার আলো দেখতে পারবে এবং কর্মসংস্থানের যেতে পারবে তাও অনিশ্চিত। এই অনিশ্চয়তার ফলে তারা নানা ধরনের অনৈতিক কাজেও জড়িয়ে পড়ছে।

জুলকার নাইন আলো জানান, ২০২০ গড়িয়ে এলো ২০২১ করোনার মহামারী দিনকে দিন ভয়ানক হচ্ছে রুপ বদলাচ্ছে ভাইরাসেরও। চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের অক্লান্ত পরিশ্রমে ধীরে ধীরে বাজারে আসছে করোনার টিকা। WHO-এর অনুমোদন না পেলেও অনেক দেশে চলছে টিকা দান কর্মসূচী। বাংলাদেশেও টিকাদান কর্মসূচী শুরু হয়েছে বিনাম্যুল্যে। কিন্তু মাথায় রাখতে হবে ১৬ কোটি মানুষকে টিকা দান কর্মসুচীর আওতায় আনতে হলে বেসরকারি সংস্থাকে দায়িত্ব দেয়া হলে ওষুধ প্রশানের কড়া নজরদারি আবশ্যক।

তেঁজগাও বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের নুসাইবা ইসলাম রিতি বলেন, দেশজুড়ে করোনা নামক এক আতঙ্ক বিরাজ করছে। এখন তার মধ্যেই বাংলাদেশে করোনার টিকা এসেছে। এতে করে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন অনেকেই। আবার ভয়েও আছেন অনেকে। কারণ এই টিকা থেকে পার্শপ্রতিক্রয়াও হতে পারে। দোটানায় থেকে অনেকে টিকা নিতেও প্রস্তুত নয়। স্বস্তির চেয়ে শঙ্কা, ভয়ই বেশি বিরাজ করছে আমাদের সবার মাঝে।


সর্বশেষ সংবাদ