দুর্ভিক্ষ মোকাবিলায় কতটা প্রস্তুত বাংলাদেশ

বাংলায় মোটা দাগে ৩টি দুর্ভিক্ষ হয়েছে
বাংলায় মোটা দাগে ৩টি দুর্ভিক্ষ হয়েছে  © ফাইল ছবি

২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট হতে পারে এটা মোটামুটি নিশ্চিত। FAO-এর মতে যে ৪৫টি দেশে দুর্ভিক্ষ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি তার মধ্যে বাংলাদেশ একটি। দুর্ভিক্ষ যদি এসেই যায়, তা মোকাবিলায় বাংলাদেশ ঠিক কতটা প্রস্তুত রয়েছে?

বাংলায় মোটা দাগে যে ৩টি দুর্ভিক্ষ হয়েছে, তা হলো- ১. ছিয়াত্তরের মন্বন্তর (১৭৭৬) ২. পঞ্চাশের মন্বন্তর (১৯৪৩) ৩. ৭৪ এর দুর্ভিক্ষ (১৯৭৪)।

৭৪-এর দুর্ভিক্ষের সময় বিশ্বব্যাপী খাদ্যসংকটের পাশাপাশি দেশে এর সাথে যোগ হয়েছিল প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এই চরম খাদ্যসংকটেও সরকার সে বছর ৭৩২ কোটি টাকার খাদ্যশস্য আমদানি করে। কিন্তু সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে এ দুর্যোগ মোকাবিলা করা সরকারের জন্য কঠিনই ছিলো। বেসরকারি হিসাব মতে, আনুমানিক ১ থেকে ৪.৫ লাখ মানুষ এ দুর্ভিক্ষে প্রাণ হারায়।

বাকি ২টা দুর্ভিক্ষের কারণ যতটা না প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও খাদ্যসংকট তার চেয়ে বেশি শাসক শ্রেণির অবহেলাই বলে অনেকে উল্লেখ করেছেন।

আরও পড়ুন: জয়নুল গ্রামের মানুষকে ভালোবেসে দুর্ভিক্ষের ছবি আঁকেন

বাংলায় যত দুর্ভিক্ষ হয়েছে, শাসক শ্রেণি কখনো মানুষকে সহযোগিতা করতে পারেনি বা সে ইচ্ছাটাই তাদের ছিলো না। এরা তো মানুষের জন্য রাজনীতি করে না, রাজনীতি করে ক্ষমতার জন্য, ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখার জন্য! দেশের মানুষকে এরা কখনো বুঝতেই চায়নি।

বর্তমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, করোনা পরবর্তী বাস্তবতা ও বিশ্বব্যাপী খাদ্যসংকটের যে আশংকা তাতে এবারের পরিস্থিতি আরো খারাপই হতে পারে। তার উপর যদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ যোগ হয়...!

খাদ্য সংকট মোকাবিলায় খাদ্য উৎপাদন ও মজুদের দিকে বাড়তি মনযোগ দেয়া প্রয়োজন। সরকার থেকে শুরু করে বিরোধী দল সবার উচিত এই সংকটে জনগণকে সাথে নিয়ে একযোগে কাজ করা। এখন থেকেই খাদ্য উৎপাদনে মনোযোগ দিলে পরের দিনগুলো সহজও হতে পারে। প্রত্যেক ইঞ্চি মাটিকে আবাদযোগ্য করতে হবে, আবাদ করতে হবে। একাজে জনগণকে সাথে নিয়েই আগাতে হবে। 

যে জাতি দেশের জন্য বুক চিতিয়ে লড়াই করতে পারে, তাদের জন্য খাদ্য সংকটের এ ‘যুদ্ধ’ মোকাবিলা করা কোন ব্যাপারই না। দরকার হলে আবারো বুক চিতিয়ে মাঠে নামুক দেশের ছাত্র-শ্রমিক-জনতা। তবে এবার ফসলের মাঠ হউক যুদ্ধক্ষেত্র।

লেখক: শিক্ষার্থী, তড়িৎকৌশল বিভাগ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়


সর্বশেষ সংবাদ