মেডিকেল ভর্তিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় উত্তীর্ণ ৭৭ শিক্ষার্থীর ভর্তি কবে?

ভর্তি পরীক্ষার্থী
ভর্তি পরীক্ষার্থী  © ফাইল ফটো

এ বছর মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে গত ১৯ জানুয়ারি। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় উত্তীর্ণদের কাগজপত্র যাচাই শেষ হয়েছে গত ২ ফেব্রুয়ারি। এরপর কেটে গেছে দুই মাস। কিন্তু এখনও নিজেদের ভাগ্য জানতে পারেননি কাগজপত্র যাচাইয়ে উতরে যাওয়া ৭৭ জন পরীক্ষার্থী। তাদের ভর্তিতে বিলম্ব হওয়ায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা।

স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর বলছে, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় উত্তীর্ণদের মধ্যে যাদের কাগজপত্র ‘সঠিক’ ছিল, তাদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ৭৭ জনকে ভর্তির সুপারিশ করা হয়েছে। বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

জানতে চাইলে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. রুবীনা ইয়াসমিন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের হাতে নেই। ভর্তির ক্ষেত্রে কোটা নিয়ে সরকার সামগ্রিক সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। সেজন্য হয়তো কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের মানসিক দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই।’

গত ১৯ জানুয়ারি মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর কম নম্বর পেয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভর্তির সুযোগ পান ১৯৩ জন। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় উত্তীর্ণদের ফল বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। এরই প্রেক্ষিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চান্সপ্রাপ্তদের সনদ যাচাইয়ের উদ্যোগ নেয় স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ।

স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, মেডিকেলে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের ৫ শতাংশ বা ২৬৯ আসনের বিপরীতে আবেদন করেছিলেন ৬৮৬ জন। তাদের মধ্যে পাস করেন ১৯৩ জন। উত্তীর্ণদের মধ্যে সনদ জমা দিয়েছিলেন ১৫৮ জন। তাদের মধ্যে ৮১ জনই মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনি। সনদ যাচাইকালে ৭৭ জন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার সন্তান পাওয়া গেছে। তারা সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ ‘পাবেন’ বলে জানিয়েছে অধিদপ্তর। তবে এই সনদ যাচাই প্রক্রিয়া এবং সুপারিশ করার দুই মাস হলেও এখনও এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি সরকার। ফলে বিষয়টি নিয়ে চরম হতাশা প্রকাশ করেছেন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাকরা।

শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা বলছেন, অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগোচ্ছেন ৭৭ জন শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবার। এ মুহূর্তে তাদের করণীয় কী সেটিও বুঝতে পারছেন না। এ অবস্থায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন তারা। দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।

আয়েশা সিদ্দিকা নামে এক অভিভাবক জানান, ‘আমার বাবা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ছিল। আমার ভাই ভর্তি পরীক্ষায় মুক্তিযোদ্ধা কোটায় উত্তীর্ণ হয়েছে। কাগজপত্র জমাও দিয়েছে। সেগুলো যাচাই করে কাগজপত্র সঠিক বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর। তবে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় আমার ভাই এখনো ভর্তির সুযোগ পায়নি। দিন দিন সে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে।’

এদিকে ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশের তিন মাস এবং সনদ যাচাইয়ের দুই মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও মুক্তিযোদ্ধা কোটায় উত্তীর্ণদের ভর্তির সুযোগ না দেওয়ার বিষয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের সঙ্গে দেখা করতে চান ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকরা। বিষয়টি স্বাস্থ্য উপদেষ্টাকে অবহিত করতে চান তারা।

এ বিষয়ে আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা কোটায় উত্তীর্ণদের সঙ্গে নিয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করতে চাই। আমরা আমাদের উদ্বেগের কথা তাকে জানাতে চাই। তিনি যেন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ভর্তির নির্দেশ দেন সে বিষয়ে আমরা তাকে অনুরোধ করব। আমার মতো অন্যান্য যারা ভুক্তভোগী রয়েছেন তাদের আমার rofialhaque2408@gmail.com অথবা 01838922741 নাম্বারে যোগাযোগের অনুরোধ করছি।’


সর্বশেষ সংবাদ