শহীদ আদিল নেই, তবু তার জন্য রাখা হয়েছে চেয়ার-ফুলের তোড়া

শহীদ মোহাম্মদ আদিল
শহীদ মোহাম্মদ আদিল  © টিডিসি সম্পাদিত

দাখিল পরীক্ষার্থীদের জন্য চলছে দোয়ার অনুষ্ঠান। সামনের সারিতে শিক্ষার্থীরা বসে আছে, চোখে-মুখে বেদনা বন্ধু হারানোর কষ্ট। পরীক্ষার্থীদের জন্য দোয়া করা হচ্ছে সাফল্যের জন্য। কিন্তু সামনের টেবিলে রাখা একটি ফুলের তোড়া, যেন আঘাত করছে সবার হৃদয়ে। সেই তোড়ায় লেখা—‘শহীদ মোহাম্মদ আদিল’।

তা‘মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা যাত্রাবাড়ী ক্যাম্পাসের দাখিল পরীক্ষার্থী ছিল আদিল। আজ মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) এ দোয়া মাহফিলে সবার মধ্যে যে অনুপস্থিত, সেই যেন সবচেয়ে বেশি উপস্থিত। সহপাঠীদের চোখে জল, মনে গর্ব, কারণ আদিল শুধু একজন শিক্ষার্থী নয়, ছিল এক সাহসী কণ্ঠ, এক প্রতিবাদের প্রতিচ্ছবি।

জানা গেছে, গত বছরের ১৯ জুলাই দুপুরে ভূইগড়, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিলে গুলিবিদ্ধ হয় আদিল। চাচাতো ভাই সাজিদ বলেন, ‘আমি ওকে বারবার বলছিলাম, মিছিলের সামনে বড়দের যাইতে দাও, তুমি যেও না। কিন্তু ও বলেছিল, ভয়ে সবাই পিছিয়ে গেলে সামনে এগিয়ে যাবে কে? এর কিছুক্ষণ পরই গুলিবিদ্ধ হয় আদিল। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।’

আদিলের বয়স ছিল মাত্র ১৬। বিজ্ঞান বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী সে। একাধিকবার পদক পেয়েছে ম্যাথ অলিম্পিয়াড। স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে দেশের জন্য কাজ করবে, সেনাবাহিনীর একজন গর্বিত কর্মকর্তা হবে।

দোয়া মাহফিলে শিক্ষকরা বলেন, ‘আদিলের মতো সাহসী ছেলেরা আমাদের সমাজের বাতিঘর। আমরা দোয়া করি, আল্লাহ যেন তাকে জান্নাতুল ফিরদাউস দান করেন।’

ভূইগড় কেন্দ্রীয় কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়। আজ  দোয়া মাহফিলে তার নাম উচ্চারিত হয়ে দোয়া করেছে শিক্ষক সহপাঠীরা। তার সাহস, স্বপ্ন আর আত্মত্যাগ—সবাইকে নিশ্চুপ করে রেখে গেছে।


সর্বশেষ সংবাদ