যুগের চেয়ে এগিয়ে থাকতে এখন থেকেই প্রোগ্রামিং শেখা শুরু কর

হাসিবুল হক হিমেল
হাসিবুল হক হিমেল  © টিডিসি ফটো

ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির ২০১৬-২০১৭ শিক্ষাবর্ষের কম্পিউটার সাইন্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন হাসিবুল হক হিমেল। সম্প্রতি তিনি টেক জায়ান্ট গুগলের কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগের ডাক পেয়েছেন। তার শৈশব-বেড়ে উঠা, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা জীবন এবং গুগলে ডাক পাওয়ার সার্বিক বিষয় নিয়ে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের সঙ্গে কথা বলেছেন। তার কথাগুলো শুনেছেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি তাওফিকুল ইসলাম হিমেল

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ছোটবেলা কোথায় কেটেছে? কেমন ছিল আপনার বেড়ে ওঠা
হাসিবুল হক হিমেল: আমার ছোটবেলা কেটেছে নওগাঁ শহরে। জন্ম, বেড়ে উঠা, বন্ধু-বান্ধব সব ওখানেই। আমি মাধ্যমিকে পড়েছি নওগাঁ কে. ডি. সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে, উচ্চমাধ্যমিকে পড়েছি নওগাঁ সরকারি কলেজে। ভর্তি পরিক্ষার পর চলে আসলাম ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজিতে।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: পরিবারে কে কে আছেন?
হাসিবুল হক হিমেল: পরিবারে আছেন আব্বু, আম্মু, ছোট ভাই। ছোট ভাই এখন উচ্চ মাধ্যমিকে পড়াশোনা করে। বাবা কলেজের শিক্ষক ছিলেন; এখন অবসরে গেছেন। আমাদের ছোট্ট সুখী পরিবার।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ছোটোবেলায় সবার স্বপ্ন থাকে। তখন কি স্বপ্ন দেখেছিলেন?
হাসিবুল হক হিমেল: স্বপ্ন তো অনেকই ছিল। কিছুদিন পর যখন ওগুলো আর পারতাম না , স্বপ্ন পরিবর্তন করে ফেলতাম। স্বপ্ন যাই থাকুক, আমি সব সময় নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টা করতাম।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বাবা-মায়ের স্বপ্ন কি ছিলো?
হাসিবুল হক হিমেল: আসলে আব্বু-আম্মু কখনো আমাকে কিছু নিয়ে প্রেসার করেননি। সবসময় আমি যা করতে চেয়েছি; তাই করতে দিত। কারণ তাদের বিশ্বাস ছিল আমি নিজের ক্যারিয়ারের সিদ্ধান্ত বুঝে শুনেই নেব। ছোট বেলায় আমি মুখস্ততে অনেক খারাপ ছিলাম। আব্বু-আম্মু এটা বুঝে গিয়েছিল যে আমাকে দিয়ে ডাক্তারি পড়া হবে না। তাই বাই ডিফল্ট ছেলে ইঞ্জিনিয়ার হবে, এইটা তো মনের মধ্যে ছিলই।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আইইউটিতে থাকতে আপনি অনেক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন। কোথায় এসব প্রতিযোগিতা হয়, নতুনরা কিভাবে এসবে অংশ নিতে পারেন
হাসিবুল হক হিমেল: হ্যাঁ। আমি অনেক আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছি। আমার মজা লাগত প্রতিযোগিতাগুলো করে। প্রতিযোগিতাগুলো বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজন করে। আমদের আইইউটিও এমন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে প্রতিবছর, আইসিটি ফেস্ট নামে।

আমাদের আইইউটিতে কম্পেটিটিভ প্রোগ্রামিং গ্রুপ আছে, ওদের সাথে যুক্ত থাকলে এসব প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারা যাবে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও এমন গ্রুপ থাকে, এমন গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত থাকলে সহযোগিতাও পাওয়া যাবে সাথে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া যাবে।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: চলার কেমন পথে প্রতিবন্ধকতা পেয়েছেন?
হাসিবুল হক হিমেল: আসলে প্রতিবন্ধকতা তো সব জায়গায় থাকে। কিন্তু আমি যদি আমার লক্ষে অটুট থাকি, যেকোন বাঁধা ছোট-খাট সমস্যা ছাড়া আর কিছুই না।

আরও পড়ুন: গুগলে ডাক পেলেন আইইউটির ছাত্র হিমেল

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: অনুপ্রেরণা পেয়েছেন কাদের কাছ থেকে?
হাসিবুল হক হিমেল: সবচেয়ে বেশি অনুপ্রেরণা পেয়েছি বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় ভাইদের কাছে। যখন হতাশ হয়ে যেতাম, এত কোডিং করতেছি তাও কোন ফলাফল আসতেছে না, তারা আমাকে অনেক সাহস দিয়েছে, পথ দেখিয়ে দিয়েছে, সহযোগিতা করেছে। আমি তাদের কাছে সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকব।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: কতদূর যেতে চান?
হাসিবুল হক হিমেল: আমি জানি না; সত্যি জানি না। আমি আগে কোনদিন গুগলে চাকরি পাওয়ার পর কি করব সেটাও ভাবিনি। এখন একটু জিরিয়ে নেই, ডাবলিন যাওয়ার পর চিন্তা করব এর পর কি করা যায়।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: দেশের জন্য কি করতে চান?
হাসিবুল হক হিমেল: দেশের জন্য অনেক কিছু করার ইচ্ছা আছে। কিভাবে বাংলাদেশের স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আরও বেশি প্রোগ্রামিংয়ে মনযোগী করা যায়, যাতে আরও বেশি বেশি বাংলাদেশী বড় বড় কোম্পানিতে সুযোগ পায়, এটা নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা আছে।

এমন একটা পরিবেশ তৈরি করার ইচ্ছা আছে, বাইরের কোম্পানি যখন শুনবে একজন বাংলাদেশ থেকে এসেছে তার মানে সে প্রোগ্রামিংয়ে ভালো।
 
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: হ্যা, আসলে এরকম অনেকেরই গুগল, মাইক্রোসফটসহ জায়ান্ট কোম্পানিগুলোতে যাওয়ার স্বপ্ন থাকে। তাদের জন্য আপনার কি পরামর্শ থাকবে?
হাসিবুল হক হিমেল: যারা স্কুল কলেজে অধ্যয়নরত তাদের জন্যে বলবো, বইয়ের অঙ্কগুলো বুঝে বুঝে করো। গাইড দেখে অথবা শিক্ষকের করে দেওয়া নিয়ম মুখস্ত করো না। যদি এমন করো তাহলে তোমার চিন্তা করার শক্তি কখনো বাড়বে না। তাই ডাইনামিক হতে হবে।

যারা যুগের চেয়ে এগিয়ে থাকতে চাও, তারা এখন থেকে প্রোগ্রামিং শেখা শুরু করে দাও। ইন্টারনেটে অনেক শেখার সুযোগ আছে। যেকোন জায়গা থেকে শেখা শুরু করে দাও। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্যে বলবো, সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা বাড়াও। এর জন্যে সবচেয়ে কার্যকারী উপায় হচ্ছে কম্পেটিটিভ প্রোগ্রামিং করা।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনার গুরুত্বপূর্ণ সময়ের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
হাসিবুল হক হিমেল:
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের জন্যেও অনেক শুভকামনা রইলো।


সর্বশেষ সংবাদ