বিনার গবেষকদের সর্বোচ্চ ২৪ জাত উদ্ভাবক বিজ্ঞানী ড. মালেক

বিজ্ঞানী ড. মালেক
বিজ্ঞানী ড. মালেক  © টিডিসি ফটো

গবেষণার মাধ্যমে উন্নত ২৪টি ফসলের জাত উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) সফল গবেষক ড. মো. আব্দুল মালেক। বিনার মোট উদ্ভাবিত ১২৭টি জাতের সংখ্যা মধ্যে তার উদ্ভাবিত জাতগুলো (২৪টি) বিনার বিজ্ঞানীদের মধ্যে এককভাবে সর্বোচ্চ। গবেষণার বিষয়ে তার সাথে কথা হলে এসব তথ্য জানান বিজ্ঞানী ড. মালেক।

বিজ্ঞানী ড. মালেক জানান,  আন্তর্জাতিকভাবে প্রসিদ্ধ ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টরযুক্ত আন্তর্জাতিক ও দেশীয় জার্নালে তার প্রকাশিত গবেষণামূলক আর্টিকেলের সংখ্যা ১২৫। যেগুলো বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীদের দ্বারা মোট ২০১২ বার সাইটেশন হয়েছে (২ জুন, ২০২৩)।

‘‘যেগুলোর এইচ-সূচক (ইনডেক্স) ২৩ এবং আই ১০ সূচক (ইনডেক্স) ৩৫। যা বিনার বিজ্ঞানীদের মধ্যে এককভাবে সর্বোচ্চ এবং দেশের এনএআরএসভূক্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠানসমূহের বিজ্ঞানীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য।’’

তিনি বলেন, তার উদ্ভাবিত ২৪টি জাতের মধ্যে রয়েছে- সরিষার ১০টি, তিলের ৪টি, সয়াবিনের ৭টি এবং টমেটোর ৩টি। উদ্ভাবিত জাতসমূহের মধ্যে ১৯টির উদ্ভাবনে প্রধান গবেষক ও বাকি ৫টিতে সহযোগী গবেষক হিসেবে ড. মালেক দায়িত্ব পালন করেছেন।

ড. মালেক বলেন, উদ্ভাবিত স্বল্প জীবনকালের, মধ্যম মাত্রার লবণাক্ততা সহিষ্ণু, নাবিতে বপনযোগ্য, সাময়িক জলাবদ্ধতা সহিষ্ণু ও উচ্চফলনশীল বিনাসরিষা-৪, বিনাসরিষা-৯ ও বিনাসরিষা-১২ এবং স্বল্প জীবনকালের ও উচ্চফলনশীল বিনাসরিষা-১১ কৃষকের মাঠে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে ও তেলবীজ ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধিতে ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে।

এছাড়াও তার উদ্ভাবিত উচ্চফলনশীল ও খরা সহনশীল তিলের জাত বিনাতিল-২, বিনাতিল-৩ ও বিনাতিল-৪ এবং উচ্চফলনশীল ও লবণাক্ততা সহনশীল সয়াবিনের জাত বিনাসয়াবিন-২, বিনাসয়াবিন-৩, বিনাসয়াবিন-৫, বিনাসয়াবিন-৬ ও বিনাসয়াবিন-৭ কৃষক পর্যায়ে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে।

তার উদ্ভাবিত তেলবীজ ফসলের উল্লিখিত জাতগুলো সরকারের অগ্রাধিকার ভিত্তিক ‘তৈলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্প’ এর মাধ্যমে প্রকল্প মেয়াদে ভোজ্যতেলের চাহিদার ৪০% দেশীয় উৎপাদন দিয়ে মিটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তিনি তৈল জাতীয় ফসলগুলোর মোট ১২টি উন্নত অগ্রবর্তী মিউট্যান্ট উদ্ভাবন করেছেন এবং আগামী তিন বছরে কমপক্ষে পাঁচটি জাত উদ্ভাবিত হবে।

যেগুলো দেশীয় ভোজ্যতেলের উৎপাদন বৃদ্ধিতে রাখবে বিশেষ অবদান যার মাধ্যমে সাশ্রয় হবে হাজার হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা।

২০১৯ সালের বিনা বিজ্ঞানী সমিতি (বিনাসা) নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ধারক ও বর্তমান সরকারের মতাদর্শের অনুসারী বিনা বিজ্ঞানী সমিতির (বিনাসা) ড. মালেক, ড. হারুন নির্বাচনী প্যানেলের বিপুল ভোটে জয়ী ও নির্বাচিত সভাপতি। বিনায় ২০১৭ সালে সর্বপ্রথম জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল পুরস্কারপ্রাপ্ত এবং গবেষণায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৯ সালে বৃহত্তর জেলা (ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট) আঞ্চলিক পর্যায়ে খাজা উসমান খাঁ সিলভার অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত হন।

গত ফেব্রুয়ারি ২০২১ হতে বিনার পরিচালক (গবেষণা) হিসেবে সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছেন তিনি।

ড. মো. আব্দুল মালেক জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলায় ১৯৬৬ সালে ২৭ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৮২ সালে এসএসসি ও ১৯৮৪ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। তিনি ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষি অনুষদ থেকে  স্নাতক ও ১৯৯১ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। 


সর্বশেষ সংবাদ