এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য ডিএমপির ১৭ নির্দেশনা 

পরীক্ষায় সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলন
পরীক্ষায় সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলন  © সংগৃহীত

সারাদেশে ৩০ জুন থেকে শুরু হতে যাচ্ছে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। পরীক্ষার্থীদের জন্য ১৭টি নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি)। ঢাকা শহরের রাস্তায় পরীক্ষার্থীদের সহায়তা করতে কাজ করবে পুলিশের কুইক রেসপন্স টিম। বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দুপুরে এইচএসসি পরীক্ষায় সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান।

পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) বলেন, ‘৩০ জুন এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। প্রতিটি কেন্দ্রের রোড ভিত্তিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পরীক্ষার কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীরা যেন সময়মতো পৌঁছাতে পারেন সেজন্য রোডে পরীক্ষার্থীদেরকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ঢাকা মহানগরে এইচএসসি পরীক্ষার ৮০টি কেন্দ্র আছে। পরীক্ষার কেন্দ্রমুখী যেসব রোড রয়েছে সেখানে বিশেষ ট্রাফিক ব্যবস্থা থাকবে। পরীক্ষার্থীরা যেন নির্বিঘ্নে কেন্দ্রে পৌঁছাতে পারে সেই প্রচেষ্টা থাকবে আমাদের। এছাড়া প্রধান সড়কগুলোতে ব্যাটারি চালিত রিকশা চলাচল করতে দেওয়া হবে না।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যেখানে পরীক্ষার কেন্দ্র বেশি সেখানে কুইক রেসপন্স টিম (কিউআরটি) বেশি থাকবে। কুইক রেসপন্স টিম বিভিন্ন রোডে থাকবে। রাস্তায় যদি কোনো পরীক্ষার্থী কেন্দ্রে পৌঁছাতে দেরি করে অথবা বিপদে পড়ে সেখানে কুইক রেসপন্স টিম পরীক্ষার্থীদের দ্রুত কেন্দ্রে পৌঁছানোর কাজ করবে।’

সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির এই অতিরিক্ত কমিশনার এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য ১৭টি নির্দেশনা দেন। নির্দেশনাগুলো হলো- পরীক্ষার হলে রওনা দেওয়ার আগে অবশ্যই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং কলম সঙ্গে নিতে হবে। পরীক্ষা শুরুর আগের দিন কেন্দ্রের অবস্থানটি ভালো করে জেনে নিতে হবে এবং বাসা থেকে কোন রুটে যেতে হবে তার পরিষ্কার ধারণা নিতে হবে। পরীক্ষা শুরুর আগে কেন্দ্রে উপস্থিত হওয়ার জন্য পরীক্ষার্থী/অভিভাবকদেরকে সড়ক-মহাসড়কের যানজটের বিষয়টি মাথায় রেখে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে বাসা থেকে বের হতে হবে। বাসা হতে এমনভাবে বের হতে হবে যেন ন্যূনতম ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছানো যায়।

যেসব সড়ক পারাপারে রেল ক্রসিং আছে তা বিবেচনা করে বাসা থেকে সময় নিয়ে রওনা দেওয়া জরুরি। বাসার বা পরীক্ষা কেন্দ্রের আশপাশের সড়কে যদি কোনো খুঁড়াখুঁড়ি বা মেরামত কাজ চলে তবে তা বিবেচনায় নিয়ে সময় মতো রওনা দিতে হবে।পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদেরকে সাবধানতা অবলম্বন করে যানবাহনে চলাচলের অনুরোধ করা হয়েছে নির্দেশনায়। কোনো অবস্থাতেই গণপরিবহনে ঝুলে ঝুঁকিপূর্ণভাবে পরীক্ষা কেন্দ্রে আসা-যাওয়া না করতে বলা হয়েছে ডিএমপির পক্ষ থেকে।

যেসব পরীক্ষার্থী মোটরসাইকেলে পরীক্ষা কেন্দ্রে গমন করবেন তারা অবশ্যই নিরাপত্তাজনিত কারণে হেলমেট পরবেন। পরীক্ষা কেন্দ্রে আগত পরীক্ষার্থীবৃন্দ যানজট বা কোন অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যার সম্মুখীন হলে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের সহযোগিতা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো। ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার থেকে বিরত থাকুন, প্রয়োজনে ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করুন এবং পুলিশের সহায়তা নিন। রাস্তা পারাপারে জেব্রা ক্রসিং থাকলে তা ব্যবহার করতে অনুরোধ করা হয়েছে।

এছাড়াও পরীক্ষা কেন্দ্রের আশপাশে অযাচিত পার্কিং না করে অভিভাবক/পরীক্ষার্থীদের ব্যবহৃত যানবাহন পরীক্ষা কেন্দ্র হতে দূরবর্তী নিরাপদ স্থানে পার্কিং করার জন্য অনুরোধ করা হলো। পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা পরীক্ষা কেন্দ্রের সামনের সড়কে দাঁড়িয়ে গেলে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। ফলে অন্য পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে পৌঁছাতে দেরী হয়। তাই পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদেরকে কেন্দ্রের সামনে প্রধান গেটে ও রাস্তায় না দাঁড়িয়ে ফুটপাতে দাঁড়ানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে নির্দেশনায়। ডিএমপি পরীক্ষা কেন্দ্রের সামনে আড্ডা দেয়া থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানিয়েছে। গত ১ বছরে মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ঢাকা মহানগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। যা পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রার্থীদের পৌঁছানোর ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন রাখতে পারে।

নির্দেশনায় ১৭ নম্বর ক্রমিকে বলা হয়েছে, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের প্রতিটি জোনের আলাদা কুইক রেসপন্স টিম (কিউআরটি) গঠন করা হবে এবং আলাদা ট্রাফিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।

বর্তমানে বর্ষাকাল চলছে বিধায় অবশ্যই ছাতা, রেইনকোর্ট কিংবা বৃষ্টি থেকে রক্ষার প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি সঙ্গে নিয়ে বাসা থেকে বের হওয়ার জন্য অনুরোধ করেছে ডিএমপি। যেকোনো জরুরি প্রয়োজনে ৯৯৯ এ ফোন করতে অনুরোধ করা হয়েছে।

 

সর্বশেষ সংবাদ