ডেঙ্গু আক্রান্তদের এইচএসসি পরীক্ষা বিশেষ ব্যবস্থায়

শিক্ষার্থী এবং ডেঙ্গু মশা
শিক্ষার্থী এবং ডেঙ্গু মশা  © ফাইল ছবি

আগামীকাল রোববার থেকে শুরু হচ্ছে চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা। পরীক্ষা চলাকালীন কিংবা পরীক্ষার পূর্বে কোনো শিক্ষার্থী ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে তার পরীক্ষা বিশেষ ব্যবস্থায় নেওয়া হবে।

শনিবার (৫ নভেম্বর) রাতে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের সাথে আলাপকালে এ তথ্য জানান আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার।

তিনি জানান, আমাদের প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রে ‘সিক বেডের’ ব্যবস্থা রয়েছে। কোনো শিক্ষার্থী করোনাভাইরাস, ডেঙ্গু কিংবা অন্য কোন অসুখে আক্রান্ত হলে তার পরীক্ষা বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতিবারই আমরা এই ব্যবস্থা রাখি।

এদিকে আগামীকাল রোববার এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রথমদিন সকাল ১১টায় হবে বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষা। এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর  সরকারি বেগম বদরুন্নেছা মহিলা কলেজে পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন করবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

শিক্ষাবোর্ডের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সময়সূচিতে হয়েছে, আগামী ১৩ ডিসেম্বর এইচএসসির তত্ত্বীয় পরীক্ষা শেষ হবে। ব্যবহারিক পরীক্ষা শুরু হবে ১৫ ডিসেম্বর, যা শেষ হবে ২২ ডিসেম্বর।

এবার মোট ১২ লাখ ৩ হাজার ৪০৭ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে ছাত্র ৬ লাখ ২২ হাজার ৭৯৬ জন এবং ছাত্রী ৫ লাখ ৮০ হাজার ৬১১ জন।

এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে সারা দেশে ৪২ দিন কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে বলে গত ১৯ অক্টোবর জানান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। সেই অনুযায়ী, গত ৩ নভেম্বর থেকেই সব কোচিং সেন্টার বন্ধ আছে, যা ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে।

মোট ২ হাজার ৬৪৯টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিতব্য এই পরীক্ষায় ৯ হাজার ১৮১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেবে। মোট ১১টি শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মোট পরীক্ষার্থী ৯ লাখ ৮৫ হাজার ৭১৩ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৫ লাখ ৮২ হাজার ১৮৩ জন এবং ছাত্রী ৫ লাখ ৩ হাজার ৫৩০ জন।

অন্যদিকে, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে আলিম পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ৯৪ হাজার ৭৬৩ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৫১ হাজার ৬৯৫ জন এবং ছাত্রী ৪৩ হাজার ৬৮ জন। মোট ২ হাজার ৬৭৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষার্থীরা মোট ৪৪৮টি কেন্দ্র অংশ নেবে।

কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি (বিএম/বিএমটি)এইচএসসি (ভোকেশনাল), ডিপ্লোমা-ইন-কমার্স পরীক্ষায় এক লাখ ২২ হাজার ৯৩১ জন অংশ নেবে। এর মধ্যে ছাত্র ৮৮ হাজার ৯১৮ জন এবং ছাত্রী ৩৪ হাজার ১৩ জন। মোট ১ হাজার ৮৫৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৬৭৩টি কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেবে পরীক্ষার্থীরা।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, করোনার কারণে সব বিষয়ে ও পূর্ণ নম্বরে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। শিক্ষা বোর্ড সিলেবাস পুনর্বিন্যাস করেছে। ২০২৩ সাল থেকে সব বিষয়ে পূর্ণ নম্বরে পুনর্বিন্যাস করা সিলেবাসে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সংশ্লিষ্ট অভিভাবকদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যদিকে,পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষার হলে প্রবেশ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অনিবার্য কারণে কোনো পরীক্ষার্থীকে নির্ধারিত সময় পার হওয়ার পরে প্রবেশ করতে দিলে তাদের নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময়, বিলম্ব হওয়ার কারণ ইত্যাদি একটি রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করে ওই দিনই সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডে প্রতিবেদন দিতে হবে।

এছাড়া পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিটি আগে এসএমএস এর মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের কাছে প্রশ্নপত্রের সেট কোড জানিয়ে দেওয়া হবে। সূত্র জানায়, পরীক্ষা কেন্দ্রে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কেউ মোবাইল ফোন বা ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন না। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছবি তোলা যায় না এমন মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অন্য কেউ কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবে না। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এবার পরীক্ষার্থী কমেছে
গত বছর মোট এইচএসসি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১৩ লাখ ৯৯ হাজার ৬৯০। এ বছর পরীক্ষার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ লাখ ৩ হাজার ৪০৭ জনে। অর্থাৎ পরীক্ষার্থী কমেছে ১ লাখ ৯৬ হাজার ২৮৩ জন। বিদেশে ৮টি কেন্দ্র রয়েছে। সেখানে ২২২ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দেবে।


সর্বশেষ সংবাদ