অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তি মিলবে যেভাবে
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৯ মার্চ ২০২৫, ০৪:৪৭ PM , আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২৫, ০৪:৪৭ PM

আজকাল অ্যাসিডিটির সমস্যায় ভোগেন না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন। অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, ভাজাপোড়া ও তৈলাক্ত খাবার, প্রক্রিয়াজাত খাবারসহ নানা কারণে ছেলে-বুড়ো সবাই অ্যাসিডিটি বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় আক্রান্ত হন। এর সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে পেট ফাঁপা, বুক ও গলা জ্বালাপোড়া করা এবং বদহজম অন্যতম। অনেকেই এই সমস্যা সমাধানের জন্য ওষুধের ওপর নির্ভর করেন। যদিও শুরুতে ওষুধ কাজ করে, তবে দীর্ঘমেয়াদে তা কার্যকর থাকে না।
অ্যাসিডিটি প্রতিরোধই হলো সবচেয়ে ভালো সমাধান। কিছু নির্দিষ্ট কারণ আমাদের শরীরে অ্যাসিডিটির মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। কেউ দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকলে, কেউ ভাজাপোড়া খেলে, কেউ অতিরিক্ত রোদে থাকলে বা কিছু নির্দিষ্ট খাবার খেলেও অ্যাসিডিটির সমস্যা হতে পারে। তাই যেসব খাবার বা অভ্যাস অ্যাসিডিটি বাড়ায়, তা এড়িয়ে চলাই উত্তম। তবে যদি অ্যাসিডিটির সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে হাতের কাছেই থাকা কিছু সাধারণ উপাদান দিয়ে সহজেই স্বস্তি পাওয়া সম্ভব।
পানি
অ্যাসিডিটি হলে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। এটি পেটের গ্যাস বের করে দেয় এবং অস্বস্তিভাব দূর করে। নিয়মিত পর্যাপ্ত পানি পান করলে হজম ও পরিপাকক্রিয়া স্বাভাবিক থাকে, ফলে অ্যাসিডিটি হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়।
আদা
আদার প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান অ্যাসিডিটির সমস্যা কমাতে সহায়ক। সামান্য লবণসহ আদাকুচি চিবিয়ে খেলে দ্রুত আরাম পাওয়া যায়। এছাড়া, আদাকুচি পানিতে সেদ্ধ করে সেই পানিও পান করা যেতে পারে। তবে অতিরিক্ত আদা খেলে সমস্যা বাড়তেও পারে, তাই পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।
পুদিনাপাতা
অ্যাসিডিটি কমাতে দুই-তিনটি পুদিনাপাতা চিবিয়ে খাওয়া যেতে পারে। চাইলে এক কাপ পানিতে পুদিনাপাতা সেদ্ধ করে সেই পানি পান করলেও উপকার পাওয়া যায়। এটি বমিভাব কমায়, পেটের জ্বালাপোড়া দূর করে এবং শরীরকে সতেজ রাখে।
মেথি
এক চা–চামচ মেথিগুঁড়া এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে পান করলে অ্যাসিডিটির জ্বালাপোড়া কমে যায়। এছাড়া, এক গ্লাস পানিতে এক চা–চামচ মেথি দানা সারারাত ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে পান করলেও উপকার পাওয়া যায়।
দারুচিনি
অ্যাসিডিটি কমাতে আধা চা–চামচ দারুচিনি গুঁড়া এক গ্লাস পানিতে ফুটিয়ে পান করা যেতে পারে। এছাড়া, ৪-৫ টুকরো দারুচিনি দুই কাপ পানিতে ফুটিয়ে সেই নির্যাসসহ পান করলেও আরাম পাওয়া যায়।
পেঁপে
পেঁপেতে থাকা প্যাপেইন এনজাইম হজমপ্রক্রিয়াকে সহজ করে, ফলে অ্যাসিডিটি কমে। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় দু-এক টুকরা পেঁপে রাখা যেতে পারে। তবে যাদের পেঁপেতে অ্যালার্জি হয়, তারা এটি এড়িয়ে চলুন।
সচেতনতা ও প্রতিরোধ
যদি অ্যাসিডিটির সমস্যা নিয়মিত ও গুরুতর হয়, তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। মনে রাখতে হবে, সব ঘরোয়া প্রতিকার সবার জন্য কার্যকর নাও হতে পারে। ওষুধ বা ঘরোয়া সমাধান সাময়িক স্বস্তি দিলেও দীর্ঘমেয়াদে অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তি পেতে হলে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনতে হবে।
একবারে বেশি না খেয়ে অল্প অল্প করে খান এবং পেট খালি রাখবেন না। বিশুদ্ধ পানি পর্যাপ্ত পরিমাণে পান করুন, পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন। অতিরিক্ত তেল-মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলার অভ্যাস গড়ে তুলুন। অন্যথায়, যত ওষুধ বা ঘরোয়া সমাধানই গ্রহণ করুন না কেন, অ্যাসিডিটি বারবার ফিরে আসবে। তাই সচেতনতাই হলো এই সমস্যার সবচেয়ে কার্যকর প্রতিকার।