শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাসের এক সপ্তাহ পার, হতাশ শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়  © টিডিসি ফটো

দাবি পূরণে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে হতাশ হয়ে পড়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি দাবি পূরণে দ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানালেও গত এক সপ্তাহে কোনো অগ্রগতি দেখেননি শিক্ষার্থীরা। ১২ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী। বৈঠকের একদিন পর আন্দোলন স্থগিত করে তারা। স্বাভাবিক হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ।

গত ১৩ জানুয়ারি প্রভোস্ট বডির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে সিরাজুন্নেসা হলের ছাত্রীরা। পরে তাদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে অংশ নেয় ছাত্ররাও। ছাত্রলীগের হামলা ও পুলিশের অ্যাকশনে পর আন্দোলন ভিসি পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়। ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে আমরণ অনশন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। ১৬৩ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। পরে ১২ ফেব্রুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী সিলেট যান। সেখানে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে তাদের দাবিগুলো দ্রুত পূরণ করার আশ্বাস দেন। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের কাছে দুঃখপ্রকাশ করে দায়িত্ব চালিয়ে নিতে বলেন ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিলো- ভিসির পদত্যাগ, তাদের ব্যবহৃত ব্যাংক একাউন্ট পুনরায় চালু করা, পুলিশের করা মামলা প্রত্যাহার।

আরও পড়ুন- শাবিপ্রবির ভিসি নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলতে অপারগ জাফর ইকবাল 

এদিকে ১৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় চিকিৎসা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ে যান শিক্ষার্থী সজল কুণ্ডু। গতকাল তিনি গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি দেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর ১৭ ফেব্রুয়ারি সিলেটে ফিরে গত কিছুদিনের ঘটনাপ্রবাহ অনুসরণ করে সহপা‌ঠীদের সঙ্গে কথা বলে কিছু ব‌্যাপার মর্মাহত করেছে। ১২ ফেব্রুয়ারি আমাদের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনার পর সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে অচিরেই যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তিনি একই সঙ্গে বলেছিলেন, শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত দুটি মামলা দ্রুত প্রত্যাহার করা হবে এবং সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের যেসব ব্যাংক ও অনলাইন লেনদেনের অ্যাকাউন্টগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, তা অচিরেই খুলে দেওয়া হবে। কিন্তু তার আশ্বাসের এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও মামলাগুলো প্রত‌্যাহার বা অ্যাকাউন্টগুলো খুলে দেওয়ার ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ দৃশ‌্যমান হয়‌নি। শিক্ষামন্ত্রীর স্পষ্ট আশ্বাসের পরও এসব বিষয়ে এমন দীর্ঘসূত্রতা শিক্ষার্থীদের প্রচণ্ড হতাশ করেছে।

সজল কুণ্ডু আরও বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় উত্থাপিত শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর মধ্যে আমাকে শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি প্রদান, ভবিষ্যতের সমস্ত চিকিৎসা খরচ সরকারের পক্ষ থেকে বহন ও এককালীন আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি ছিল। চাকরি প্রদানের ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী মৌখিক আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত ভবিষ্যতের চিকিৎসা খরচ বহন ও এককালীন আর্থিক ক্ষতিপূরণের ব্যাপারে কোনো স্পষ্ট আশ্বাস পাইনি। বাবা মৃত, অসুস্থ মাকে নিয়ে অসচ্ছল পরিবার চালাতে পড়াশোনা শেষ করে চাকরির চেষ্টা করার কথা ছিল। স্বপ্ন ছিল উপার্জনে পরিবারে সুদিন আসবে। একটি দিনের ব্যবধানে স্বপ্নগুলো এলোমেলো হয়ে গেল, সারা শরীরে অসংখ্য আঘাত ও স্প্লিন্টার নিয়ে অসহ্য শারীরিক যন্ত্রণায় সামনের বিপদসংকুল দিনগুলো কীভাবে কাটবে, তার আশঙ্কায় এখন দিনাতিপাত করতে হচ্ছে। তার দায় কে নেবে?


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence