টিকা নিতে গিয়ে ভোগান্তিতে বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা
- বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ৩০ নভেম্বর ২০২১, ১০:১৫ PM , আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২১, ১০:২৭ PM
কোভিড-১৯ টিকা গ্রহণ করতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছেন গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ টিকাকেন্দ্রে যাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী পরিচয় দিলেই তাদেরকে টিকা প্রদানে অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন টিকা প্রদানকারী ব্যক্তিরা।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মো: রিমন হোসেইন বলেন, “যেসব শিক্ষার্থী কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের রেজিস্ট্রেশন নিজ এলাকায় করেছিল, কিন্তু ক্যাম্পাসে অবস্থান করায় টিকা গ্রহণে সমস্যা হচ্ছিল তাদের কথা বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গোপালগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জনের সাথে কথা বলে 'শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ' টিকাদান কেন্দ্র থেকে টিকা প্রদানের ব্যবস্থা করে। এর প্রেক্ষিতেই আমি গত ১৪ সেপ্টেম্বর ১ম ডোজ টিকা গ্রহণ করি। পরবর্তীতে গত ১৫ নভেম্বর ২য় ডোজ টিকা নিতে গেলে তারা জানায় যে 'অ্যাস্ট্রাজেনেকা কোভিশিল্ড' ভ্যাকসিন ৩০ নভেম্বর দেওয়া হবে। সেই অনুযায়ী আজ সকাল ১১ টার সময় টিকাদান কেন্দ্রে ২য় ডোজ টিকা দিতে গেলে, সেখানে কর্তব্যরত টিকাদান কর্মীরা জানান যে, আমি টিকা দিতে পারব না। কারণ জানতে চাইলে তিনি আমাকে প্রশ্ন করেন, ‘‘আপনি ভার্সিটির স্টুডেন্ট না?’’ আমি উত্তরে বলি ‘জি’। আমার উত্তর শুনে তিনি জানান আপনি টিকা পাবেন না। আমি অবাক হলাম এবং পুনরায় কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি আমাকে জানান যে, ভার্সিটির স্টুডেন্টদের টিকা দেওয়া হবে না। আমি তখন বললাম যে, টিকা কার্ডে সিভিল সার্জন মহোদয়ের সুপারিশ করা আছে। ঐ কর্মী আমাকে পুনরায় ২য় ডোজের জন্য সুপারিশ আনতে বলে।”
এরপরে সিভিল সার্জন মহোদয়ের অফিসে গেলে তিনি বলেন,‘‘আপনি টিকা দিতে পারবেন না। ১ম ডোজ টিকা দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছিল আপনাদের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে । আপনারা হলে উঠতে পারছিলেন না, পরীক্ষায় বসতে পারছিলেন না সেই কারণে। কিন্তু এখন সেই পরিস্থিতি নেই। আপনাদের এখানে টিকা দেয়ার কারনে আমাদের অনেক কথা শুনতে হয়েছিল। কাজেই আপনি যেখানে রেজিস্ট্রেশন করেছেন সেখান থেকেই ২য় ডোজ নিতে হবে।’’
ওই শিক্ষার্থী জানান, এসব কারণে তাকে টিকা না নিয়েই ফিরে আসতে হয়েছে।
শুধুমাত্র রিমন হোসেইনই নন দ্বিতীয় ডোজের টিকা গ্রহণ করতে গিয়ে একই ধরনের ভোগান্তির শিকার হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের মতে তাদের অনেকেরই পরীক্ষা চলমান থাকায় এই মূহুর্তে নিজ এলাকায় গিয়ে টিকা গ্রহণ সম্ভব নয়, এমন পরিস্থিতিতে তারা বিষয়টির দ্রুত সমাধান চান।
এ বিষয়ে গোপালগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিসের ডা. সাকিব বলেন, “সরকারের নির্দেশনা রয়েছে কেন্দ্র পরিবর্তন করে টিকা প্রদান করা যাবে না। কিন্তু আমরা শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে প্রথমবারে এই নির্দেশনার বাইরে গিয়েই টিকা প্রদান করেছিলাম। এসকল শিক্ষার্থীর কোনো তথ্য আমাদের সার্ভারে নেই। ফলে টিকার সংখ্যার ক্ষেত্রে অসামঞ্জস্যতা দেখা দিয়েছে এবং বেশ কিছু জটিলতা তৈরি হয়েছে। এ কারণে আমরা যাদের কেন্দ্র এখানে নেই তাদের টিকা প্রদান করছি না। তবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যদি নির্দেশনা দেয় যে শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে কেন্দ্র পরিবর্তন করে টিকা প্রদান করা যাবে তবে আমরা আবারও শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদান শুরু করবো।”
এ বিষয়ে উপাচার্য ড.একিউএম মাহবুব বলেন, “টিকা সংক্রান্ত জটিলতা নিয়ে ডিসির সাথে আলোচনা করা হবে, প্রয়োজনে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যায় আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার থেকেও দ্বিতীয় ডোজের টিকা প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”