মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ঈদ সালামি নিয়ে সরগরম ফেসবুক

  © সংগৃহীত

আগামীকাল মুসলিম ধর্মালম্বীর সবচেয়ে বড় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদের আনন্দ সববয়সী মানুষের হলেও ঈদকে ঘিরে বিশেষ করে তারুণ্যের থাকে নানান পরিকল্পনা। মূলত তরুণ প্রজন্মের কাছেই ঈদের আনন্দ সবচেয়ে বেশি। তারুণ্যের ঈদ আনন্দের বিশেষ  অনুষঙ্গ  'ঈদ সালামি'। 

ঈদের নামাজ শেষে  দলবেঁধে  বন্ধু, আত্নীয়–পরিজনের  বাসায় যাওয়া, ঈদের সালামি আদায় তারুণ্যের কাছে বিশেষ আনন্দের৷ ঈদ উপলক্ষে ছোটরা তাদের বড়দের সালাম বা কদমবুসি করে। এসময় বড়রা ছোটদের কিছু টাকা উপহার হিসেবে দিয়ে থাকেন। এটাই সালামি। ইদ সালামির রীতি  নতুন নয়,। তবে আধুনিকায়ন ও প্রযুক্তির দাপটে ঈদ সালামি দেওয়ার ও পাওয়ার রীতি এখন আগের চেয়ে অনেকটাই  বদলে  গেছে৷

গেল ২ বছর  করোনায় বিপর্যস্থ গোটা দেশ,  সুরক্ষা বলয়ে থেকেই তাই  ধর্মালম্বী মুসলিমদের 'ভার্চুয়াল' ঈদ আনন্দ  ভাগাভাগি করতে হয়েছে৷ করোনায় ঈদ আনন্দ অনেকটা  মলিন থাকলেও বাঙালি মুসলিম সংস্কৃতির চিরায়ত ঐতিহ্য  'ঈদ সালামি' আদায় উৎসবকে ভিন্নধর্মী রূপ দিয়েছে  দেশের জনপ্রিয় মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান 'বিকাশ'।

ঈদ আনন্দকে আরো বাড়িতে তুলতে গেল বছর দেশে সর্বপ্রথম মোবাইল  ব্যাংক  প্রতিষ্ঠান  বিকাশ চালু করেছে ' ঈদ সালামি' নামক বিশেষ  ফিচার। ফিচারটি বের হওয়ার পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক সহ বিভিন্ন মাধ্যমে ব্যপক হৈচৈ ফেলে দিয়েছে। খুব সহজেই এখন দেশের যেকোনো প্রান্তে বসেই  প্রিয়জন, বন্ধু, আত্নীয়– পরিজনকে ঈদের সালামি গিফট ফিচারটি  ব্যবহার করে পাঠানো যাচ্ছে৷   

বিকাশের  ব্যতিক্রমী এই গিফট ফিচারে গিফট পেয়ে মানুষ আবার শুভেচ্ছা কার্ড টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার এর মাধ্যমে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি  করে নিচ্ছে৷ বিকাশের সেন্ড  মানি অপশনে গিয়ে খুব সহজেই ফিচারটি ব্যবহার করে  ঈদ সালামি পাঠানো যাচ্ছে৷ 

একসময় বাসা-বাড়িতে গিয়ে ঈদের সালামি আদায়ের রীতি পালটে প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় এখন তা মোবাইল  ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে  আদায় করা যাচ্ছে৷ করোনায় গেল বছর ফিচারটি সর্বপ্রথম বের করে বিকাশ নামক ব্যাংক প্রতিষ্ঠান,  চলতি বছর করোনা কাটিয়ে উঠলেও আলোচনায় বিকাশে ঈদ সালামি নামক ফিচারটি। বিশেষ  করে তরুণ প্রজন্ম মেতে উঠেছে ফিচারটির ব্যবহারে। ফিচারটি ব্যবহার করে ঈদ সালামি পাঠানোর পাশাপাশি ক্ষুদ্র বার্তা ও নিজের স্বাক্ষর ও পাঠানো যাচ্ছে। 

এ প্রসঙ্গে  চট্টগ্রামের পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির  সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়ান বিন কবির বলেন, আসলে করোনার পর  প্রায় ২ বছর পর  আমাদের  ঈদ আনন্দ আগের মতো হতে যাচ্ছে। স্বভাবতই  ঈদের আনন্দের অন্যতম একটা  বিশেষ মাত্রা যোগ  করে ঈদ সালামি। প্রযুক্তির আধুনিকায়নে বিকাশের ভিন্নধর্মী ফিচারটি ব্যপক প্রশংসিত। কেউ দেশের যেখানেই থাকুক না কেন ফিচারটি  ব্যবহার  করে বন্ধু, প্রিয়জন, আত্নীয়–স্বজনকে  ফিচারটি ব্যবহার  করে ঈদের শুভেচ্ছা কার্ড  পাঠিয়ে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে পারছে৷ 

কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী আসিফুর রহমান বলেন, আসলে তারুণ্যের কাছে 'ঈদ সালামি' বিষয়টি অন্যরকম আনন্দের। বন্ধুবান্ধব, আত্নীয়–পরিজনের বাসায় গিয়ে ঈদ সালামি আদায় ও ঈদের কুশল বিনিময়ের অনুভূতি হয়তো  মোবাইল  ব্যাংকিংয়ে পাঠানো শুভেচ্ছা কার্ডে  পাওয়া যাবেনা তবে বিষয়টি ইতিবাচক ও ভিন্নরকম অভিজ্ঞতা । 

বিকাশে সালামি পেয়ে জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক ফেসবুকের এক স্ট্যাটাসে লেখেন, ছোটবেলায় আমাদের রংপুরের বাসায় সালামির প্রচলন ছিল না। আমরা কদমবুসিও করতাম না। মুন্সিপাড়ায় মামাবাড়িতে গেলে মামাত ভাইবোনের সঙ্গে বের হওয়ার পর মজার অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতাম। দেখতাম, ওরা লাইন ধরে কদমবুসি করছে, আর সিকি-আধুলি কিংবা চকচকে নোট পাচ্ছে। তখন ওদের দেখাদেখি আমিও ধুপধুপ করে মুন্সিপাড়ার অচেনা মুরুব্বিদের সালাম করছি, আর আমার পকেটেও ভরে যাচ্ছে কয়েনে আর নতুন কড়কড়ে নোটে। কী মজা!

তিনি আরও লেখেন, বড় হওয়ার পর আমি তাই ছোটদের সালামি দিই। তা সে আমাকে সালাম করুক আর না করুক। দেবার আগে তো একটু মজাও করতে হয়! "চাচা, সালামি দেবেন না?" "দিতে পারতাম, কিন্তু টাকা মানে তো হাতের ময়লা।" ওরাও কম নয়। বলে, "চাচা বিকাশে দেন।" আচ্ছা তাই তো। বিকাশে সালামি দেওয়া তো ভারি মজা। আবার একটা বার্তাও লেখা যায়। আমার জন্য কথা বলার চেয়ে লেখা সোজা। ওটা করেই তো খাই। কাজেই সালামি দিলাম বিকাশে, বার্তা দিলাম অনায়াসে। ঈদ মোবারক। সবার ঈদ নিরাপদ হোক।

পঞ্চাশোর্ধ নুরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বাচ্চারা ঈদের দিন ঈদ সালামি পেয়ে খুশি হয়৷ ঈদের দিন হয়তো  ব্যস্ততার কারণে সবার কাছে যাওয়ার সুযোগ হয়না।  তবে বিকাশের ভিন্নধর্মী ফিচার  ব্যবহার করে খুব সহজেই ঈদ গিফট পাঠানোর মাধ্যমে যেকোনো জায়গা থেকেই ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার সুযোগ এসেছে এ এক ভিন্ন অভিজ্ঞতা। 

ঈদকে কেন্দ্র করে বিকাশের ব্যতিক্রমী  বিশেষ এই ফিচারটি  রীতিমতো জনপ্রিয়  হয়ে উঠেছে। শুভেচ্ছা কার্ড শেয়ার সহ বিভিন্ন মজাদার স্ট্যাটাসে  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে হৈচৈ চলছে। 

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ‘ঈদ সালামি’ আদায় প্রসঙ্গে রফিক  নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, সবাই চাঁদের পাশাপাশি আমার রকেটখানা একটু দেখবেন। আমার টেলিটক নাম্বারের শেষে ৫ যোগ করবেন।

আশিক  রহমান নামে একজন লিখেছেন, ঈদের চাঁদ আকাশে সালামি দিন বিকাশে। 

প্রসঙ্গত, বিকাশে ‘ঈদ সালামি’ নামে একটি অপশনে গিয়ে খুব সহজেই এবার প্রিয়জনের কাছে সালামি পৌঁছে দেওয়া যাবে। বিকাশ অ্যাপের ‘সেন্ড মানি’ ফিচারে গেলেই ‘ঈদ সালামি’ অপশনটি পাওয়া যাবে।


সর্বশেষ সংবাদ