কী হলো দারাজের

নতুন লুকে আত্মপ্রকাশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি
নতুন লুকে আত্মপ্রকাশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি  © টিডিসি ফটো

নতুন বছরে নতুন প্রত্যয়ে নিজেদের নতুন লোগো ও ব্র্যান্ড লুক উন্মোচন করেছে দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষস্থানীয় ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম দারাজ। প্রতিষ্ঠানটির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজের প্রোফাইল পিকচার পরিবর্তনের মধ্যদিয়ে গেল ২৭ ডিসেম্বর নতুন লোগো উন্মোচনের সূচনা হয়। এতে প্রতিষ্ঠানটির গ্রাহকদের মাঝে এক ধরনের রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।

তবে বেশিরভাগ গ্রাহক আন্দাজ করে নিয়েছেন দারাজের এমন পরিবর্তনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি তার গ্রাহকদের জন্য নতুন কিছু নিয়ে আসছে। সাদিয়া রহমান নামে একজন গ্রাহক পরিবর্তীত প্রথম প্রোফাইল পিকচারের মন্তব্যে লিখেছেন, ‘আগের লোগোটি ভালো ছিলো। তবে নতুন কিছু আসছে মেবি। শুভ কামনা দারাজ।’

আরও পড়ুন: দারাজ বাংলাদেশ ক্রিকেট দল?

লোগো উন্মোচনে দারাজ ২৫ শতাংশ হারকে বেছে নিয়েছে। প্রথমে দারাজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজটির প্রোফাইল পিকচারটি সাধা রঙের উপর একাধিক রঙে শুধুমাত্র ‘ডি’ বর্ণটি ছিল। এরপর হালকা পেস্ট কালারের উপর কমলা কালারের ‘ডি’ নিয়ে নতুন বছরে নতুন লুকে হাজির হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

প্রথমে ২৭ ডিসেম্বর ২৫ শতাংশ, এরপর ৩ জানুয়ারি ৫০ শতাংশ, ১০ জানুয়ারি ৭৫ শতাংশ এবং সর্বশেষ ১৬ জানুয়ারি শতভাগ হালকা পেস্ট রঙ ধারণ করে দারাজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজের প্রোফাইল পিকচার। এরপরের দিনই অর্থাৎ ১৭ জানুয়ারি হালকা পেস্ট কালারের উপর কমলা রঙের ‘ডি’ নিয়ে নতুন লুক উন্মোচন উন্মোচন করে দারাজ।

আরও পড়ুন: দারাজের নামে প্রতারণার নতুন ফাঁদ

দারাজ দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার একটি লজিস্টিকস কোম্পানি এবং অনলাইন মার্কেটপ্লেস। ২০১২ সালে পাকিস্তানে দারাজ প্রতিষ্ঠিত হয়। রকেট ইন্টারনেটের উদ্যোগে মুনীব ময়ূর (প্রতিষ্ঠাতা) এবং ফারেস শাহ্ (সহ-প্রতিষ্ঠাতা) দারাজকে অনলাইন ই-কমার্স ফ্যাশন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।

বাংলাদেশ, মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান এবং নেপালে তাদের পরিষেবা প্রদান করে। বুজার্কি মিক্কিলেসেন দারাজের বর্তমান প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। রকেট ইন্টারনেট ২০১৮ সালে চীনের আলিবাবা গ্রুপের কাছে ই-কমার্স কোম্পানি দারাজ গ্রুপকে বিক্রি করে দেয়।

এদিকে, প্রতিবার লোগো পরিবর্তন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে গ্রাহকের মাঝে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা গেছে। বেশিরভাগ গ্রাহক এ পুরো ব্যাপারটিকে হাসির ছলে নিয়েছেন। সেটি প্রত্যোকটি পোস্টের প্রতিক্রিয়া দেখলেই সহজে বোঝা যাবে।

তবে পরিবর্তনের এ সময়ে অনেকের হতাশাও দেখা গেছে। যোবায়েদ ভূঁইয়া নামে একজন গ্রাহক লিখেছেন, ‘‘কি ব্যাপার? একটু একটু করে তো পুরোটাই পার্সেল বানিয়ে ডেলিভারি করে দিতেছেন! তারপর যে কি হয় আল্লাহ জানে?’’ হাসান ওয়াহিদ নামে একজন গ্রাহক লিখেছেন, ‘‘চিন্তায় ফেলে দিলেন ব্রোহ’’।

আরও পড়ুন: বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণদের জন্য শুরু হল ‘দারাজ এক্সপেডাইট’

সবাই হতাশ হননি। কেউ কেউ আসা আর বিশ্বাস রেখেছেন প্রতিষ্ঠানটির উপর। আদনান সামি আলভি নামে একজন গ্রাহক প্রোফাইল পিকচারের মন্তব্যের ঘরে লিখেছেন, নতুন কিছু আসছে, আমরা সে জন্য অপেক্ষ করছি। রবিন অর্কও অনেক আদনানের মত মন্তব্য করেছেন। তিনি লিখেছেন, নিশ্চই নতুন কিছু আসতেছে।

তবে গ্রাহকদের সব জল্পনা-কল্পনা উড়িয়ে দিয়েছেন দারাজ বাংলাদেশ লিমিটেডের চিফ মার্কেটিং অফিসার মো. তাজদীন হাসান। তিনি বলেছেন, “নতুন লোগো উন্মোচনের পেছনে রয়েছে দীর্ঘ ১ বছরের কঠোর পরিশ্রম ও একাগ্রতা। দারাজের এই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্র্যান্ড এলিমেন্টটিকে আরও সমসাময়িক, আধুনিক ও অর্থপূর্ণ করে গড়ে তুলতে দায়িত্বপ্রাপ্ত ক্রিয়েটিভ এজেন্সি, ডিজাইন স্টুডিও নিবিড় গবেষণা চালায়, মাসের পর মাস চলে নানাবিধ মিটিং, আলোচনা, ও গবেষণা।

নতুন প্রকাশিত লোগোর বিষয়ে তাজদীন বলেন, ‘‘অবশেষে দারাজের অঙ্গীকার ‘শপিং ওডিসি’ কে প্রাধান্য দিয়ে ‘অ্যা বক্স অফ ইনফিনিট পসিবিলিটিস‘কে কেন্দ্র করে নির্মাণ করা হয় আজকের প্রকাশিত লোগো।’’

দারাজ বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোস্তাহিদল হক বলেন, দারাজ সবসময়ই দেশের ইন্ডাস্ট্রি ও তার গ্রাহকদের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাই তাদের কেনাকাটার অভিজ্ঞতায় নতুন মাত্রা যোগ করতে এবং ই-কমার্স সেক্টরকে সম্পূর্ণ নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে দারাজ বাংলাদেশ একটি সম্পূর্ণ রূপান্তর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আশা করছি এই পরিবর্তন দারাজের গ্রাহকদের একটি আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতা প্রদান করবে যা আগে কখনো তারা দেখেনি।


সর্বশেষ সংবাদ