নুর আজ ভিপি, হামলাকারীদের কী খবর?
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ৩০ জুন ২০১৯, ০৫:৩৪ PM , আপডেট: ৩০ জুন ২০১৯, ০৫:৩৪ PM
গত বছরের ৩০ জুন, কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চলায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে হামলার সময় ঢাবি শিক্ষক জাভেদ আহমেদের পা জড়িয়ে ধরে বাঁচার চেষ্টা করেন ছাত্র অধিকর সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নুর। গত মার্চে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহ-সভাপতি (ভিপি) নির্বাচিত হন তিনি।
এছাড়া ওইদিন আরও বিভিন্ন স্থানে কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনা দেশজুড়ে আলোচনার ঝড় তোলে। ওই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। ৩০ জুনকে স্মরণ করে আজকে নেতা-কর্মীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন।
সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হাসান আল মামুন তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, 'নির্মমতার ১ বছর! আজ সেই ৩০ জুন, যে দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীর সামনে হামলার শিকার হই আমি, নুরসহ অনেকেই। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস নুর আজ ডাকসুর ভিপি আর হামলাকারীরা রাজু ভাস্কর্যে পদের আশায় আমরণ অনশনে'।
যুগ্ম আহবায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন লেখেন, আজ সেই ৩০ জুন, হামলাকারীরা এখনো বুক ফুলিয়ে ঘুরে, আর বিচারের বাণী লজ্জায় মুখ লুকিয়ে কাঁদে!
কোটা সংস্কার আন্দোলনে যুক্ত আরেক নেতা মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন- 'গতবছর এই দিনে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীর সামনে পূর্বনির্ধারিত সংবাদ সন্মেলন ছিল। হাসান আল মামুন, নুরুল হক নুর, ফারুক হাসানসহ অনেক এ কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে ছিল। আমি, মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন, আতাউল্লাহ পাবলিক লাইব্রেরি থেকে মিছিল নিয়ে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির দিকে আসতেছিলাম। মিছিল যখন কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে আসল তখনই ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। হামলায় আমি আঘাত পেয়ে ড্রেনে পড়ে যাই। আতাউল্লাহ আঘাত প্রাপ্ত হয়। ওখান থেকে আমাদের আবার দৌড়ানি দেয়।একপর্যায়ে দৌড়ে পাবলিক লাইব্রেরির দিকে যাই পিছনে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আসছে! হঠাৎ দেখতে পেলাম লাইব্রেরিতে দৌড়ে ঢুকতে গিয়ে দুজন আপু পড়ে গেছে। তাদেরকে ভালভাবে লাইব্রেরিতে ঢুকিয়ে দিলাম কিন্তু আমি আর বের হতে পারলাম না কারণ বাহিরে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা অবস্থান করতেছে। ভিতরে ঢুকে যখনই ফেইসবুক এ ঢুকলাম তখন আর নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারতেছিলাম না! নূরের উপর এরকমই অমানবিক, নিষ্ঠুর, বর্বর সন্ত্রাসী হামলা করেছে ছাত্রলীগ! কয়েক মিনিট পর আমাকে চেক দেওয়ার জন্য একটা গ্রুপ লাইব্রেরির ভিতরে ঢুকছে দেখে বের হয়ে গেছে। এভাবে বেশ কয়েকটা গ্রুপ ভিতর এ ঢুকে আমাকে দেখছে।
আমি ফেইসবুক এ পোস্ট করতেছি তখনই পিছন থেকে একজন বলতেছে তোমাকে বড় ভাই ডাকতেছে! আমি বলছিলাম কোন বড় ভাই এখানে আসতে বল। পিছনে তাকিয়ে দেখি সেই বড় ভাই উপস্থিত! আমাকে কোমর এর বেল্ট এ ধরে টেনে কিল ঘুষি মারতে মারতে রুম থেকে বের করে এবং লাথি মারতে মারতে তিনতলা থেকে নিচতলায় নিয়ে আসে! তখন একজন বলে এখানে মারা যাবে না সিসি ক্যামেরা আছে! ওখান থেকে মারতে মারতে লাইব্রেরীর মুল ফটক এ নিয়ে আসে। ওখানে প্রায় ৩৫-৪০ জন ছিল আমি একজন! আমাকে শোয়ায় রাখল এবং কাঁচা গাছ দিয়ে পাতে মারতে লাগল আর বলতে লাগল স্লোগান দে স্লোগান দে! সরকারের উন্নয়ন তোদের ভালো লাগে না সে জন্য সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে চট্টগ্রাম থেকে এখানে আসছস! দুজন আমার মুখের ভিতর আঙ্গুল ঢুকিয়ে দিছিল! মারতে মারতে আমার পায়ের হাড়ে প্রচুর আঘাত পাই আর হাটতে পারি না! কয়েকজন আমাকে চারুকলায় নিয়ে যেতে চায় কয়েকজন পুলিশে দিতে চায়!
এক পর্যায়ে পুলিশকে দিয়ে দেয় এবং পুলিশ ওখান থেকে চিকিৎসার কথা বলে ধানমণ্ডি থানায় নিয়ে যায় দুপুরে খাবার ও দেয়নি তারা! পরে শারিরীক অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালে নিয়ে যায় কারো সাথে যোগাযোগ করতে দেয়নি! তিনদিন পর জেলে পাঠিয়ে দেয়! আজও সে বর্বর হামলার বিচার হয়নি! এতটুকু বলতে পারি যতই হামলা, মামলা হোক অন্যায়ের প্রতিবাদ করে যাব।কেউ দমিয়ে রাখতে পারবে না।'