প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় ওসির মেয়েকে মারধর

অভিযুক্ত তাওসিফ মাহমুদ স্বাধীন
অভিযুক্ত তাওসিফ মাহমুদ স্বাধীন  © সংগৃহীত

প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় একটি থানার ওসির এসএসসি পড়ুয়া মেয়েকে তার স্কুলের সামনে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মারধরের শিকার স্কুলছাত্রীর মা মৌসুমী আক্তার দুই যুবকসহ চারজনের নামে কোতয়ালি মডেল থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) রাতে এ অভিযোগ দেওয়া হয়।

অভিযুক্তরা হলেন, নগরীর মতাসার এলাকার তাওসিফ মাহমুদ স্বাধীন (২২), আসাদ ইসলাম (২৩), বগুড়া রোড দিলবাগ গলির ফাতেমা খাতুন চম্পা (৪৫) ও তার কিশোরী মেয়ে।

ওই ছাত্রী আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম ছরোয়ারের মেয়ে। চাকরির সুবাদে আগৈলঝাড়ায় থাকেন। তবে ছেলে মেয়ে পড়ালেখার জন্য পরিবার থাকে বরিশাল নগরীতে।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, ওসির মেয়ে এবং আরেক কিশোরী একই ক্লাসে পড়ালেখা করে, একসঙ্গে কোচিংও করতো। কয়েক মাস আগে ওই কিশোরীর বাড়িতে গিয়ে আসাদ ইসলামের সঙ্গে ঘনিষ্ট অবস্থায় পায় সে। পরে অনুরোধে বিষয়টি গোপন রাখে। তবে বিষয়টি ফাঁস হওয়ার আশঙ্কায় ফন্দি আটে তাকে ফাঁদে ফেলার। 

আরো বলা হয়েছে, তাদের পরিকল্পনা ছিল স্বাধীনকে দিয়ে প্রস্তাব দিয়ে তার আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারণ করে রাখবে। এর কিছুদিন পর স্বাধীন তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলেও যাওয়া-আসার পথে তাকে উত্ত্যক্ত করা শুরু করে। গত ১১ সেপ্টেম্বর স্বাধীন তার কয়েকজন সহযোগী নিয়ে ওই ছাত্রীকে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে।

তবে তাতে রাজি না হলে স্বাধীন তাকে লাঞ্ছিত ও মারধর করে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। পরে ওই ছাত্রী চিৎকার করলে পথচারীরা এগিয়ে আসলে তারা পালিয়ে যায়। এরপর গা ঢাকা দিয়েছিল স্বাধীন। তবে ফের উত্ত্যাক্ত করতে শুরু করে। একপর্যায় গত ৩০ নভেম্বর তাকে ডেকে স্কুলের সামনে নিয়ে গিয়ে তাকে মারধর করেন অভিযুক্তরা।

আরো পড়ুন: দুই মেয়ের সামনে মায়ের মৃত্যু, কে কাকে সান্ত্বনা দেবে?

এ বিষয়ে ভুক্তভোগীর মা মৌসুমী আক্তার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘শেফার বাবাকে বিষয়টি জানানো হলে তিনি ধৈর্য ধরতে বলেন। পাশাপাশি স্কুলের শিক্ষককে বিষয়টি জানান। এরপর থেকে মেয়েকে হয়রানি শুরু করে। সম্প্রতি এটি বেড়ে গেছে। লজ্জায় সে বাসা থেকে বের হয় না। কয়েকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে।’

ওই ছাত্রীর বাবা আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম ছরোয়ার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘প্রথমে এ ঘটনা এড়িয়ে যেতে চেয়েছি। ভেবেছিলাম স্কুল শিক্ষককে জানানোর পর আমার মেয়েকে হয়রানি করা বন্ধ করবে। কিন্তু অবস্থা এমন পর্যায়ে ঠেকেছে, আইনি ব্যবস্থা ছাড়া উপায় নেই।’

বরিশালের কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিমুল করিম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আগৈলঝাড়া থানার ওসির স্ত্রী লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এর সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’


সর্বশেষ সংবাদ