দুই মেয়ের সামনে মায়ের মৃত্যু, কে কাকে সান্ত্বনা দেবে?

মায়ের লাশের পাশে ওহি (বাঁয়ে)। তাকে
মায়ের লাশের পাশে ওহি (বাঁয়ে)। তাকে   © সংগৃহীত

রাজধানীর বাংলাদেশ নেভি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী ওহি। তার ক্লাস-পরীক্ষা থাকায় ছোট মেয়ে রাহিকে নিয়ে ব্যাটারিচালিত রিকশাযোগে ওই স্কুলে যাচ্ছিলেন সাবিনা ইয়াছমিন (৩১)। পথে ভাষানটেক নেভি মার্কেটের সামনের রাস্তায় ট্রাস্ট পরিবহণের একটি বাস রিকশাটিকে ধাক্কা দেয়। তিনজনই রিকশা থেকে ছিটকে পড়েন। পরে পথচারীরা তাদের স্থানীয় মার্কস হাসপাতালে নেন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান সাবিনা।

হুমায়রা ইয়াছমিন ওহি (৯) ও রাহিয়া ইয়াছমিন রাহিও (৭) আহত হয়েছে। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। মঙ্গলবার ঢামেক হাসপাতালে ট্রলিতে থাকা মায়ের লাশের ওপর বারবার আছড়ে পড়ছিল ওহি। ‘মা কথা বলো, একবার কথা বলো, তোমার কী হয়েছে মা’ বলে  বিলাপ করছিল।

আর ছোট মেয়ে রাহি চিৎকার করে বলছিল, ‘আমার মায়ের কী হয়েছে, মাকে সুস্থ করো, ডাক্তার আঙ্কেল আমার মাকে বাঁচান।’ এ সময় বাবা রফিকুল ইসলামও তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু কিছুতেই কান্না ও আহাজারি থামানো যাচ্ছিল না তাদের। দুই শিশুর আর্তনাদ দেখে লোকজন চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি। কে কাকে সান্ত্বনা দেবেন বুঝতে পারছিলেন না।

আরো পড়ুন: বাস-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ১৯

সাবিনা সিরাজগঞ্জের কাজীপুরের বাসিন্দা নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের স্ত্রী। তাঁর সাবিনার ভাই মামুন জানান, স্বামী রফিকুল ইসলাম ও দুই মেয়েকে নিয়ে ভাষানটেক বিআরপি কলোনিতে থাকতেন সাবিনা। মিরপুর-১৪ নম্বরের ভাষানটেক নেভি মার্কেটের সামনে মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া গণমাধ্যমকে জানান, সাবিনাসহ তাঁর দুই মেয়েকে দুপুরে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরে চিকিৎসক সাবিনাকে মৃত ঘোষণা করেন। দুই মেয়ে সামান্য আহত হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

ভাষানটেক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন বলেন, লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি হয়েছে ঢামেক হাসপাতালে। স্বজনরা মামলা করতে চাইলে নেওয়া হবে।


সর্বশেষ সংবাদ