সম্পত্তি লিখে না দেয়ায় বাবাকে মাদকাসক্ত কেন্দ্রে দিলো সন্তানরা

আবুল কালাম আজাদ
আবুল কালাম আজাদ  © সংগৃহীত

৩৮ বছর সংযুক্ত আরব আমিরাতে কাটিয়েছেন। পরিবার ও সন্তানদের লেখাপড়ার জন্য ঘাম ঝরিয়েছেন বিদেশে।ইংলিশ মিড়িয়ামে পড়িয়েছেন সন্তানদের। উচ্চ শিক্ষিত চার সন্তানের একজন থাকেন ইংল্যান্ডে আরেকজন দুবাইতে। বাকী দুই মেয়েও দেশে চাকরি করেন। ২০১৭ সালে দেশে ফেরার চার মাসের মাথায় স্ত্রীকে হারান। এরপরই সম্পত্তি নিজেদের নামে লিখে দেয়ার জন্য চাপ দেয় সন্তানরা। অস্বীকৃতি জানালে ঘর ছাড়া হন প্রবাস ফেরত এই বাবা। দীর্ঘদিন গা ঢাকা দিয়েও লাভ হয়নি। খোঁজ পাওয়ার পর সন্তানরা তাকে মাদকসেবী বানিয়ে মাদকাসক্ত কেন্দ্রে দিয়ে দেয়।

এই ঘটনা ঘটে বন্দর নগরী চট্টগ্রামে। বাবার ওপর তার সন্তানদের নির্মমতা যেন সিনেমাকেও হার মানায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সম্পত্তি লিখে দিতে রাজি না হওয়ায় সন্তানদের নির্যাতনে ঘর ছেড়েও রেহাই পাননি ওই বাবা। খুঁজে বের করে মাদকাসক্ত সাজিয়ে পাঠানো হয় মাদক নিরাময় কেন্দ্রে। ৫২ দিন পর সেখান থেকে হতভাগ্য পিতাকে উদ্ধার করে পিবিআই।

হতভাগ্য ওই বাবার নাম আবুল কালাম আজাদ। কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় বাড়ি। সেখানে তার ৬২ কাঠা জমি আর চট্টগ্রাম শহরে ৬ কাঠার ওপর সেমিপাকা ঘর রয়েছে।

আবুল কালাম আজাদ জানান, বড় ছেলে ইঞ্জিনিয়ার। থাকে দুবাইতে। ছোট ছেলে লন্ডনে। দুই মেয়েও দেশে ভালো চাকরি করেন। স্ত্রী মারা যাওয়ার পর সন্তানরা তাদের নামে সম্পত্তি লিখে দেয়ার জন্য বলে। জবাবে তিনি সম্পত্তির আইনগত অধিকার সন্তানদের রয়েছে বলে জানান। কিন্তু এখনই তিনি লিখে দিতে চান না। এরপরই ক্ষেপে যান সন্তানরা। ঘর ছাড়া হন তিনি।

পরে তিন বছর পর বাবার সন্ধান পান সন্তানরা। বিভিন্ন মাদকে আসক্ত ও পাগল বানিয়ে মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে আবুল কালামকে পাঠিয়ে দেয় তার মেয়ে। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে পিবিআই। বর্তমানে আদালতের নির্দেশে আবুল কালাম নিজ জিম্মায় রয়েছেন। 

এ বিষয়ে পিবিআই কর্মকর্তা ইখতেয়ার উদ্দিন জানান, তথ্য পেয়ে তারা মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে যান। সেখান থেকে আবুল কালামকে উদ্ধার করেন। পরে আদালতের নির্দেশে নিজ জিম্মায় ছেড়ে দেয়ো হয়। তিনি আরও বলেন, সন্তানদের বিরুদ্ধে এখনো কোনো অভিযোগ দায়ের করেননি তিনি। প্রয়োজনে সন্তানদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন পিবিআইয়ের এই কর্মকর্তা।


সর্বশেষ সংবাদ