প্রকাশ্যে স্বামীকে কুপিয়ে হত্যা, সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যুদ্ধে স্ত্রী

বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে শত শত লোকের উপস্থিতিতে স্ত্রীর সামনে শাহ নেয়াজ রিফাত শরীফ (২৫) নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এরই মধ্যে রিফাতকে কুপিয়ে হত্যার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তা ভাইরাল হয়ে যায়।

নিহত রিফাত শরীফের বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলার ৬নং বুড়িরচর ইউনিয়নের বড় লবণগোলা গ্রামে। তার বাবার নাম আ. হালিম দুলাল শরীফ। মা-বাবার একমাত্র সন্তান ছিলেন রিফাত। এর আগে সকালে গুরুতর অবস্থায় রিফাতকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

এদিকে রিফাতকে কুপিয়ে হত্যার একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তা ভাইরাল হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, ধারালো দা দিয়ে রিফাতকে একের পর এক কোপ দিতে থাকে দুই যুবক। ওই সময় রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি দুই যুবককে বারবার প্রতিহতের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। ঘটনাটি পুলিশের সিসি ক্যামেরার আওতায় ছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রিফাতকে কুপিয়ে হত্যার ভিডিওতে যে দুই যুবককে দেখা যায় তাদের একজনের নাম নয়ন বন্ড এবং আরেকজন রিফাত ফরাজী। তারা ছিনতাই ও মাদক ব্যবসাসহ নানা অপকর্মে জড়িত। এসব ঘটনায় তারা একাধিকবার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন।

নিহতের পারিবারিক সূত্র ও পুলিশ জানায়, নিহত রিফাত ২ মাস আগে নয়াকাটা মাইঠা এলাকার মো. কিশোরের মেয়ে আয়শা সিদ্দিকা মিনিকে বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকে মিনিকে উত্ত্যক্ত এবং ফেসবুকে অশ্লীল ছবি পোস্ট করে কলেজ ব্রাঞ্চ রোডের ধানসিড়ি এলাকার আবুবকর সিদ্দিকের ছেলে নয়ন (২৫)। নয়ন মিনির সাবেক প্রেমিক দাবি করায় রিফাত ও নয়নের মধ্যে দ্বন্দ্বের শুরু হয়।

এদিকে যোগাযোগ করা হলে নয়নের মা সাহেদা বেগম জানান, সাত মাস আগে বাজারের কাজি অফিসে পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির সাথে নয়নের বিয়ে হয়। পরে মিন্নির সাথে রিফাতের সম্পকের বিষয়টি জানতে পারে নয়ন। এ নিয়ে তাদের দাম্পত্য কলহে এক পর্যায়ে বিচ্ছেদে রূপ নেয়। মিন্নি মাস দুয়েক আগে নয়নকে ডিভোর্স দেয়ার বিষয়টি জানিয়ে দেয়। এরপর মিন্নি রিফাতকে বিয়ে করলে বিরোধ চূড়ান্তে রূপ নেয়।

নিহত রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ জানান, ২ মাস আগে রিফাত পুলিশ লাইন এলাকার কিশোরের মেয়ে আয়শা আক্তার মিন্নিকে বিয়ে করে। এরপর নিজের সাবেক স্ত্রী দাবি করে পশ্চিম কলেজে সড়কের নয়ন নামের এক যুবক মিন্নিকে উত্যক্ত করতে শুরু করে। এছাড়া ফেসবুকে আপত্তিকর ছবি পোস্ট করে। এ নিয়ে রিফাতের সাথে নয়নের বিরোধিতা সৃষ্টি হয়। এর জেরে সকালে নয়ন ও রিফাত ফরাজী আমার সন্তান রিফাত শরীফকে চাপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে ফেলে রেখে যায়।

পড়ুন: অর্ধযুগেও মেলেনি চাকরি, অনশনে প্রতিবন্ধী কণা

পডুন: মাদ্রাসায় কেন বাম ছাত্র সংগঠনের শাখা নেই?

পড়ুন: হামলাকারী ফরাজী, ছিচকে চোর থেকে বরগুনার ত্রাস

এ বিষয়ে বরগুনা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবীর হোসেন মাহমুদ বলেন, ঘটনাটি যেখানে ঘটেছে সেখানে থানা পুলিশের সিসি ক্যামেরা রয়েছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে খুনিদের শনাক্ত করা হয়েছে। অভিযান চলছে, শিগগিরই খুনিদের গ্রেফতার করবে পুলিশ।

পড়ুন: যৌনতা নিঃসন্দেহে সুন্দর, তবে কদর্য উপস্থাপন উচিত নয়

পড়ুন: কলেজে ভর্তি: মুসলিম-অমুসলিম ভিন্ন ফি কেন?


সর্বশেষ সংবাদ