বেরোবিতে দুই সাংবাদিককে ছাত্রলীগ নেতার মারধর

বাঁ থেকে মারধরকারী ছাত্রলীগ নেতা রাসেল ও জয় (লাল কালি চিহ্নিত)
বাঁ থেকে মারধরকারী ছাত্রলীগ নেতা রাসেল ও জয় (লাল কালি চিহ্নিত)

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) আবাসিক হলের বৈধ সিটে উঠতে গিয়ে ছাত্রলীগের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত দুই সাংবাদিক। মঙ্গলবার শহীদ মুখতার এলাহী হলে ছাত্রলীগ বেরোবি শাখার সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুল হাসান জয়ের নেতৃত্বে সাংবাদিকদের মারধর করা হয়।

মারধরের শিকার দুই সাংবাদিক হলেন, দৈনিক সংবাদের প্রতিনিধি ও বেরোবি সাংবাদিক সমিতির কোষাধ্যক্ষ আল আমীন হোসেন ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের বেরোবি প্রতিনিধি ও বেরোবি সাংবাদিক সমিতির যুগ্ন সম্পাদক সৌম্য সরকার।

মারধরের শিকার দুই সাংবাদিক জানান, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ওই হলে দুইটি সিট বৈধভাবে বরাদ্দ দেওয়া হলেও হল প্রশাসন ঐ দুই সিট ফাকা করে দিতে পারেননি। ফলে দীর্ঘদিন থেকে ওই সিটে উঠতে পারছিলেন না তারা। একপর্যায়ে হল প্রশাসন হলের ওই সিট ফাকা করে দিতে অপারগতা প্রকাশ করে।

এবিষয়ে কথা বলার জন্য আজ মঙ্গলবার ওই দুই সাংবাদিক বেরোবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি সাইফুল ইসলামকে সাথে নিয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তুষার কিবরিয়া ও হল সভাপতি হাসান আলীর সাথে দেখা করতে যান। ছাত্রলীগের সভাপতি তুষার কিবরিয়া তাদেরকে দুইটি সিট দেখিয়ে দিয়ে সেখানে উঠতে বলেন। পরে তার কথামত তারা সিটে উঠতে গেলে প্রথমে সৌম্য সরকারকে কোনো কথা ছাড়াই মারধর শুরু করেন ছাত্রলীগ নেতা মাহমুদুল হাসান জয়। পরে তাকে সিড়ি থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়া হয়। এসময় আল আমীন এগিয়ে গেলে তাকেও মারধর শুরু করেন জয়ের নেতৃত্বে আরও কয়েকজন। তাকে তিন তলা থেকে নীচ তলা পর্যন্ত নামাতে নামাতে অনবরত মারধর করেন তারা। এসময় আল আমীন চিৎকার করলে জয়ের অনুসারী ছাত্রলীগ কর্মী রাসেল তার গলা চেপে ধরেন এবং চিৎকার করতে নিষেধ করেন। পরে কয়েকজন এসে তাদের দুইজনকে উদ্ধার করে। তাদের চিৎকারে নীচে নেমে আসেন শাখা ছাত্রলীগের সভপতি তুষার কিবরিয়া ও হল সভাপতি হাসান আলী। তারা মারধরের শিকার সাংবাদিকদের ডেকে নিয়ে হলের গেস্ট রুমে বসিয়ে মাহমুদুল হাসান জয়ের কাছে মারধরের কারণ জানতে চান। এসময় তাদের উপরও তেড়ে আসেন জয়। পরে ঘটনার জন্য ভুল শিকার করে ওই দুই সাংবাদিককে হলে উঠতে বলেন।

এসময় জয় বলেন, মারধর করেছি যা করার করেন। এদিকে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বেরোবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগ সভপতি তুষার কিবরিয়া বলেন, এটি অনাকাঙ্ক্ষিত ছিল। আমার এখতিয়ারের বাইরে এই ঘটনা ঘটেছে। আমরা মীমাংসার চেষ্টা করছি।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন বলেন, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।


সর্বশেষ সংবাদ