যুবলীগ নেতার গুলিতে রিকশাচালক নিহত, গুলিবিদ্ধ আরও ২

যুবলীগ নেতার গুলিতে নিহত রিকশাচালক মামুনের স্বজনদের আহাজারি
যুবলীগ নেতার গুলিতে নিহত রিকশাচালক মামুনের স্বজনদের আহাজারি  © সংগৃহীত

পাবনায় এক যুবলীগ নেতার পিস্তলের গুলিতে মামুন হোসেন (২৬) নামের এক রিকশাচালক নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই ঘটনায় আরও দুই ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গতকাল বুধবার রাত ৯টার দিকে পাবনা জেলার ঈশ্বরদী পৌর সদরের পশ্চিম টেংরি কড়ইতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত রিকশাচালক মামুন হোসেন ইশ্বরদী পৌরসভার পিয়ারাখালী মহল্লার মানিক হোসেনের ছেলে। আর গুলিবিদ্ধ দুজন হলেন রকি হোসেন (২৬) ও সুমন হোসেন (২৮)।

প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, স্থানীয় যুবলীগ নেতা আনোয়ার হোসেনের গুলিতে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেন ঈশ্বরদী পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর কামাল উদ্দিনের ভাই। অভিযুক্ত অপর দুজন হলেন ১ নম্বর ওয়ার্ডের ছাত্রলীগ নেতা হৃদয় হোসেন ও ছাত্রলীগ কর্মী ইব্রাহিম হোসেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাত ৯টার দিকে কড়ইতলা এলাকায় একটি নসিমন থামানোর চেষ্টা করেন কয়েক জন যুবক। এ সময় পেছনে থাকা একটি লেগুনা নসিমনটির সঙ্গে ধাক্কা লেগে লেগুনার সামনের কাচ ভেঙে যায়।

এতে নসিমনচালকের চাবি কেড়ে নিয়ে তাঁর কাছ থেকে জরিমানা দাবি করেন লেগুনাচালক। এর জের ধরে দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতি শুরু হয়। একপর্যায়ে নসিমনচালক ঘটনাস্থল থেকে চলে যান।

কিছুক্ষণ পর কয়েকজন যুবক এসে নসিমনচালককে কেন তাড়ানো হয়েছে—এ বিষয়ে লেগুনাচালকর পক্ষের লোকজনের কাছে জানতে চান। এতে আবারও দুই পক্ষের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা শুরু হয়। বিষয়টি দেখে আশপাশের লোকজন এসে তাঁদের থামানোর চেষ্টা করলে যুবলীগ নেতা আনোয়ার হোসেন তাঁর কোমরে থাকা পিস্তল বের করে গুলি করেন। এতে স্থানীয় রিকশাচালক মামুন হোসেন, স্থানীয় বাসিন্দা রকি হোসেন ও সুমন হোসেন গুলিবিদ্ধ হন।

স্থানীয়র গুলিবিদ্ধ তিনজনকে উদ্ধার করে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মামুনকে মৃত ঘোষণা করেন। সেখানে গুলিবিদ্ধ রকি হোসেন ও সুমনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পর তাঁদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা আনোয়ার হোসেনের ভাই পৌর কাউন্সিলর কামাল উদ্দিনকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয় দিয়ে বাড়ি থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার এ অভিযোগ করেন কামালের ভাই জামাল উদ্দিন। তবে এ বিষয়ে পুলিশ এখনো কিছু স্বীকার করেনি।

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অরবিন্দ সরকার বলেন, নিহত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তবে এ ঘটনায় আজ বিকেল পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা সবাই পলাতক আছেন। তাঁদের ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে।


সর্বশেষ সংবাদ