শাস্তি বাড়ছে হৃদয়ের, নিষিদ্ধ হতে পারেন ৪ ম্যাচও
- টিডিসি স্পোর্টস
- প্রকাশ: ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:১১ PM , আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৩৯ PM

হৃদরোগে আক্রান্ত তামিম ইকবালের অনুপস্থিতিতে মোহামেডানকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাওহীদ হৃদয়। শনিবার (১২ এপ্রিল) চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনীকে হারিয়ে শিরোপার দৌড়ে বেশ এগিয়ে গেছে মোহামেডান। তবে এরই মাঝে বড় দুঃসংবাদও পেয়েছে দলটি। ১ ম্যাচ থেকে বেড়ে ৪ ম্যাচে দাঁড়িয়েছে তাওহীদ হৃদয়ের শাস্তি।
শনিবার (১২ এপ্রিল) ম্যাচ চলাকালীন আম্পায়ারের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডার জেরে প্রাথমিকভাবে এক ম্যাচ নিষিদ্ধ হয়েছিলেন। পাশাপাশি ৪ ডিমেরিট পয়েন্ট পেয়েছিলেন তিনি। তবে ম্যাচ শেষে গণমাধ্যমের সামনে আম্পায়ারদের সিদ্ধান্ত নিয়ে তীব্র সমালোচনা ও অশোভন ভাষা ব্যবহারের অভিযোগে শাস্তির বেড়ে ৮ ডিমেরিট পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ফলে, নিয়ম অনুযায়ী ৪ ম্যাচ নিষিদ্ধ হতে পারেন তিনি। তবে এখানে আপিল করার সুযোগ আছে। সে হিসেবে, নিষেধাজ্ঞা কমেও আসতে পারে।
আবাহনী–মোহামেডান ম্যাচে আবাহনী ইনিংসের সপ্তম ওভার। পেসার ইবাদত হোসেনের বল আঘাত করে মোহাম্মদ মিঠুনের প্যাডে। সঙ্গে সঙ্গে সমস্বরে আবেদন করেন মোহামেডানের ক্রিকেটাররা। কিন্তু তাতে সাড়া দেননি আম্পায়ার তানভীর আহমেদ। সিদ্ধান্তটা মনঃপূত হয়নি মোহামেডানের। অধিনায়ক তাওহীদ হৃদয়সহ মোহামেডানের খেলোয়াড়েরা প্রতিবাদ করতে থাকেন।
মোহামেডানের ক্রিকেটারদের শান্ত করতে এগিয়ে যান স্ট্রাইকার্স প্রান্তে দাঁড়ানো আরেক আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত। তবে মোহামেডানের খেলোয়াড়েরা তর্কে জড়ান তার সঙ্গেও। একপর্যায়ে টিভি সম্প্রচারে শরফুদ্দৌলাকে বলতে শোনা যায়, ‘তর্ক করতে চাইলে মাঠের বাইরে করবা। এখানে নয়।’
এরপর শরফুদ্দৌলার দিকে ছুটে যান মোহামেডান অধিনায়ক হৃদয়। আঙুল উঁচিয়ে কথা বলতেও দেখা যায় তাকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে তখন এগিয়ে আসেন, মোহামেডানের অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম।
ওই ঘটনায় শাস্তি পেয়েছেন তাওহিদ হৃদয়। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ জানিয়ে লেভেল টু আচরণবিধি ভাঙায় এক ম্যাচ নিষিদ্ধ করা হয় মোহামেডান অধিনায়ককে। আর দলটির বোলার ইবাদতের লেভেল ওয়ান মাত্রার বিধি-ভঙের অভিযোগে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এদিকে সেখানেই থামেনি বিষয়টি। ম্যাচ শেষে সংবাদমাধ্যমে ফের আম্পায়ারদের সমালোচনা করেন হৃদয়। সৈকতের উদ্দেশে এই ক্রিকেটার বলেন, তিনি আন্তর্জাতিক আম্পায়ার, আমরাও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। হৃদয় এ-ও হুমকি দেন, ‘ঘটনা যদি অন্যদিকে যায়, আমি মুখ খুলব ইনশাআল্লাহ।’
এদিকে ম্যাচ-পরবর্তী হৃদয়ের এমন মন্তব্য লেভেল ২-এর ২ দশমিক ৮ ধারা অনুযায়ী, শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে দ্বিতীয় দফা রিপোর্ট দেওয়ার সুযোগ রয়েছে রেফারির। সেই নিয়ম মেনেই নিজের দ্বিতীয় প্রতিবেদনে হৃদয়ের ম্যাচ-পরবর্তী মন্তব্যকে ‘অশোভন, অশালীন এবং আম্পায়ারের প্রতি অবমাননাকর’ হিসেবে উল্লেখ করে আরও ৪ ডিমেরিট পয়েন্ট দেন ম্যাচ রেফারি নিয়ামুর রশিদ।
অন্যদিকে বিসিবির আচরণবিধি অনুযায়ী, ম্যাচ শেষে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে মাঠের কোনো ঘটনায় আচরণবিধি লঙ্ঘনের প্রমাণ মিললে সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে ডিমেরিট পয়েন্ট ও অর্থ জরিমানা করতে পারেন ম্যাচ রেফারি। এক্ষেত্রে সেই বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
এ বিষয়ে বিসিবির আম্পায়ার ও ম্যাচ রেফারি কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার মিঠু বলেন, ‘তাওহীদ হৃদয়ের এমন আচরণ অত্যন্ত হতাশাজনক। তিনি জাতীয় দলের খেলোয়াড়, তার কাছ থেকে শৃঙ্খলাপূর্ণ আচরণ প্রত্যাশিত। আইসিসি প্যানেল ও এলিট প্যানেলের আম্পায়ারদের সঙ্গে এমন অসংলগ্ন আচরণ আমরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারি না। ভবিষ্যতে যেন কেউ এমন আচরণ না করে, দৃষ্টান্ত তৈরি করতে এই শাস্তি দেওয়া হয়েছে। তবে সব আইন মেনেই দেওয়া হয়েছে।’