নববর্ষ ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন নেত্রকোনার মৃৎশিল্পীরা
- নেত্রকোনা প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৫২ AM , আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ১২:১২ PM

বাংলা নববর্ষ বা বৈশাখী মেলাকে কেন্দ্র করে শেষ সময়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার মৃৎশিল্পীরা। সকাল থেকে মধ্যরাত অবধি তারা মাটি দিয়ে করছেন হাঁড়ি-পাতিল, হাতি,গরু,ঘোড়া,পুতুল,পালকি,ব্যাংকসহ বিভিন্ন ধরনের চমৎকার খেলনা সামগ্রী। এসব তৈজসপত্র রং দিয়ে বাহারী সাজে সাজিয়ে বৈশাখী মেলায় তোলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।
সরেজমিনে উপজেলার বলাইশিমুল ইউনিয়নের লস্করপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ভীষণ ব্যস্ততায় সময় কাটাচ্ছেন ঐ সব পরিবারের মেয়ে, বউ ও বয়স্করা । পুকুড়িয়া হাওর, মাটিয়ারকুড়ি (বিল) থেকে কাদা মাটি সংগ্রহ করে তৈরি করা হয়েছে মাটির বিভিন্ন জিনিসপত্র যেমন পুতুল, ষাঁড়, গরু, ঘোড়া, থালা-বাসন ইত্যাদি । চলছে ভার্নিস ও রং করা । অনেক ক্ষেত্রে এ সব জিনিসপত্রে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে নানা চিত্রকর্ম।
কথা হয় মৃৎশিল্পী নওমিতা রাণীর (৬০) সাথে। তিনি বলেন, শত বছরের বেশি সময় ধরে আমরা এই কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি । তবে বিভিন্ন উৎসব উপলক্ষে আমাদের কাজের পরিমাণ বেড়ে যায় । ফলে পরিবারের ছোট বড় অন্যন্যা সদস্যরাও সহযোগিতা করে থাকে ।
তিনি আরও বলেন, বাপ দাদার ঐতিহ্য ধরে পড়ে আছি । অন্য কোন কাজও জানা নেই । ভীষণ কষ্ট ও পরিশ্রম করে জীবিকা নির্বাহ করতে হয় ।
স্কুল শিক্ষার্থী ও মৃৎশিল্পী অর্পিকা রানী পাল ও জয় চন্দ্র পাল জানান, এই শিল্পটা আমাদের পূর্ব পুরুষদের ঐতিহ্য। আমরা পড়া শুনার পাশাপাশি অতিরিক্ত সময়ে মাটির তৈরি বিভিন্ন জিনিসপত্র তৈরি করে বাবা-মা ও পরিবারের লোকজনদের সহযোগিতা করছি।এসব জিনিসপত্র বিক্রি করে কোন রকম আমাদের লেখাপড়া ও সংসার চলে।
এ বিষয়ে নওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য হারিফ উদ্দিন হানিফ ও নওপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. সালাহউদ্দিন সালাম বলেন, এই কাজ আমাদের আবহমান বাংলার শিল্পী সত্তা পরিচয় বহন করে । আমাদের অতীত ও বর্তমান কতটা পরিশ্রম ও গর্বের তা নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না। এ ক্ষেত্রে তাদের জন্যে সরকারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন।