জমে উঠেছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা

জমে উঠেছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা
জমে উঠেছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা  © টিডিসি ফটো

আপন সৌন্দর্যে আবারও জমে উঠেছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা। পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব নিয়ে দলবেঁধে মানুষ আসছে মেলায়। তরুণদের আগমন বেশি চোখে পড়লেও সব বয়সী পাঠক-দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে বইমেলা প্রাঙ্গণ। বড় বড় কবি সাহিত্যিকরাও সমসাময়িক কবি লেখকদের বই দেখছেন।

বড়দের পাশাপাশি নিজের পছন্দের বইটি নিতে এসেছে শিশু কিশোররাও। দিনের শুরুর দিকে উপস্থিতি কিছুটা কম থাকলেও সন্ধ্যার পর তা বেড়ে যেতে দেখা যায়।

মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, তরুণ-তরুণীদের অনেকে সেলফি তোলায় ব্যস্ত। কারো হাতে বইয়ের ব্যাগ কারো হাত ফাঁকা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুমাইয়া বলেন, প্রতিদিনই মেলায় আসি। তিনটা বই কিনেছি আরো কিছু বই কিনবো। বন্ধুরা আসছে, তাদেরকে সময় দিচ্ছি।

ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী লিজা বলেন, হুমায়ূন আহমেদ স্যারের কয়েকটা বই কিনেছি। নিজে পড়া শেষে বইগুলো একজনকে উপহার দেব।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী উত্তম দাস বলেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির পর এমন একটি জায়গায় এসে খুবই ভালো লাগছে। এখনো কোনো বই কেনা হয়নি। ঘুরে ঘুরে পছন্দ হলে কয়েকটা উপন্যাসের বই কিনব।

অন্যপ্রকাশ প্রকাশনীর এক বিক্রয়কর্মী দীপ হাওলাদার বলেন, ‘বিকেল চারটা বাজার সাথে সাথে মেলায় ক্রেতাদের ভিড় বাড়তে থাকে। সন্ধ্যার পর বেশি বিক্রি হয়। বরাবরের মতোই হুমায়ূন আহমেদ স্যারের বই বেশি বিক্রি হচ্ছে। তরুণরা স্যারের বই বেশি নিচ্ছেন।

আরও পড়ুন: বইমেলার পঞ্চম দিনে ১৪৩ বই, দেখে নিন পছন্দের বইগুলো

প্রকাশকরা জানান, প্রথম দিকে দর্শনার্থী কম থাকলেও দিন দিন বাড়ছে। শেষের দিকে উপস্থিতি আরো বাড়বে। সামনে স্কুল-কলেজ খুললে বিক্রিও বাড়বে। থ্রিলার উপন্যাস, ইসলামিক বই ও অনুবাদের চাহিদা বেশি।

করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে এবারের বইমেলা ১৫ দিন পর শুরু হলেও বই প্রেমীদের সরব উপস্তিতিতে ফুটে উঠেছে মেলার প্রকৃত সৌন্দর্য। করোনার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এবার প্রতিদিন মেলা চলছে বাড়তি এক ঘণ্টা করে। অন্যবারের মতো দুপুর ৩টায় না হয়ে এবার মেলা শুরু হচ্ছে দুপুর ২টায়।

মেলায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারেও কড়াকড়ি নির্দেশনা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। মাস্ক ছাড়া কাউকে প্রবেশদ্বার দিয়ে মেলায় প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। পাশাপাশি হ্যান্ড স্যানিটাইজা করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এছাড়াও মেলার ভেতরে স্বাস্থ্যবিধি না মানায় দর্শনার্থী ও প্রকাশনীর বিক্রয় প্রতিনিধিদের অপরাধের মাত্রা বুঝে অর্থদণ্ড দিচ্ছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। তারপরেও স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে অনেকটা অবহেলা দেখা গেছে মেলা প্রাঙ্গণে।

বইমেলা ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলছে। রাত ৮টার পর নতুন করে কেউ মেলায় প্রবেশ করতে পারছেন না। ছুটির দিন বইমেলা সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলছে।

এবারে বই মেলায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় সাড়ে ৭ লাখ বর্গফুট জায়গায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মেলায় মোট ৩৫টি প্যাভিলিয়নসহ একাডেমি প্রাঙ্গণে ১০২টি প্রতিষ্ঠানের ১৪২টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৪৩২টি প্রতিষ্ঠানকে ৬৩৪টি ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ