মেলায় আসছে চবির ৬ শিক্ষার্থীর বই
- রোকনুজ্জামান, চবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৯ জানুয়ারি ২০২১, ০৮:৩৮ PM , আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২১, ০৮:৩৮ PM
প্রতিবারের মতো এবারের বইমেলায়তেও থাকছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শিক্ষার্থীদের লিখিত মৌলিক কিছু বই। গল্প, কবিতা, বিজ্ঞান কল্পকাহিনীর এসব বই পাঠক হৃদয়কে দোলা দেবে, সেটাই প্রত্যাশা লেখকদের। চবি শিক্ষার্থীদের লিখিত এমনই কিছু বইয়ের পরিচিতি নিচে তুলে ধরা হলো-
বইয়ের নাম: রোদেপোড়া রেলস্টেশন
ধরন: কাব্যগ্রন্থ
লেখক: রহমাতুল্লাহ রাফি
প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ‘রোদেপোড়া রেলস্টেশন’ নিয়ে আলাপকালে লেখক বলেন, এটি আমার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ। বইমেলার বই হলেও মেলার পূর্বেই এটা পাঠকের হাতে পৌঁছে গেছে। পাঠ পরবর্তী তাদের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা লেখালেখির ময়দানে আমার দায়িত্ববোধকে আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।
প্রেম-বিরহ, বস্তুনিষ্ঠ দর্শন, ডার্ক কমেডি, স্যাটেয়ার প্রভৃতি বিষয়ের উপর কাব্যগ্রন্থটি গড়ে উঠেছে। একটি স্বচ্ছ দর্পণের মতো যার পঙ্ক্তিতে-পঙ্ক্তিতে ফুটে উঠেছে রহস্যঘেরা জীবনের নাটকীয় গল্প।
চবির সম্মান দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রহমাতুল্লাহ রাফির দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘রোদেপোড়া রেলস্টেশন’। বইটি প্রকাশ করেছে ‘৫২ (বায়ান্ন) প্রকাশনী। প্রচ্ছদ করেছেন পরাগ ওয়াহিদ।
বইয়ের নাম: গ্রাফিতিরা জেগে রয়
ধরন: বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
লেখক: শাহরিয়ার জাওয়াদ
কল্পকাহিনীটি সাজানো হয়েছে প্যারালাল ইউনিভার্স বা সমান্তরাল মহাবিশ্ব ধারণার ওপর ভিত্তি করে।
দুটি ভিন্ন জগতে দুটি ভিন্ন পরিবেশ, ভিন্ন পরিস্থিতি। শুরুটা হয় অন্যভুবনে, কঙ্গোর সাভানা থেকে। তারপর গল্পের নায়ক ছুটে বেড়ায় কঙ্গোর রেইন ফরেস্টে। ধাওয়া করে বেড়ায় একদল ভয়ঙ্কর অপরাধীর। দেখে বনভূমির আদিবাসী- বান্টু আর পিগমিদের জীবনযাত্রা।
সর্বপরি, এ বইয়ে পাঠক খুঁজে পাবে একজন সহজ সরল বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণকে। ছকে বাঁধা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর গণ্ডির বাইরে গিয়ে এটা একজন রায়হানে জীবনের গল্প।
লেখকের প্রথম বই ‘গ্রাফিতিরা জেগে রয়’ প্রকাশ করেছে জ্ঞানকোষ প্রকাশনী, প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রুব এষ। লেখক শাহরিয়ার জাওয়াদ বর্তমানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষে অধ্যায়নরত আছেন।
বইয়ের নাম: ভূত স্যার
ধরন: শিশু-কিশোর গল্প
লেখক: মাহবুব এ রহমান
অক্ষরবৃত্ত পাণ্ডুলিপি প্রতিযোগিতায় শিশুসাহিত্য বিভাগের নির্বাচিত পাণ্ডুলিপি হিসেবে বইটি প্রকাশ করেছে অক্ষরবৃত্ত প্রকাশন। সম্পূর্ণ চাররঙের অলংকরণ সমৃদ্ধ বইটির প্রচ্ছদ করেছেন নিয়াজ চৌধুরী তুলি। অলংকরণ করেছেন জয়ন্ত মালো।
‘ভূত স্যার’ লেখক বর্তমানে সম্মান তৃতীয় বর্ষে অধ্যায়নরত আছেন। এ বইটিতে গল্পের মাধ্যমে শিশু-কিশোরদের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়েছে বিভিন্ন সচেতনতামূলক বার্তা।
বইয়ের নাম: নিঃশব্দের মিছিল
ধরন: কাব্যগ্রন্থ
লেখক: নাহিদা ইসলাম
হৃদয় দিয়ে কেনা প্রেমের অপর পৃষ্ঠে ছলনা। জমজমাট প্রতারণার হাটে শূন্য হয়ে ফিরে শুদ্ধ প্রেমিক। জীবনানন্দের পাখিরা ঘরে ফেরে না। সবখানে বিকৃত রসনার রসুইঘর। এমন শূণ্যতা, অপ্রাপ্তি, অপ্রেম, প্রকৃতিনাশ, অভিমান, আঁধার আর দুঃস্বপ্ন তাড়াতে প্রত্যয়গাঁধা স্বপ্নবাহী ভোরের আলোর মতো সুন্দরের প্রত্যাশায়- ‘নিঃশব্দের মিছিল’।
সামাজিক চোখরাঙ্গানি, বিকৃত পুঁজির রঙবদল, সাধুবেশে খল, ডাস্টবিন যেন শিশুর দোলনা, সড়কে প্রাণহানি যেন নিয়তি, ফুটপাত যেন আঁতুড়ঘর, এদেশে আগস্ট আসে শোকের বারতা নিয়ে, ঝিমোয় আফিমখোর সমাজপতি। সবাই বিভোর নিরপেক্ষতার ভানে। ঠিক এখানে নাহিদা ইসলাম নিরপেক্ষ না থেকে ন্যায়ের পক্ষ নিয়েছেন।
রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাহিদা ইসলামের কাব্যগ্রন্থ ‘নিঃশব্দের মিছিল’ও থাকছে এবারের বইমেলায়। বইটি প্রকাশিত হয়েছে পরাপাঠ প্রকাশনী, ঢাকা থেকে।
বইয়ের নাম: হলদে বিহরণ
ধরন: কাব্যগ্রন্থ
লেখক: আবদুল্লাহ আল মামুন
চবির আরবি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মামুনের প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'হলদে বিহরণ'। বইমেলাকে সামনে রেখে কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশ করেছে চট্টগ্রামের গলুই প্রকাশনী। ৫৪টি মিশ্র কবিতার সমন্বয়ে রচিত কাব্যগ্রন্থের অধিকাংশ কবিতাই বঞ্চিত মানুষের হাহাকার, সমাজের ছলচাতুরী, অমানবিক বৈষম্য ও চলমান রীতি-নীতির যাতাকলে পিষ্ট হওয়ার স্থিরচিত্র এবং তা হতে উত্তরণের সম্ভাব্য পথ।
তাছাড়াও প্রেম, দেশপ্রেম, প্রকৃতি নিগৃহীতের আর্তনাদ ও ভবিতব্যের প্রকাশিত পৃথিবীর রূপকল্প নিয়ে ব্যর্থ ছন্দের গাঁথুনিতে মুক্তির চির অমলিন সজীব শব্দ ‘ভালবাসা’ নামক ঘর নির্মাণের চেষ্টা করেছেন কবি।
বইয়ের নাম: বসে থাকি নিজের মুখোমুখি
ধরন: কাব্যগ্রন্থ
লেখক: সাইদুল ইসলাম
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাইদুল ইসলামের এই কবিতার বইয়ে রয়েছে ৪৯টি কবিতা। গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে নন্দন বইঘর, চট্টগ্রাম।
‘বসে থাকি নিজের মুখোমুখি’ বইটি ৫৬ পৃষ্ঠার একটি কবিতার বই। লেখক সাইদুল ইসলামের ব্যক্তিক ভাবাবেগের প্রাধান্যনির্ভর একটি কবিতার বই এটি। রোমান্টিক ভাবনা; সমাজ, দেশ ও রাষ্ট্রের পরিমিত বাস্তবানুগ রূপভেদ; পরাবাস্তব ভাবনা ও ব্যক্তিক দ্বান্দ্বিকতার মিশেলে বিষয়গত বৈচিত্র্যে রয়েছে বইটিতে।