৪৭ বছরের লাইব্রেরি যে কারণে বিক্রি করছেন স্কুল শিক্ষক গোকুল
- শিহাব উদ্দীন
- প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০১৯, ০৭:৩৩ PM , আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৯, ০৭:৩৪ PM
৪৭ বছর ধরে তিলে তিলে গড়া নিজের স্বপ্ন এক নিমিষেই শেষ হয়ে যাওয়ার বেদনা বড়ই কষ্টের। সেই বেদনারই সম্মুখীন হতে চলেছেন রাজধানীর গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুল নিউমার্কেট শাখার প্রাক্তন সহকারী প্রধান শিক্ষক গোকুল চন্দ্র দাস।
গত ১১ অক্টোবর ‘ব্যক্তিগত বাংলা লাইব্রেরি বিক্রি হবে’ শিরোনামে একটি বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয় একটি দৈনিক পত্রিকায়। সেখানে তিনি ‘বিনিময় মূল্য’ ধরেছেন লাইব্রেরির জন্য ১৫ লাখ টাকা এবং পত্রিকার বিশেষ সংখ্যার জন্য ১০ লাখ টাকা।
১৯৭০ সাল থেকে বাংলা বই সংগ্রহ করে চলেছেন বর্তমানে অবসারে যাওয়া স্কুলশিক্ষক গোকুল চন্দ্র দাস। বাংলা সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা শেষ করে যোগ দিয়েছিলেন বাংলার শিক্ষক হিসেবে।
৪৭ বছর ধরে লালন করা বাংলা সাহিত্যের দুষ্প্রাপ্য গবেষণামূলক এবং সমালোচনামূলক দুই হাজারেরও বেশি বই বিক্রি করতে চান তিনি। গোকুল চন্দ্র দাসের এই লাইব্রেরীতে ৪৭ বছরের সংগ্রহীত বাংলা ভাষা ও সাহিত্য, বাংলাদেশের সাহিত্য পাতা, ১৪টি স্টিলের আলমারি, থিসিস, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলামের বই এবং ৪৭ বছরের সব বাংলা দৈনিক পত্রিকার বিশেষ সংখ্যার সাহিত্য পাতা রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে গোকুল চন্দ্র দাসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, লাইব্রেরীটি নিজ হাতে করেছি কিন্তু আজ লাইব্রেরির ব্যয় আমার পক্ষে বহন করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই লাইব্রেরীটি বিক্রি করতে চাই। এ লাইব্রেরী দেখভাল করতে প্রতিমাসে ১৫ হাজার টাকার বেশি খরচ হয়। যা আমার পক্ষে দেয়া কোনভাবেই সম্ভব না। এ কারণেই আমি আমার স্বপ্নকে বিক্রি করছি।
তিনি আরো বলেন প্রাথমিকভাবে আমি লাইব্রেরীটির মূল্য ২৫ লাখ টাকা নির্ধারণ করেছি। তবে আমার লাইব্রেরীটি বিক্রি করার ইচ্ছে নেই লাইব্রেরীটি দেখভাল করতে প্রতিমাসে যে টাকা ব্যয় হয় সেই টাকার যোগান যদি কেউ দিতে পারে তাহলে আমি লাইব্রেরীটি বিক্রি করব না
গোকুল চন্দ্র দাস বলেন আমি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। তিনি অথবা সরকারের পক্ষ থেকে যদি আমাকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করা হয় তাহলেও আমি লাইব্রেরীটি বিক্রি করব না। কিন্তু কোথাও থেকে যদি আমি সহযোগিতা না পাই তাহলে আমার স্বপ্নকে বিক্রি করতেই হবে।