শেকৃবিতে অবহেলায় বিকল কোটি টাকার যন্ত্রপাতি
- শেকৃবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৮:০২ PM , আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৮:০২ PM
২০১৪ সালে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) হায়ার এডুকেশন কোয়ালিটি এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্ট (হেকেপ) সহযোগিতায় শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি) ডিজিটালাইজ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। সে সুবাদে হাতে নেয়া হয় প্রায় দেড় কোটি টাকার প্রকল্প। কেনা হয় ডিজিটাল সব যন্ত্রপাতি। তবে প্রকল্প শেষে এর কোন সুবিধাই ভোগ করতে পারেনি এখানকার শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘদিন অবহেলায় পড়ে থাকায় যন্ত্রপাতি গুলো এখন বিকল প্রায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুবছর মেয়াদি ‘হেকেপ আইসিটি উইনডো-১’ প্রকল্পটি ২০১৪ সালে ১ জুন শুরু হয়। প্রকল্পটির প্রধান দায়িত্ব পালন করেন উদ্ভিদ কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সালাউদ্দিন এম চৌধুরী। এ প্রকল্পের অধীনে কেনা হয় ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার ডিজিটাল যন্ত্রপাতি।
এরমধ্যে ছিল ৪০টি সিসি ক্যামেরা, একটি অনলাইন ইউপিএস, একটি ডাটাবেস সার্ভার, একটি ওয়েব সার্ভার, অ্যাপ্লিকেশন সার্ভার, রেক, চারটি ইনফরমেশন কইসক, দুটি ডিভিআর, কানেক্টর, হার্ডডিক্স, বারটি এটেনডেন্স ডিভাইস, তিনটি ডোর লক, একটি কার্ড প্রিন্টার, ছয় হাজার প্রক্সিমিটি কার্ড ও চারটি সিগনেচার প্যাড।
দুবছর মেয়াদি প্রকল্পটি শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তালাবন্ধ হয়ে পড়ে মূল্যবান এসব যন্ত্রপাতি। দীর্ঘদিন অব্যবহৃত ভাবে পড়ে থাকায় এসব যন্ত্রপাতি এখন বিকল প্রায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে বসানো অধিকাংশ সিসি ক্যামেরাই বিকল। প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় ক্যামেরা কন্ট্রোল ও মনিটরিং রুমে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে বাকি যন্ত্রপাতিও। তত্ত্বাবধায়নের কেউ নেই। সব সময় তালাবন্ধ থাকা রুমটি বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের স্টোর রুম হিসেবে ব্যবহার করছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, উন্নয়ন প্রকল্প শুধু আসতেই শুনি। সুফল ভোগ করতে পারি না। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে ও হলগুলোতে সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা নেই। প্রায়ই চুরির ঘটনা ঘটে। ফলে নিরাপত্তাহীনতায় থাকতে হয়।
এ প্রকল্পের সাব-ম্যানেজার দায়িত্ব পালন করা ড. মো. সালাউদ্দিন এম চৌধুরী বলেন, প্রকল্প শেষে সকল যন্ত্রপাতি তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহদাৎ উল্লাহ্ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন কমিউনিকেশন সেন্টারের কাছে হস্তান্তর করি। স্থান অনুযায়ী যন্ত্রগুলো বসানোও হয়েছিল। মনিটরিংয়ের জন্য প্রায় ৬০জন শিক্ষকের প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাও করেছিলাম। এর পরেও কেন এ অবস্থা সেটা আমার অজানা।
তবে ইনফরমেশন কমিউনিকেশন সেন্টার থেকে জানানো হয় তারা এ ব্যপারে অবগত নন। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিসি পরিচালক অধ্যাপক ড. মির্জা হাসানুজ্জামান বলেন, ‘আমি ২০১৮ সালের জুলাইয়ে আইসিসি পরিচালকের দায়িত্ব পেয়েছি। ওই প্রকল্পের কোন যন্ত্রপাতির দেখভালের দায়িত্ব আমাকে দেওয়া হয়নি। আমি ব্যপারে অবগতও নয়। এর আগে যারা দায়িত্বে ছিলেন তারা হয়তো বলতে পারবেন।’
উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদ বলেন, ‘ওই প্রকল্প আগের উপাচার্যের আমলের ছিল। আমি এর দায়িত্ব পাইনি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ডেভেলপমেন্টের জন্য আমরা ২ কোটি ২৫ লাখ টাকার একটি নতুন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি। সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছি যেন দ্রুত শিক্ষার্থীরা সুবিধা গুলো ভোগ করতে পারে।’